Index

Sirach - Chapter 39

1 কিন্তু পরাৎপরের বিধানে যে মনোনিবেশ করে, সেই বিধান যে ধ্যান করে, সে তেমন নয়। সে সকল প্রাচীনদের প্রজ্ঞা অনুসন্ধান করে, নবীদের বচনগুলি অধ্যয়নে নিবিষ্ট থাকে।
2 সে প্রসিদ্ধ মানুষদের বচন অন্তরে গেঁথে রাখে, রূপকের সূক্ষ্ম অর্থ ভেদ করে,
3 প্রবচনগুলির মর্মার্থ অনুসন্ধান করে, রূপকের প্রহেলিকায় ব্যস্ত থাকে,
4 মহীয়ানদের মাঝেই তার সেবাকর্ম, জননেতাদের সভায় সে উপস্থিত, বিজাতিদের দেশে যাত্রা করে, তাতে মানুষদের মধ্যে যা ভাল-মন্দ রয়েছে, সে তার অভিজ্ঞতা অর্জন করে।
5 খুব সকালে উঠে সে তার নির্মাতা প্রভুর দিকে হৃদয় ফেরায়, পরাৎপরের সম্মুখে মিনতি জানায়, প্রার্থনার উদ্দেশে ওষ্ঠ উন্মোচিত করে, নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।
6 মহাপ্রভুর ইচ্ছা হলে সে সুবুদ্ধির আত্মায় পরিপূর্ণ হবে, প্রজ্ঞাপূর্ণ বাণী বর্ষার মত ছড়িয়ে দেবে, প্রার্থনায় প্রভুকে ধন্যবাদ জানাবে।
7 সে সুমন্ত্রণা ও সজ্ঞানে ন্যায়বান হয়ে উঠবে, ঈশ্বরের রহস্যগুলি ধ্যান করবে।
8 সে আপন অর্জিত ধর্মশিক্ষার আলো ব্যক্ত করবে প্রভুর সন্ধির বিধানে গর্ববোধ করবে।
9 বহু বহু লোক তার সুবুদ্ধির প্রশংসাবাদ করবে, তার কথা কখনও বিস্মৃত হবে না, তার স্মৃতি কখনও মুছে যাবে না, যুগের পর যুগ জীবিত থাকবে তার নাম।
10 জাতিসকল তার প্রজ্ঞার কথা বলবে, জনমণ্ডলী প্রচার করবে তার প্রশংসাবাদ।
11 দীর্ঘায়ু হলে সে এমন সুনাম রেখে যাবে যা সহস্র নামের চেয়েও গৌরবময়, সে মরলে, তা তার পক্ষে যথেষ্ট।
12 আমি আমার ধ্যানের আরও কয়েকটা কথা ব্যক্ত করব, অর্ধমাসের চন্দ্রের মতই আমি তাতে পরিপূর্ণ।
13 আমার কথা শোন তোমরা, হে পুণ্যবান সন্তানেরা, জলস্রোতের কূলে গোলাপফুলের মতই ফুটে ওঠ।
14 সুবাস ছড়িয়ে দাও ধূপের মত, লিলিফুলেরই মত ফুল বিকশিত কর। ছড়িয়ে দাও সুবাস, গেয়ে ওঠ প্রশংসাগান, তাঁর সকল কাজের জন্য প্রভুকে বল ধন্য।
15 তাঁর নামের মহত্ত্ব ঘোষণা কর, গানে গানে, বীণা বাজিয়ে প্রচার কর তাঁর প্রশংসাবাদ। তোমাদের প্রশংসাবাদে তোমরা একথা বলবে :
16 প্রভুর সকল কাজ কতই না সুন্দর! তিনি যা নিরূপণ করেছেন, তা যথাসময় ঘটবে।' তুমি বলবে না : ‘এ কি? সেটা কেন?” সমস্ত বিষয় যথাসময় নিরীক্ষণ করা হবে।
