Index

Sirach - Chapter 31

1 ধনজনিত অনিদ্রা দেহ জীর্ণ করে, তেমন দুশ্চিন্তা নিদ্রা দূর করে।
2 অনিদ্রাজনিত দুশ্চিন্তা তোমার নিদ্রায় বাধা দেয়, কঠিন রোগের মত তা নিদ্রা বিচ্যুত করে।
3 ধন সংগ্রহণে ধনী শ্রম করে, থামলে সে বিলাসিতা গান্ডেপিণ্ডে ভোগ করে।
4 তার হীনাবস্থায় দরিদ্র শ্রম করে, থামলে সে নিঃস্বতায় পড়ে।
5 সোনা যে ভালবাসে, সে অপরাধ থেকে মুক্ত হবে না, অর্থের পিছনে যে ছোটে, সে তা দ্বারা বিকৃত হবে।
6 সোনার কারণে অনেকের বিনাশ ঘটেছে, তাদের সর্বনাশ তাদের সামনেই ছিল উপস্থিত।
7 যারা তার চরণে বলি উৎসর্গ করে, তা তাদের জন্য ফাঁস, নির্বোধ তাতে ধরা পড়ে।
8 সুখী সেই ধনবান মানুষ, সবার দৃষ্টিতে যে নিষ্কলঙ্ক , সোনার পিছনে যে ছুটে যায় না।
9 কে সেই মানুষ? আমরা তো তাকে সুখী ঘোষণা করব : কারণ আপন জাতির মধ্যে সে সাধন করল আশ্চর্য কাজ।
10 পরীক্ষিত হয়ে কে সিদ্ধপুরুষ বলেই উত্তীর্ণ হল ? তা হবে তার গৌরবের কারণ। অপরাধ করতে পারলেও কে অপরাধ করেনি? অনিষ্ট করতে পারলেও কে তা করেনি?
11 তার সম্পদ স্থিতমূল থাকবে, জনমণ্ডলী করবে তার পরোপকারিতার স্তুতিগান।
12 তোমার সামনে কি ঘটা করে আয়োজিত ভোজন-টেবিল রয়েছে? তার দিকে মুখ হা করো না ; একথা বলো না: ‘এ কেমন প্রাচুর্য !'
13 মনে রেখ : লোভী চোখ ভাল নয়। চোখের চেয়ে মন্দ কী সৃষ্ট হয়েছে? এজন্য চোখ অবিরত অশ্রুপাত করে।
14 গৃহকর্তা যে খাদ্যের উপর চোখ নিবন্ধ রাখে, তার দিকে হাত বাড়িয়ো না, তার সঙ্গে একই থালায় রুটি ভিজিয়ো না।
15 তোমার নিজের প্রয়োজনের আলোয় অন্যজনদের প্রয়োজন বুঝে নাও, সব কিছুতে চিন্তাশীল হও।
16 তোমার সামনে যা আয়োজিত হয়, তা ভদ্রলোকেরই মত গ্রহণ কর, তোমার খাবার পেটুকের মত গ্রাস করো না, পাছে নিজেকে ঘৃণার পাত্র কর।
17 ভদ্রতার খাতিরে তুমিই প্রথম গাম, পেটুক হয়ো না, পাছে সকলের নিন্দার পাত্র হও;
18 আর তুমি অনেক অতিথির মধ্যে বসলে তবে এমনটি না হয় যেন তুমিই প্রথম হাত বাড়াও।
19 ভদ্রলোকের পক্ষে সামান্য কিছুই যথেষ্ট, একবার শয্যায় শয়ন করলে তার শ্বাস রুদ্ধ হয় না।
20 ভোজনে মিতাচার স্বাস্থ্যকর নিদ্রা বয়ে আনে, মানুষ বেশ সকালেই ওঠে, আর তার চিত্ত প্রফুল্ল ; অনিদ্রা, পেটে ব্যথা ও বমি-বমি করা গা, এ পেটুকের সঙ্গী।
21 যদি তোমাকে বেশি খেতে বাধ্য করা হয়, ওঠ, গিয়ে খাবারটা উগরে দাও, তাতে আরাম পাবে।
22 সন্তান, আমাকে শোন, আমাকে হেয়জ্ঞান করো না, শেষে তুমি দেখতে পাবে যে, আমার কথা সত্য। তোমার সমস্ত কাজে মাত্রা বজায় রেখে চল, তবে রোগ কখনও তোমার নাগাল পাবে না।
23 যে ঘটা করে ভোজের আয়োজন করে, অনেকের ওষ্ঠ তার প্রশংসা করবে, আর তার বদান্যতার সাক্ষ্য সত্যাশ্রয়ী।
24 কিন্তু ভোজ আয়োজনে যে কৃপণতা দেখায়, তার বিষয়ে সকলে গজগজ করে, আর তার কৃপণতার সাক্ষ্য যথার্থ।
25 আঙুররসের বিষয়ে নিজেকে তত বলবান দেখিয়ো না, কেননা আঙুররস অনেকের সর্বনাশ ঘটিয়েছে।
26 হাপর লোহার টেম্পার যাচাই করে, তেমনি আঙুররস দাম্ভিকদের প্রতিযোগিতায় হৃদয় যাচাই করে।
27 মানুষের পক্ষে আঙুররস যেন জীবনের মত, অবশ্যই, তুমি যদি মাত্রা বজায় রেখে পান কর। জীবন কী, আঙুররস যদি না থাকে? মানুষের আনন্দের উদ্দেশ্যেই তা সৃষ্ট হয়েছে।
28 হৃদয়ের ফুর্তি, প্রাণের আনন্দ, তা-ই আঙুররস, যখন যথাসময় ও যথামাত্রায় পান করা হয়।
29 উত্তেজনার সঙ্গে বা প্রতিযোগিতার জন্য অতিমাত্রায় পান করা আঙুররস প্রাণের তিক্ততা বয়ে আনে।
30 মাতলামি নির্বোধের রোষ বাড়ায়—তার নিজের সর্বনাশে, তার বল কমায়—আর সে মার খাবে।
31 ভোজের সময়ে তোমার পাশের অতিথিকে প্ররোচিত করো না, সে আনন্দ ভোগ করতে করতে তুমি তার পিছনে হেসো না, তাকে কোন ভারী কথা শুনিয়ো না, ঋণ শোধ করার দাবি রাখায় তাকে বিরক্ত করো না।