1 যে কোন বন্ধু বলে : 'আমিও তোমার বন্ধু,’ কিন্তু এমন বন্ধু আছে, কেবল নামেই যে বন্ধু।
2 সাথী বা বন্ধু যখন শত্রু হয়, তখন তা কি মরণদায়ী দুঃখ নয়?
3 হে ধূর্ত প্রবণতা, কোথা থেকে তুমি বের হয়েছ যে, তোমার শঠতায় পৃথিবীকে আচ্ছন্ন কর?
4 এক প্রকার সাথী সুখের দিনে বন্ধুর সঙ্গে আনন্দ করে, আর ক্লেশের দিনে তার বিপক্ষে দাঁড়াবে।
5 এক প্রকার সাথী বন্ধুর জন্য অন্তরেই দুঃখ ভোগ করে, আর সংগ্রামের সময়ে ঢাল ধারণ করবে।
6 তোমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কথা ভুলে যেয়ো না, তোমার সমৃদ্ধির দিনে তাকে বিস্মৃত হয়ো না।
7 যে কোন পরামর্শদাতা পরামর্শ দেয়, কিন্তু কেউ কেউ নিজের স্বার্থেই পরামর্শ দেয়।
8 পরামর্শদাতার বিষয়ে সাবধান থাক, জেনে নাও তার প্রয়োজন কী কী, —যেহেতু তার পরামর্শ ও তার স্বার্থ এক! — পাছে তোমার বিষয়ে গুলিবাট ক'রে
9 তোমাকে বলে, 'তোমার পথ উত্তম,' পরে সরে গিয়ে দেখতে চায় তোমার কী হবে।
10 তোমার দিকে বাঁকা চোখে তাকায়, এমন লোকের কাছে পরামর্শ নিয়ো না, তোমার বিষয়ে হিংসা পোষণ করে, এমন লোকদের কাছ থেকে তোমার সঙ্কল্প গুপ্ত রাখ।
11 তার বিপক্ষীয়ার বিষয়ে কোন নারীর কাছে পরামর্শ নিয়ো না, যুদ্ধের বিষয়ে কাপুরুষের কাছেও নয়, মূল্যের বিষয়ে ব্যবসায়ীর কাছেও নয়, বিক্রয়ের বিষয়ে ক্রেতার কাছেও নয়, কৃতজ্ঞতার বিষয়ে হিংসুকের কাছেও নয়, মমতার বিষয়ে নির্মম মানুষের কাছেও নয়, যে কোন কাজের বিষয়ে অলসের কাছেও নয়, ফসল কাটার বিষয়ে সাময়িক মঞ্জুরের কাছেও নয়, বড় কোন কাজের বিষয়ে অলস ক্রীতদাসের কাছেও নয়; কোনও পরামর্শের বিষয়ে এদের উপর নির্ভর করো না।
12 বরং ভক্তপ্রাণের সঙ্গেই সাহচর্য কর, যাকে তুমি আজ্ঞা পালনকারী বলে জান, যার প্রাণ তোমার প্রাণের মত, তুমি হোঁচট খেলে যে তোমাকে সহানুভূতি দেখাবে।
13 শেষে, তোমার হৃদয় যে পরামর্শ দেয়, তাতেই স্থির থাক, কেননা তার চেয়ে তোমার কাছে বিশ্বস্ত কেউ নেই;
14 বস্তুত মানুষের প্রাণ প্রায়ই তাকে স্পষ্ট এমন সাবধান বাণী দেয়, যা মিনারে থাকা সাতজন প্রহরীর সাবধান বাণীর চেয়েও স্পষ্ট।
15 এই সমস্ত কিছু বাদে তুমি পরাৎপরের কাছে প্রার্থনা কর, যেন তিনি সত্যের শরণে তোমার পদক্ষেপ চালিত করেন।
16 আলাপ-আলোচনাই সমস্ত কাজের সূচনা : যে কোন কাজের আগে বিচার-বিবেচনা করা উচিত।
17 হৃদয়ই চিন্তা-ভাবনার মূল, আর এ থেকে এই চারটে বিষয় উদ্গত হয়, তথা :
18 মঙ্গল ও অমঙ্গল, জীবন ও মৃত্যু, আর এই সমস্তের উপরে জিহ্বাই সর্বদা প্রভুত্ব চালায়।
19 কেউ আছে যে পরকে শেখাতে দক্ষ, কিন্তু নিজের বেলায় একেবারে অকেজো।
20 আবার বাক্পটু কেউ আছে, যে ঘৃণার পাত্র, শেষে সে না খেয়ে মরবে,
21 সে তো প্রভুর কাছ থেকে অনুগ্রহ পায়নি, যেহেতু একেবারে প্রজ্ঞাবিহীন।
22 আবার কেউ আছে, যে কেবল নিজেকেই প্রজ্ঞাবান মনে করে; তার মতে : তার সুবুদ্ধির ফল সুনিশ্চিত।
23 কিন্তু প্রকৃত প্রজ্ঞাবান জনগণকে সদুপদেশ দেয়, তারই সুবুদ্ধির ফল সুনিশ্চিত।
24 প্রজ্ঞাবান মানুষ আশীর্বাদে পরিপূর্ণ, যারা তাকে দেখে, তারা সকলে তাকে সুখী বলে।
25 মানুষের আয়ুষ্কালে দিনগুলির সংখ্যা নিরূপিত, কিন্তু ইস্রায়েলের দিনগুলি অগণন।
26 প্রজ্ঞাবান জনগণের মধ্যে আস্থা জয় করবে, তার নাম জীবিত থাকবে চিরকাল।
27 সন্তান, তোমার জীবনকালে নিজের প্রাণ যাচাই কর, তার জন্য যা কিছু ক্ষতিকর, তা তাকে দিয়ো না।
28 কেননা সবকিছু যে সবার জন্য উপযোগী এমন নয়, সবাই যে সবকিছু পছন্দ করে, তাও নয়।
29 রুচিকর খাদ্যের বিষয়ে পেটুক হয়ো না, খাদ্য সামগ্রীর প্রতি লোভী হয়ো না,
30 কেননা বেশি খেলে অসুখ হয়, অতিরিক্ত খেলে পেটে ব্যথা হয়।
31 অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে অনেকে মরেছে, কিন্তু যে কেউ সংযত থাকে, সে নিজের প্রাণ দীর্ঘান্বিত করে।