1 স্বচ্ছ গগনতলই ঊর্ধ্বলোকের গর্ব, তেমনি আকাশমণ্ডলের সৌন্দর্য— গৌরবময় দৃশ্য!
2 বের হতে হতে সূর্য তার উদয়লগ্নে ঘোষণা করে : 'আহা, পরাৎপরের কর্ম কেমন আশ্চর্যময় !
3 মধ্যাহ্নে সে পৃথিবীকে শুষ্ক করে, তার উত্তাপের সামনে কে দাঁড়াতে পারে?
4 তাপ পাবার জন্য হাপরের আগুনে ফুঁ দেওয়া দরকার, সূর্য এর তিনগুণ বেশিই পাহাড়পর্বত পুড়িয়ে ফেলে; অগ্নিশিখা উদ্গিরণ ক'রে সে তার যত রশ্মি ঝলকিয়ে, ধাঁধিয়ে দেয় মানুষের চোখ।
5 মহান সেই প্রভু, যিনি তা সৃষ্টি করেছেন, ও যাঁর বাণী তাকে তার দৌড়ে ত্বরান্বিত করে।
6 আর সেই চন্দ্র! যা কলা-পালনে নিত্যই নিষ্ঠাবান, যেন ঋতু চিহ্নিত করে; তা কেমন সনাতন চিহ্ন !
7 চন্দ্রের উপরেই পর্বোৎসবের নির্দেশ নির্ভর করে; তা এমন জ্যোতিষ্ক, যা মিলিয়ে যাওয়া পর্যন্ত ক্ষীণকায় হয়।
8 তা থেকেই মাস নিজের নাম ধারণ করে, আশ্চর্যভাবে তা কলা-ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকে। আকাশপরদায় দীপ্তিময় হয়ে তা ঊর্ধ্বলোকের বাহিনীর জন্য নিশান স্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়।
9 তারানক্ষত্রের গৌরবই আকাশমণ্ডলের সৌন্দর্য। সেগুলি ঊর্ধ্বলোকের প্রভুর দীপ্তিময় ভূষণ।
10 তারা সেই পবিত্রজনের আদেশমতই দণ্ডায়মান হয়, যে যার প্রহরী-স্থানে ক্ষান্ত হয় না।
11 রঙধনু লক্ষ ক'রে তাঁর নির্মাতাকে ধন্য বল সে তো নিজের দীপ্তিতে পরমসুন্দর!
12 আকাশমণ্ডলকে সে গৌরবের ধনুকে ঘেরে, পরাৎপরের নিজের হাত তা পেতে দিল।
13 তিনি এক আদেশে তুষার প্রেরণ করেন, নিজের বিচারের বিদ্যুৎ ঝলকিয়ে দেন।
14 একই প্রকারে তাঁর ভাণ্ডার উন্মুক্ত হয়, তখন মেঘগুলি পাখির মত উড়ে যায়।
15 তিনি তাঁর প্রতাপ গুণে মেঘপুঞ্জ জমাট করেন, তখন সেগুলি শিলায় শিলায় গুঁড়ো হয়। তাঁর বজ্রনাদ পৃথিবীকে কম্পিত করে,
16 তাঁর আবির্ভাবে পাহাড়পর্বত কেঁপে ওঠে, তাঁর ইচ্ছা অনুসারে দক্ষিণাবাতাস বয়, উত্তরা ঝড়ঝঞ্ঝা ও ঘূর্ণিবায়ুও তাই করে।
17 18 তিনি তুষার বিছিয়ে দেন যেন নেমে আসা পাখির মত, সেই তুষারপাত যেন নেমে বসা পঙ্গপালের মত ; চোখ তুষার নির্মলতার সৌন্দর্যে বিস্মিত, তুষারপাত দর্শনে হৃদয় আশ্চর্যান্বিত।
18
19 তিনি পৃথিবীর উপর জমাট শিশির বিছিয়ে দেন লবণের মত, তখন তা বরফ হয়ে কাঁটার মত খাড়া হয়ে দাঁড়ায়।
20 ঠাণ্ডা বাতাস উত্তর থেকে বয়, তাতে জলাশয়ের উপরে বরফ জমাট হয়; বরফ সমস্ত জলরাশির উপরে ব'সে তা বর্মের মত পরিবৃত করে।
21 বাতাস পর্বতমালাকে শুষ্ক করে, প্রান্তরকে পুড়িয়ে ফেলে, ঘাস গ্রাস করে আগুনের মত।
22 কিন্তু এই সমস্ত কিছুর প্রতিকারে আসছে আকস্মিক মেঘ, শিশিরের আগমন উত্তাপ থেকে আরাম দেয়।
23 ঈশ্বর তাঁর বাণীবলে অতল গহ্বরকে দমন করলেন, সেখানে দ্বীপপুঞ্জকে রোপণ করলেন।
24 সমুদ্রপথে চরে যারা, তারা সেই সমুদ্রের বিপদের কথা বলে, তাদের বর্ণনায় আমাদের কান আশ্চর্য হয়;
25 কেননা সেখানেও রয়েছে অদ্ভুত ও আশ্চর্য বস্তু, রয়েছে সব প্রকার প্রাণী ও সামুদ্রিক নানা দানব।
26 ঈশ্বরের দোহায় দূত শুভযাত্রা করে, সমস্ত কিছু চলে তাঁর বাণীমত।
27 আমরা আরও কতই না বলতে পারতাম ! কিন্তু কখনও শেষ করতাম না। যাই হোক, সমাপ্তি স্বরূপ বলব : ‘তিনি সবকিছু!”
28 তাঁর গৌরবকীর্তন করার জন্য কোথায় শক্তি পাব, যেহেতু তিনি সেই মহান, যিনি তাঁর সমস্ত কর্মের ঊর্ধ্বে?
29 প্রভু ভয়ঙ্কর, মহামহিম, তাঁর পরাক্রম আশ্চর্যময়।
30 প্রভুর গৌরবকীর্তনে তোমরা তাঁর বন্দনা কর, — যথাসাধ্যই কর, কারণ তিনি এর চেয়েও বন্দনীয়। তাঁর বন্দনাগানে তোমাদের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ কর, ক্লান্ত হয়ে পড়ো না—তোমাদের তো কখনও শেষ হবে না।
31 এমন কেইবা তাঁর দর্শন পেয়েছে যে, তাঁর বর্ণনা করবে? তিনি যেমন আছেন, কেইবা সেই অনুসারে তাঁর মহিমাকীর্তন করতে পারে?
32 এর চেয়ে আরও মহা মহা নিগূঢ় তত্ত্ব রয়েছে; তাঁর যত কর্মকীর্তি—আমরা কেবল তার মুষ্টিমেয় কিছুরই দর্শন পাই।
33 কেননা প্রভু সমস্ত কিছুই নির্মাণ করলেন, আর ভক্তপ্রাণ যারা, তাদের তিনি প্রজ্ঞা দান করলেন।