Index

Sirach - Chapter 6

1 কারণ দুর্নাম লজ্জা ও ঘৃণা আকর্ষণ করে ; ঠিক তাই ঘটে দু’কথার মানুষ সেই পাপীর ক্ষেত্রে।
2 নিজের দুর্মতির হাতে নিজেকে তুলে দিয়ো না, পাছে তা রোষভরা বৃষের মত তোমাকে দীর্ণ-বিদীর্ণ করে ;
3 তুমি তোমার নিজের পল্লব গ্রাস করবে, নিজের যত ফল বিনষ্ট করবে, শেষে নিজেকে শুষ্ক কাঠের অবস্থায় ফেলে রাখবে।
4 উগ্রমেজাজের অধীন যে মানুষ, সেই মেজাজই তার বিনাশ ঘটায়, তাকে তার শত্রুদের উপহাসের বস্তু করে।
5 মধুর কণ্ঠ বন্ধুদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে, শালীন কথন শান্তি কামনা আকর্ষণ করে।
6 যারা তোমার শান্তি কামনা করে, তারা অনেকে হোক, তবু সহস্রজনের মধ্য থেকে একজনমাত্রই হোক তোমার পরামর্শদাতা।
7 যদি কাউকে তোমার বন্ধু করতে চাও, তাকে যাচাই কর ; সঙ্গে সঙ্গে তার উপর আস্থা রেখো না।
8 কেননা এমন কেউ আছে, যে নিজ সুবিধায়ই বন্ধু, কিন্তু দুর্দশার দিনে তোমার পাশে দাঁড়াবে না।
9 এমন বন্ধুও আছে, যে শত্রুতে রূপান্তরিত হয় ও তোমাদের মধ্যে যে ঝগড়া তার কথা প্রকাশ করবে—তোমার অসম্মানে!
10 এমন বন্ধু আছে, যে খাওয়া-দাওয়াতেই সঙ্গী, কিন্তু দুর্দশার দিনে তোমার পাশে দাঁড়াবে না।
11 তোমার সমৃদ্ধির সময়ে সে হবে তোমার যেন দ্বিতীয় তুমি, তোমার ঘরের সকলের সঙ্গেও সে অবাধে কথা বলবে :
12 কিন্তু তোমার অবমাননা হলে সে তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, তোমার সামনে থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখবে।
13 তোমার শত্রুদের কাছ থেকে দূরে থাক, তোমার বন্ধুদের বিষয়ে সাবধান থাক।
14 বিশ্বস্ত বন্ধু, সে তো প্রবল আশ্রয়, তেমন বন্ধুকে যে পায়, সে তো মহাধন পায়।
15 বিশ্বস্ত বন্ধু, সে তো অমূল্য সম্পদ, তার যোগ্যতা পরিমাপের অতীত।
16 বিশ্বস্ত বন্ধু জীবনদায়ী অমৃতের মত, যারা প্রভুকে ভয় করে, তারাই তেমন বন্ধুকে পাবে।
17 প্রভুকে যে ভয় করে, সে বন্ধুত্বকে সূক্ষ্মভাবে পরীক্ষা করে, কারণ সে নিজে যেমন, তার সঙ্গীও তেমন হবে।
18 সন্তান, তরুণ বয়স থেকে শাসনবাণী ধ্যানে রত থাক, তবে বার্ধক্য পর্যন্ত প্রজ্ঞা লাভ করবে।
19 লাঙল দেয় ও বীজ বোনে, তেমন মানুষেরই মত প্রজ্ঞার কাছে এগিয়ে যাও, গিয়ে তার উৎকৃষ্ট ফলের প্রতীক্ষায় থাক; চাষের জন্য তোমার একটু পরিশ্রম হবে বটে, তবু শীঘ্রই তুমি ভোগ করবে তার উৎপন্ন ফল।
20 প্রজ্ঞা তো সত্যিই বিশৃঙ্খলের পক্ষে কঠোর, যার সুমতি নেই, সে নিষ্ঠাবান হতে পারবে না ;
21 তার পক্ষে বরং তা হবে মূল্যহীন একটা পাথরের মত, তা ফেলে দিতে সে তত দেরি করবে না।
22 কেননা প্রজ্ঞা ঠিক নিজের নামেরই মত প্রচ্ছন্ন, অনেকের কাছে সে স্পষ্ট নয়।
23 সন্তান, শোন ; আমার অভিমত গ্রহণ কর ; আমার সুমন্ত্রণা অস্বীকার করো না।
24 তোমার পা তার বেড়িতে ঢোকাও, ঘাড় তার শেকলে সঁপে দাও;
25 কাঁধ নত করে তা বহন করে চল, তার বাঁধন অসহ্য বলে মনে করো না ;
26 সমস্ত প্রাণ দিয়ে তার কাছে এগিয়ে এসো, তোমার যথাসাধ্যই তার যত পথ ধরে চল;
27 তার পদচিহ্ন অনুসরণ কর, তার অন্বেষণ কর; তোমাকে দেখা দেবে ; একবার তার নাগাল পেয়ে তাকে আর ছেড়ো না।
28 কারণ পরিশেষে তার মধ্যে বিশ্রাম পাবে, আর সে তোমার জন্য আনন্দে রূপান্তরিত হবে।
29 তখন তার বেড়ি হবে তোমার প্রবল আশ্রয়, তার যত শেকল হবে গৌরব-বসন।
30 তার জোয়াল, তা তো সোনার ভূষণ, তার যত শেকল, তা তো বেগুনি ফিতা।
31 তুমি তা গৌরব-বসন রূপেই পরিধান করবে, তা আনন্দ-মুকুট রূপেই মাথায় পরে নেবে।
32 সন্তান, ইচ্ছা করলে তুমি সুশিক্ষিত হতে পারবে; সম্পূর্ণরূপে মনোনিবেশ করলে নিপুণ হতে পারবে।
33 শ্রবণে প্রীত হলে উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠবে, কান দিলে হবে প্রজ্ঞাবান।
34 প্রবীণদের সভায় যোগ দাও ; প্রজ্ঞাবান কেউ আছে? তারই সঙ্গ নাও।
35 সমস্ত ঐশবাণী সদিচ্ছার সঙ্গে শোন, সুচিন্তিত প্রবচন যেন তোমাকে না এড়ায়।
36 সুবিবেচক কাউকে দেখলে শীঘ্রই তার কাছে যাও; তোমার পায়ে ক্ষয় হোক তার দরজার সোপান।
37 প্রভুর সমস্ত নির্দেশবাণী ধ্যান করে থাক, তাঁর আজ্ঞাগুলি তোমার নিত্য চিন্তার বস্তু হোক : তিনি তোমার হৃদয় সুস্থির করবেন, তখন তোমার প্রজ্ঞার আকাঙ্ক্ষা তৃপ্তি পাবে।