1 হে প্রভু, হে রাজন, আমি তোমার স্তুতিবাদ করব, হে ত্রাণেশ্বর আমার, আমি তোমার প্রশংসাবাদ করব, তোমার নামের স্তুতিবাদ করব ;
2 কারণ তুমিই হলে আমার রক্ষাকর্তা, আমার সহায়, তুমিই বিনাশ থেকে, নিন্দাভরা জিহ্বার ফাঁদ থেকে মিথ্যাবাদী ওষ্ঠ থেকে আমার দেহের মুক্তি সাধন করলে। যারা চারদিকে আমাকে ঘিরে ফেলছিল, তাদের সামনে তুমি আমার সহায় হলে, আমার মুক্তি সাধন করলে।
3 তোমার মহাদয়া ও তোমার মহানামের খাতিরে তাদের কবল থেকে, যারা আমাকে গ্রাস করতে উদ্যত ছিল, তাদের হাত থেকে, যারা আমার প্রাণনাশে সচেষ্ট ছিল, সেই বহু সঙ্কট থেকে, যাতে আমি ভুগছিলাম,
4 সেই শ্বাসরোধক অগ্নিশিখা থেকে, যা চারদিক থেকে আমাকে ঘিরে ফেলছিল, সেই আগুনের মধ্য থেকে, যা আমি জ্বালাইনি,
5 গভীরতম পাতাল-গর্ভ থেকে, অশুচি জিহ্বা ও মিথ্যা অভিযোগ থেকে।
6 হ্যাঁ, রাজার কানে অন্যায়কারী জিহ্বার একটা অভিযোগ এসেছিল; আমার প্রাণ তখন ছিল মৃত্যুর সন্নিকট, আমার জীবন ছিল পাতালঘারে উপস্থিত।
7 আমি সবদিক দিয়ে আক্রান্ত ছিলাম, আমার সহায়তা করতে কেউই ছিল না ; সাহায্যের জন্য মানুষের দিকে তাকালাম—কেউই ছিল না!
8 প্রভু, আমি তখন তোমার বহুবিধ দয়ার কথা স্মরণ করলাম, স্মরণ করলাম তোমার সেই সমস্ত কর্মকীর্তি, যা অনাদিকালীন, কারণ যারা ধৈর্যশীল হয়ে তোমার উপর প্রত্যাশী, তাদের তুমি উদ্ধার কর ও শত্রুদের হাত থেকে তাদের ত্রাণ কর।
9 তখন এই পৃথিবীর বুক থেকে আমার মিনতি ঊর্ধ্বে প্রেরণ করলাম ; মৃত্যু থেকে নিস্তার যাচনা করলাম।
10 আমি প্রভুকে ডাকলাম, আমার প্রভুর পিতাকে ডাকলাম, সঙ্কটকালে, গর্বিতদের সেই দিনগুলিতে যখন আমরা অসহায়, তিনি যেন আমাকে ছেড়ে না যান। আমি অবিরত তোমার নামের প্রশংসা করব, কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তোমার বন্দনা করব।
11 আমার মিনতি পূর্ণ হল ; কেননা তুমি সর্বনাশ থেকে আমার পরিত্রাণ সাধন করলে, সেই অশুভ কালের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করলে।
12 তাই আমি তোমাকে ধন্যবাদ জানাব, তোমার প্রশংসাগান করব, এবং প্রভুর নাম ধন্য বলব।
13 আমি তখনও যুবা ছিলাম, তখনও কোন যাত্রায় পা বাড়াইনি, সেসময়েও প্রার্থনাকালে তৎপর হয়ে প্রজ্ঞার অন্বেষণ করতাম।
14 পবিত্রধামের বাইরে দাঁড়িয়ে তা পাবার জন্য প্রার্থনা করতাম, “শেষদিন পর্যন্তই তার অন্বেষণ করে চলব।'
15 তার ফুল ফোটার কাল থেকে তার আঙুরগুচ্ছ পাকবার কাল পর্যন্ত আমার হৃদয় প্রজ্ঞায় আনন্দিতই ছিল। আমার চরণ ন্যায়পথ ধরে চলল ; তরুণ বয়স থেকে তার অনুগামী হলাম।
16 কান একটু পাতলাম, আর তাকে গ্রহণ করলাম, যে শিক্ষাবাণী পেয়েছি, আহা, তা কেমন গম্ভীর!
17 তার সহায়তায় আমার অগ্রগতি হল ; যিনি আমাকে প্রজ্ঞা আরোপ করলেন, তাঁকে আমি গৌরব আরোপ করব।
18 বস্তুত আমি স্থির করেছি, প্রজ্ঞার সাধনা করে চলব : ন্যায় সাধনে তৎপর হলাম, লজ্জিত হতে হবে না।
19 তাকে জয় করার জন্য আমার প্রাণ সংগ্রাম করল; বিধান পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পালন করলাম। উর্ধ্বে হাত বাড়ালাম, তার বিষয়ে আমার যে অজ্ঞতা, তার জন্য বিলাপ করলাম।
20 তাকেই লক্ষ করে আমার প্রাণ চালিত করলাম, তখন শুদ্ধতায়ই তার সন্ধান পেলাম। প্রথম থেকে আমার হৃদয়কে তার প্রতি নিবন্ধ রাখলাম, তাই আমি কখনও পরিতার হব না।
21 তার অন্বেষায় আমার অন্তর অস্থির ছিল, এজন্য আমি এই শুভসম্পদের অধিকারী হলাম।
22 পুরস্কারস্বরূপ প্রভূ আমাকে এমন জিহ্বা দিলেন, যা দ্বারা আমি তাঁর প্রশংসাবাদ করব।
23 কাছে এসো তোমরা, শিক্ষাবাণীর অভাব যাদের, আমার শিক্ষালয়ে স্থান নাও।
24 এই সমস্ত কিছুর অভাবে কেন চিৎকার কর, যখন তোমাদের প্রাণ সেগুলোর জন্য এত তৃষাতুর ?
25 আমি মুখ খুলে একথা বললাম : ‘বিনা অর্থেই তাকে কিনে নাও।
26 তার জোয়ালে ঘাড় পেতে দাও, তোমাদের প্রাণ শিক্ষাবাণী গ্রহণ করুক : তা তো কাছেই রয়েছে, তাকে পাওয়া যেতে পারে।'
27 নিজেরাই দেখ, কেমন অল্পই শ্রম করেছি, অথচ কেমন মহাস্বস্তি পেয়েছি।
28 বহু রুপো লাগিয়ে শিক্ষাবাণী কিনে নাও, তা দ্বারা বহু সোনা লাভ করবে।
29 তোমাদের প্রাণ প্রভুর দয়ায় আনন্দিত হোক, তাঁর প্রশংসা করায় তোমরা যেন কখনও লজ্জাবোধ না কর।
30 নির্ধারিত সময়ের আগেই তোমাদের কাজ সম্পন্ন কর, আর নিরূপিত সময়ে তিনি তোমাদের উপযুক্ত পুরস্কার দান করবেন।
ইতি : সিরার ছেলে যিশুর প্রজ্ঞা।