Index

Sirach - Chapter 11

1 প্রজ্ঞা বিনম্রকে মাথা উচ্চ করতে সক্ষম করে তোলে, তাকে মহামান্যদের মধ্যে আসন দেয়।
2 তার সৌন্দর্যের জন্য কারও প্রশংসা করো না, তার বাহ্যিক চেহারার জন্য কারও অপছন্দ করো না।
3 যত প্রাণীদের পাখা আছে, তাদের মধ্যে মৌমাছি ক্ষুদ্র বটে, কিন্তু তার উৎপাদিত বস্তু মিষ্ট জিনিসের মধ্যে সবচেয়ে মিষ্ট।
4 তোমার সাজসজ্জা নিয়ে গর্ব করো না, গৌরবের দিনেও অহঙ্কার করো না, কেননা প্রভুর কর্মকীর্তি আশ্চর্যময়, অথচ তাঁর কর্মকীর্তি মানুষের কাছে গুপ্ত।
5 অনেক নৃপতিকে ধুলায় বসতে বাধ্য করা হয়েছে, এবং অচেনা মানুষ তাঁদের কিরীট নিজের মাথায় নিল।
6 অনেক প্রভাবশালীকে নমিত করা হল, গণ্যমান্য বহু মানুষকে পরের হাতে তুলে দেওয়া হল।
7 অনুসন্ধান করার আগে নিন্দা করো না, আগে ভাব, পরে ভর্ৎসনা কর।
8 শুনবার আগে উত্তর দিয়ো না, বক্তৃতার মধ্যে হস্তক্ষেপ করো না।
9 যা তোমার বিষয় নয়, তা নিয়ে তর্কাতর্কি করো না, পাপীদের ঝগড়ায় হস্তক্ষেপ করো না।
10 সন্তান, তোমার কর্মকাণ্ডে বেশি কিছু হাতে নিয়ো না, বেশি বাড়ালে দণ্ড এড়াতে পারবে না ; দৌঁড়লেও কোথাও গিয়ে পৌঁছবে না, পালালেও রেহাই পাবে না।
11 এমন মানুষ আছে, যে যত ব্যতিব্যস্ত হয়ে কাজ করে, তত পিছেই পড়ে থাকে।
12 এমন মানুষ আছে, যে দুর্বল, যার সাহায্য প্রয়োজন, যে সম্পদে নির্ধন ও দরিদ্রতায় ধনবান ; অথচ প্রভু তার প্রতি সদয় দৃষ্টিপাত করেন, হীনাবস্থা থেকে তাকে তুলে আনেন,
13 তার মাথা উচ্চ করে রাখেন, তাতে অনেকে বিস্মিত হয়।
14 মঙ্গল-অমঙ্গল, জীবন-মৃত্যু, নিঃস্বতা-ঐশ্বর্য—সবই প্রভু থেকেই আগত।
15 প্রভুর দান ভক্তদের জন্য নিশ্চিত, চিরকাল ধরে তাদের চালিত করার জন্য তাঁর অনুগ্রহ সর্বদাই উপস্থিত।
16 এমন মানুষ আছে, যে কৃপণতা ও কষ্টভোগের জোরেই ধনী হয় ; এই দেখ, তার প্রাপ্য মজুরি এ :
17 যদিও সে ভাবে, “স্বস্তি পেলাম, এবার আমার সঞ্চয়ের ফল ভোগ করব,' তবু সে জানে না, আর কতদিন বাকি আছে ! অপরের হাতে সব কিছু ছেড়ে তাকে মরতেই হবে !
18 তোমার কর্তব্য কাজে নিষ্ঠাবান হও, তাতে রত থাক, তোমার কাজ করতে করতেই প্রাচীন হও।
19 পাপীর কর্মকীর্তির সামনে হা করে থেকো না, প্রস্তুতে আস্থা রাখ, পরিশ্রমে নিষ্ঠাবান হও, কেননা দরিদ্রকে হঠাৎ, এক নিমেষেই, ধনবান করা, এমন কাজ প্রভুর পক্ষে সহজ।
20 প্রভুর আশীর্বাদ, এ তো ভক্তের মজুরি, ঈশ্বর এক নিমেষেই আপন আশীর্বাদ মুকুলিত করেন।
21 তুমি একথা বলো না, 'আমার কিসের প্রয়োজন ? এখন থেকে আমার হাতে কতটুকু সম্পদ থাকবে ?”
22 একথা বলো না, ‘স্বনির্ভরশীল হবার জন্য যা দরকার, তা আমার আছে এখন আমার প্রতি আর কী অমঙ্গল ঘটতে পারে ?
23 প্রাচুর্যের দিনে মানুষ দুর্দশার কথা ভুলে যায়, আর দুর্দশার দিনে প্রাচুর্যের কথা তার মনে থাকে না।
24 মৃত্যুর দিনে মানুষকে তার আচরণের যোগ্য প্রতিফল দেওয়া প্রভুর পক্ষে সহজ।
25 এক ঘণ্টার দুঃখ সুখের কথা মুছে দেয় ; মানুষের মৃত্যুক্ষণে তার কর্ম প্রকাশ পাবে।
26 শেষ পরিণামের আগে কাউকে ভাগ্যবান বলো না; শেষ পরিণামেই মানুষের প্রকৃত পরিচয় ব্যক্ত হয়।
27 অমুক তমুককে ঘরে এনো না, কেননা প্রবঞ্চনাকারীর ফাঁদ বহু।
28 যেমন কাচে রুদ্ধ তিতির পাখি, তেমন গর্বিতের হৃদয় : গুপ্তচরের মত সে তোমার পতনের জন্য লক্ষ রাখে,
29 সে মঙ্গল অমঙ্গলে পরিণত করে, ওত পেতে থাকে, উত্তম জিনিসের মধ্যেও খুঁত পাবে।
30 আগুনের একটামাত্র স্ফুলিঙ্গের ফলে হাপর ভরে, পাপী রক্তপাতের জন্য ওত পেতে থাকে।
31 পাষণ্ডের বিষয়ে সাবধান— সে তো অপকর্ম সাজায়- পাছে তোমাকেও সবসময়ের মত কলুষিত করে।
32 অচেনা লোককে ঘরে ওঠাও, সে সবকিছু উল্টোপাল্টা করবে, তোমার আপনজনদের কাছেও তোমাকে অচেনা করবে।