1 চিকিৎসককে উচিত সম্মান দেখাও, সেও প্রভু দ্বারা সৃষ্ট হয়েছে।
2 রোগমুক্তি পরাৎপর থেকেই আসে, তা রাজার কাছ থেকে পাওয়া উপহারের মত।
3 চিকিৎসকের জ্ঞান তার মাথা উচ্চ রাখে, মহামান্যদের মধ্যেও সে সম্ভ্রমের পাত্র।
4 প্রভু মাটি থেকে ঔষধ সৃষ্টি করেছেন, সদ্বিবেচক মানুষ তা হেয়জ্ঞান করে না।
5 জল একসময় কি এক টুকরো কাঠ দ্বারা মিষ্ট হয়নি, যাতে প্রকাশিত হয় তার প্রভাব?
6 ঈশ্বর মানুষকে জ্ঞান দিয়েছেন, সে যেন তাঁর আশ্চর্য কর্মকীর্তি বিষয়ে গৌরববোধ করতে পারে।
7 সেগুলি দ্বারা তিনি নিরাময় করেন ও কষ্টে আরাম দেন, এবং ঔষধ-প্রস্তুতকারী মিশ্রণ প্রস্তুত করে।
8 তাই তাঁর কর্মকীর্তির শেষ নেই, তাঁর কাছ থেকে পৃথিবীতে সমৃদ্ধি আসে।
9 সন্তান, অসুখের দিনে অবসন্ন হয়ো না, বরং প্রভুর কাছে প্রার্থনা কর, তিনি তোমাকে সুস্থ করবেন।
10 ত্রুটিপূর্ণ সমস্ত কিছু ত্যাগ কর, হাত অকলুষিত রাখ, সমস্ত পাপ থেকে হৃদয় পরিশুদ্ধ কর।
11 ধূপ অর্পণ কর, সেরা ময়দা অর্য্যরূপে নিবেদন কর, তোমার সামর্থ্য অনুসারে নধর পশুর বলি উৎসর্গ কর।
12 পরে চিকিৎসককে স্থান দাও—প্রভু তাকেও সৃষ্টি করেছেন!—সে তোমা থেকে দূরে না থাকুক, কেননা তোমার দরকার আছে।
13 এমন সময় আছে, যখন সাফল্য তাদেরই হাতে।
14 কেননা তারাও প্রভুর কাছে প্রার্থনা করবে, যেন উপশম করার ব্যাপারে তিনি তাদের অনুগ্রহ দান করেন, নিরাময়ের ব্যাপারেও সহায়তা করেন, যাতে পীড়িত ব্যক্তি সঞ্জীবিত হয়।
15 নিজের নির্মাতার চোখে যে কেউ পাপ করে, সে চিকিৎসকের হাতে পড়ুক !
16 সন্তান, মৃতজনের উপরে চোখের জল ফেল গভীর দুঃখ ভোগ করে এমন মানুষের মত বিলাপগান গেয়ে ওঠ ; পরে মৃতদেহকে উপযুক্ত রীতি অনুযায়ী সমাধি দাও, ও তার সমাধিমন্দির অবহেলা করো না।
17 তিক্ত অশ্রু ফেল, বুক চাপড়াও, শোকপালন মৃতজনের মর্যাদা অনুযায়ী হোক: —দু' তিন দিন, নিন্দাজনক কথা এড়াবার জন্য পরে তোমার দুঃখে সান্ত্বনা পাও।
18 কেননা দুঃখ মৃত্যুতে চালিত করতে পারে, হৃদয়ের দুঃখ শক্তি ক্ষয় করে।
19 দুর্বিপাকে দুঃখ দীর্ঘস্থায়ী, দুঃখে ভরা জীবন হৃদয়ের কাছে দুঃসহ।
20 তোমার হৃদয় দুঃখের হাতে ছেড়ে দিয়ো না, তা দূর করে দাও, নিজের পরিণামের কথা ভাব।
21 ভুলো না ফিরে আসার উপায় নেই! এতে মৃতজনের কোন উপকার নেই, আর তুমি নিজে নিজের ক্ষতি সাধন কর।
22 আমার দশা মনে রেখ, যেহেতু তা তোমারও হবে : গতকাল আমি, আজ তুমি !