17 তাঁর বাণীতে, জল থেমে খাড়া হয়ে দাঁড়ায়, তাঁর কণ্ঠে, জলভাণ্ডার খুলে যায়,
18 তাঁর আদেশে, তিনি যা ইচ্ছা করেন তা-ই ঘটে তাঁর পরিত্রাণকর্মে কেউ বাধা দিতে পারে না।
19 তাঁর সম্মুখে রয়েছে মানুষের সমস্ত কাজ, তাঁর চোখের সামনে গুপ্ত থাকা সম্ভব নয়;
20 তাঁর দৃষ্টি এক শাশ্বতকাল থেকে অপর শাশ্বতকাল পর্যন্ত প্রসারী, তাঁর কাছে আশ্চর্যের কিছু নেই।
21 তুমি বলবে না : 'এ কি? সেটা কেন?' কারণ সমস্ত কিছু একটা উদ্দেশ্য অনুসারেই সৃষ্ট হয়েছে।
22 যেভাবে তাঁর আশীর্বাদ নদীর মত স্থলভূমি আবৃত করে, ও বন্যার মত পৃথিবীকে জলসিক্ত করে,
23 সেইভাবে জাতিগুলি তাঁর ক্রোধ উত্তরাধিকাররূপে পাবে, ঠিক সেই সময়ের মত, যখন তিনি জলাশয় লবণাক্ত প্রান্তরে পরিণত করলেন।
24 পুণ্যজনদের জন্য তাঁর পথ সকল যেমন সোজা-সরল, দুর্জনদের জন্য তেমনি হোঁচট পাথরে পূর্ণ।
25 মঙ্গলদানগুলি আদি থেকে মঙ্গলকর মানুষদের জন্য সৃষ্ট হয়েছে, একই প্রকারে অমঙ্গল সব কিছু পাপীদের জন্য সৃষ্ট হয়েছে।
26 মানুষের জীবনের জন্য প্রধান প্রয়োজন এই এই জল, আগুন, লোহা, লবণ, গমের ময়দা, দুধ, মধু, আঙুরফলের রস, তেল ও বস্ত্র।
27 এই সমস্ত কিছু ভক্তপ্রাণদের জন্য মঙ্গলকর, কিন্তু পাপীদের জন্য তা অমঙ্গলকর হয়।
28 এমন কয়েকটা বাতাস আছে, যা শান্তির জন্য সৃষ্ট হয়েছে, তাঁর রোষে তিনি সেগুলিকে আঘাত হিসাবে ব্যবহার করেন ; পরিণামের দিনে সেগুলি তাদের হিংসাত্মক শক্তি ঝেড়ে দেবে, তাতে তাদের স্রষ্টার রোষ প্রশমিত করবে।
29 আগুন, শিলাবৃষ্টি, দুর্ভিক্ষ ও মৃত্যু, এই সমস্ত সৃষ্ট হয়েছে শান্তির উদ্দেশ্যে ;
30 হিংস্র পশুর দাঁত, বিছে, চন্দ্রবোড়া, ও প্রতিশোধকারী খড়্গা ভক্তিহীনদের বিনাশের উদ্দেশ্যে :
31 আদেশ পালন করতে করতে এই সমস্ত উল্লাস করে, সমস্ত প্রয়োজনের জন্য তারা পৃথিবীতে তৈরী ; উপযুক্ত সময়ে তাঁর বাণী ব্যর্থ করবে না।
32 এজন্য আমি আদি থেকে দৃঢ়সঙ্কল্পবদ্ধ ছিলাম, এজন্য চিন্তা-ভাবনা করেছি, এজন্য বিষয়টা লিপিবদ্ধ করেছি ;
33 “প্রভুর সকল কর্ম মঙ্গলময় ; উপযুক্ত সময়ে তিনি প্রয়োজনমত সবকিছু যুগিয়ে দেবেন।
34 তুমি বলবে না : “এটা সেটার চেয়ে মন্দ,” কেননা উপযুক্ত সময়ে সমস্ত কিছু নিজ নিজ যোগ্যতা প্রকাশ করবে।
35 তাই এখন তোমরা সমস্ত হৃদয় ও কণ্ঠ দিয়ে বন্দনাগান কর, এবং প্রভুর নাম ধন্য বল।'