1 হে মৃত্যু, তোমার কথা স্মরণ করা কেমন তিক্ত সেই মানুষের পক্ষে, যে নিজের সম্পদ ভোগ করতে করতে শাস্তিতে বাস করে, সেই মানুষের পক্ষে, যে দুশ্চিন্তা-বিহীন ও সমস্ত কিছুতে ভাগ্যবান, যে এখনও খাদ্যের স্বাদ উপভোগ করতে সক্ষম!
2 হে মৃত্যু, তোমার রায় গ্রহণীয় সেই মানুষের কাছে যে অভাবী ও নিঃশেষিত হচ্ছে যার বল, সেই মানুষের কাছে, যে বার্ধক্যে জীর্ণ ও দুশ্চিন্তায় পরিপূর্ণ, ক্ষোভ-প্রকৃতির সেই মানুষের কাছে, যে ধৈর্য হারিয়েছে!
3 তুমি মৃত্যুর রায় ভয় পেয়ো না, তোমার পূর্বপুরুষদের ও তোমার বংশধরদের কথাই স্মরণ কর!
4 এ তো প্রতিটি প্রাণীর জন্য প্রস্তুর রায়; তবে পরাৎপরের মঙ্গল-ইচ্ছার প্রতি আপত্তি কেন? দশ, কি শত, কি সহস্র বছর হোক জীবনের আয়ু, পাতালে আয়ুর কথা তোমার বিরুদ্ধে উত্থাপন করা হবে না।
5 জঘন্য সন্তানেরা—তেমনই পাপীদের সন্তানেরা, যারা মিলিত হয় ভক্তিহীনদের আস্তানায়।
6 পাপীদের সন্তানদের উত্তরাধিকার বিনষ্ট হবে, তাদের বংশধরেরা ভোগ করবে চিরস্থায়ী দুর্নাম।
7 দুর্জন পিতার বিরুদ্ধে সন্তানেরা কটুবাক্য শোনাবে, কারণ তার কারণে তারা দুর্নামের পাত্র।
8 ধিক তোমাদের, দুর্জন সকল! তোমরা তো পরাৎপর ঈশ্বরের বিধান ত্যাগ করেছ।
9 যখন তোমরা জন্মেছিলে, তখন অভিশাপের উদ্দেশ্যেই জন্মেছিলে আর যখন মরবে, তখন অভিশাপই হবে তোমাদের স্বত্বাংশ।
10 যা কিছু মাটি থেকে আগত, তা মাটিতে ফিরে যায়, তেমনি দুর্জনেরা অভিশাপ থেকে বিনাশের দিকে এগিয়ে চলে।
11 শোকপালন মৃতজনদের লাশ-সম্পর্কিত, পাপীদের কুনাম মুছে ফেলা হবে।
12 তোমার সুনামের বিষয়ে সতর্ক থাক, কেননা সহস্র সোনার মহাধনের চেয়ে নামই তোমার পক্ষে স্থায়ী হবে।
13 সুখের জীবনের দিনগুলির জন্য একটা সংখ্যা নিরূপিত, কিন্তু সুনাম চিরস্থায়ী।
14 সন্তানেরা, শান্তশিষ্ট হয়ে আমার শিক্ষাবাণী রক্ষা কর ; গুপ্ত প্রজ্ঞা ও অদৃশ্য ধন, উভয়তে কি লাভ?
15 নিজের প্রজ্ঞা যে গুপ্ত রাখে, তার চেয়ে সে-ই শ্রেয়, যে নিজের মূর্খতা গুপ্ত রাখে।
16 পরবর্তী এই বিষয়গুলিতে লজ্জাবোধ রক্ষা কর, কেননা সমস্ত প্রকার লজ্জা যুক্তিসঙ্গত নয় ; সমস্ত পরিস্থিতিও সকলের কাছে সঠিকভাবে পরিগণিত নয়।
17 লজ্জাবোধ কর—পিতামাতার সামনে উচ্ছৃঙ্খলতার বিষয়ে, সমাজনেতা ও প্রভাবশালীর সামনে মিথ্যার বিষয়ে,
18 বিচারক ও শাসকের সামনে অন্যায়ের বিষয়ে, জনসমাবেশের সামনে অধর্মের বিষয়ে,
19 সাথী ও বন্ধুর সামনে অসততার বিষয়ে, তোমার পরিবেশের সামনে চুরির বিষয়ে,
20 শপথ ও সন্ধি লঙ্ঘন করার বিষয়ে, খাওয়া-দাওয়ার সময়ে টেবিলের উপরে কনুই রাখার বিষয়ে,
21 নেওয়া ও দেওয়ার সময়ে অশালীনতার বিষয়ে, যারা তোমাকে মঙ্গলবাদ জানায়, তাদের কাছে প্রতি মঙ্গলবাদ না জানানোর বিষয়ে,
22 দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোকের উপরে দৃষ্টিপাতের বিষয়ে, স্বজাতীয় মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে,
23 পরের উত্তরাধিকার বা উপহারের অপহরণের বিষয়ে, পরের বন্ধুকে বাসনার বিষয়ে,
24 তার দাসীর সঙ্গে নির্লজ্জ সংসর্গের বিষয়ে —তার শয্যার কাছে এগিয়ে যেয়ো না ! -
25 বন্ধুদের সামনে কটুবাক্যের বিষয়ে —উপহার দেওয়ার পর কাউকে অপমান করো না—
26 যা শুনেছ, তা রটিয়ে বেড়াবার বিষয়ে, গোপন তত্ত্ব প্রকাশের বিষয়ে।
27 তবেই তুমি প্রকৃত লজ্জাবোধের পরিচয় পাবে, এও দেখতে পাবে যে, তুমি সকলের অনুগ্রহের পাত্র।