1 সমগ্র মানবজাতির জন্য কঠিন দশা সৃষ্ট হল, আদমসন্তানদের ঘাড়ে চাপা রয়েছে ভারী জোয়াল —মাতৃগর্ভে তাদের উদ্ভবের দিন থেকে সকলের সেই সাধারণ মাতার কাছে প্রত্যাগমন-দিন পর্যন্ত!
2 যে বিষয়ে তাদের মন দুশ্চিন্তায় ও তাদের হৃদয় শুয়ে পূর্ণ হয়, তা হল মৃত্যুদিনের চিন্তা।
3 গৌরবময় সিংহাসনে আসীন মানুষ থেকে সেই নিঃস্ব পর্যন্ত, যে মাটিতে ও ছাইয়ে শুয়ে আছে ;
4 বেগুনি কাপড় ও মুকুট পরা মানুষ থেকে সেই ব্যক্তি পর্যন্ত, যে চটের কাপড় পরে আছে, সকলের জন্য সমস্ত কিছু হচ্ছে রোষ, হিংসা, সংক্ষোভ, অস্থিরতা, মৃত্যুর ভয়, রেশারেশি ও ঝগড়া-বিবাদ।
5 শয্যায় শুয়ে যখন মানুষ বিশ্রাম করে, তখনও তার নিদ্রা তার দুশ্চিন্তা আরও আলোড়িত করে।
6 কিছুক্ষণের মত, এক নিমেষই মাত্র, সে বিশ্রাম করে; পরে নিদ্রাকালে, উজ্জ্বল দিনমানেই যেন, সে নিজের হৃদয়ের ছায়ামূর্তি দ্বারা সংক্ষুব্ধ হয়, এমন মানুষের মত, যে যুদ্ধে রেহাই পেয়েছে;
7 এবং উদ্ধারের মুহূর্তে সে জাগে এতে বিস্মিত হয়ে যে, ভয় করার মত কিছুই ছিল না!
8 মানুষ থেকে পশু পর্যন্ত সমস্ত প্রাণীর ভাগ্য এই এই, —কিন্তু পাপীদের জন্য এর সাতগুণ!—
9 মৃত্যু, রক্তপাত, রেশারেশি, খড়্গ, দুর্বিপাক, দুর্ভিক্ষ, দুর্ঘটনা, মারী।
10 এই সমস্ত অমঙ্গল দুষ্কর্মাদের জন্য সৃষ্ট হল, আর তাদের কারণেই সেই জলপ্লাবন ঘটল।
11 যা কিছু মাটি থেকে আগত, তা মাটিতে ফিরে যায় ; যা কিছু জল থেকে আগত, তা সমুদ্রে ফিরে যায়।
12 সমস্ত প্রকার উৎকোচ ও অন্যায্যতা মুছে ফেলা হবে, কিন্তু বিশ্বস্ততা থাকবে চিরকাল।
13 অন্যায়ভাবে পাওয়া ধন খাদনদীর মত শুকিয়ে যাবে, হ্যাঁ, সেই একমাত্র বজ্রনাদের মত, যা বৃষ্টির লক্ষণ।
14 সে হাত খুলে আনন্দ করবে, একই প্রকারে পাপীরা বিনাশের হাতে পড়বে।
15 ভক্তিহীনদের বংশ বেশি শাখা উৎপন্ন করবে না, কলুষিত যত মূল কেবল কঠিন পাথর পায়।
16 জলস্রোত ও নদীতীরে পোঁতা যে ঝাউগাছ, তা-ই অন্য সমস্ত ঘাসের আগে উৎপাটিত হবে।
17 মঙ্গলানুভবতা যেন আশিসপূর্ণ পরমদেশের মত, দয়াকর্ম চিরস্থায়ী।
18 স্বনির্ভরশীল মানুষ ও শ্রমিকের জন্য জীবন মধুর হবে, কিন্তু উভয়ের চেয়ে আরও মধুর হবে তারই জন্য, যে ধনের সন্ধান পায়।
19 সন্তানেরা ও নগরীর ভিত একটা নাম চিরস্থায়ী করে, কিন্তু উভয়ের চেয়ে কলঙ্কমুক্ত নারীই অধিক সম্মানের পাত্র।
20 আঙুররস ও গানবাজনা হৃদয়কে আনন্দিত করে, কিন্তু উভয়ের চেয়ে প্রজ্ঞাকে ভালবাসাই আনন্দদায়ী।
21 বাঁশি ও বীণা সঙ্গীত শ্রুতিমধুর করে তোলে, কিন্তু উভয়ের চেয়ে মধুর কণ্ঠই শ্রেয়।
22 চোখ মাধুর্য ও সৌন্দর্য আকাঙ্ক্ষা করে, কিন্তু উভয়ের চেয়ে সবুজ মাঠ বাসনা করে।
23 বন্ধু ও সাথীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সর্বদাই প্রীতিকর কিন্তু উভয়ের চেয়ে বধূ ও স্বামীই শ্রেয়তর।
24 ভাইয়েরা ও মিত্রেরা বিপদের দিনে উপযোগী, কিন্তু উভয়ের চেয়ে অর্থদানই নিস্তার করবে।
25 সোনা ও রুপো তোমার পদক্ষেপ সুস্থির করে, কিন্তু উভয়ের চেয়ে সুপরামর্শই মূল্যবান বলে গণ্য।
26 অর্থ ও প্রতাপ হৃদয়কে আস্থাবান করে, কিন্তু উভয়ের চেয়ে প্রভুভয়ই উত্তম। প্রভুভয় থাকলে আর কিছুর অভাব হয় না, তা থাকলে সাহায্যের সন্ধান নিষ্প্রয়োজন।
27 প্রভুভয় যেন আশিসম্পূর্ণ পরমদেশের মত ; অন্য যত সুনামের চেয়ে এরই রক্ষা মূল্যবান।
28 সন্তান, পরজীবীর মত ব্যবহার করো না ; পরজীবী হওয়ার চেয়ে মরাই ভাল।
29 পরের থালার দিকে তাকিয়ে জীবনযাপন করা জীবন বলে গণ্য করা চলে না। পরের খাদ্য গলা কলুষিত করে, বুদ্ধিমান ও ভদ্র যে মানুষ, সে তেমন ব্যবহারের বিষয়ে সাবধান থাকবে।
30 তেমন পরজীবী যা বলে, তা মিষ্টি শোনায় বটে, কিন্তু তার পেটে আগুনই জ্বলে।