23 মৃতজনকে একবার বিশ্রাম দেওয়া হলে, তার স্মৃতিকেও বিশ্রাম করতে দাও, তার আত্মা একবার চলে গেলে তার জন্য আর অস্থির হয়ো না।
24 শাস্ত্রীর প্রজ্ঞালাভ তার অবসরের ফল যার কর্মকাণ্ড সীমিত, সে প্রজ্ঞাবান হয়ে উঠবে।
25 যে লাঙল চালায়, সে যখন অঙ্কুশ চালাতেই গর্ব করে, সে কেমন করে প্রজ্ঞাবান হতে পারবে? সে তো বলদ চালায়, তাদের কাজেই ব্যস্ত, বাছুরই তার একমাত্র কথাবার্তার বিষয়!
26 হালের রেখা দিতেই তার মন ব্যস্ত, গাভীদের জাব দেবার জন্য সে অনিদ্র থাকে।
27 তেমনি সেই সমস্ত কারিগর বা কারুশিল্পী, যারা যেমন দিন তেমনি রাতও কাটায় ; যারা সীলমোহর খোদাই করে, যারা নতুন অঙ্কন আবিষ্কার করতে নিত্য ব্যাপৃত, নমুনাটিকে সঠিকভাবে অনুকরণ করতে নিবিষ্ট ; কাজ শেষ করার জন্য তারা তো রাতে জেগে থাকে।
28 তেমনি কর্মকার; সে নেহাইয়ের সামনে বসে থাকে, লোহার যত কাজে মন ব্যস্ত রাখে; আগুনের নিশ্বাস তার দেহ দগ্ধ করে, হাপরের তাপের সঙ্গে তাকে সংগ্রাম করতে হয় ; হাতুড়ির শব্দ তার কান কালা করে, তার চোখ কাজের নমুনার উপরে নিবন্ধ, কাজ শেষ করাই তার একমাত্র চিন্তা, কার্যসিদ্ধির লক্ষ্যে রাতে জেগে থাকে।
29 তেমনি কুমোর; কাজে বসে সে পা দিয়ে চক্র ঘোরায়, তার কাজের জন্য সর্বদাই চিন্তিত তার কর্মকাণ্ডের হিসাব সুক্ষ্মতম।
30 সে মাটিতে হাতের চাপে গড়নের রূপ দেয়, সেইসঙ্গে পা দিয়ে মাটির গতি রোধ করে ; সূক্ষ্ম রঙ দেবার জন্য সে চিন্তান্বিত, চুল্লি পরিষ্কার করার জন্য সে রাতে জেগে থাকে।
31 এরা সকলে নিজেদের হাতের উপরেই নির্ভরশীল : প্রত্যেকে যে যার শিল্পকর্মে নিপুণ।
32 এরা না থাকলে একটা নগর নির্মাণ করা সম্ভব হবে না, লোকেরাও শহরে বসতি করতে কি হাঁটাচলা করতে পারবে না।
33 তবু জন-মন্ত্রণাসভায় এদের খোঁজে কেউ বেরোয় না, জনমণ্ডলীতে এদের বিশেষ কোন স্থান নেই, বিচারাসনেও বসে না, বিচারের রীতিনীতিও এদের জানা নেই।
34 এরা তো শিক্ষাদান উজ্জ্বল করে না, ন্যায়নীতিও নয়, প্রবচনমালার রচয়িতাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নয় ; না, এরা জড় পদার্থেরই অবলম্বন, এদের প্রার্থনা পেশাগত কাজেই সীমিত।