1 প্রভু তাঁর তৈলাভিষিক্তজন সাইরাস সম্বন্ধে একথা বলেন, আমি তার ডান হাত শক্ত করে ধরে আছি, যেন তার সামনে দেশগুলিকে বশীভূত করি, রাজাদের কোমরের রাজবন্ধনী খুলে ফেলি, তার সামনে সমস্ত দ্বারের অর্গল খুলে দিই, যাতে আর কোন নগরদ্বার বন্ধ না থাকে।
2 আমি তোমার আগে আগে রণ-অভিযানে চলব, অসমতল জায়গা সমতল করব, ব্রঞ্জের অর্গল ভেঙে ফেলব, লোহার ডাণ্ডা ছিন্ন করব।
3 আমি তোমার হাতে গুপ্ত ধন, ও গোপন স্থানে লুকায়িত ঐশ্বর্য তুলে দেব, যেন তুমি জানতে পার, ইস্রায়েলের পরমেশ্বর প্রভু আমিই তোমাকে তোমার নাম ধরে ডাকি।
4 আমার দাস থাকোবের খাতিরে, আমার মনোনীতজন ইস্রায়েলের খাতিরেই আমি তোমার নাম ধরে তোমাকে ডেকেছি; তুমি আমাকে না জানা সত্ত্বেও আমি তোমাকে একটা উপাধি দিয়েছি।
5 আমিই প্রভূ, আর কেউ নয় : আমি ছাড়া অন্য ঈশ্বর নেই। তুমি আমাকে না জানা সত্ত্বেও আমি তোমাকে বলবান করব,
6 যেন পুব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত সকলে জানতে পারে যে, আমি ব্যতীত অন্য কেউ নেই। আমিই প্রভু, আর কেউ নয়।
7 আমি আলো গড়ে তুলি, অন্ধকার সৃষ্টি করি, আমি সমৃদ্ধি ঘটাই, অমঙ্গল সৃষ্টি করি ; আমি প্রভু এই সমস্ত কিছু সাধন করি।
8 হে আকাশমণ্ডল, ঊর্ধ্ব থেকে শিশিরপাত কর মেঘমালা ধর্মময়তা বর্ষণ করুক। উন্মোচিত হোক মর্তের মুখ, অঙ্কুরিত হোক পরিত্রাণ, আর সেইসঙ্গে ধর্মময়তা ফুটে উঠুক। আমি প্রভু এই সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছি।'
9 ধিক তাকে, যে তার আপন নির্মাতার সঙ্গে তর্ক করে ; সে তো মাটির পাত্রগুলির মধ্যে একটা পাত্রমাত্র। মাটি কি কুমোরকে বলবে, ‘তুমি কী করছ?’ কিংবা, 'তোমার এই নির্মিত বস্তুর হাত নেই :
10 ধিক্ তাকে, যে তার আপন পিতাকে বলে, 'কিসের জন্ম দিচ্ছ অথবা একটা স্ত্রীলোককে বলে, 'কী প্রসব করছ?'
11 সেই প্রভু, যিনি ইস্রায়েলের পবিত্রজন ও তার নির্মাতা, তিনি একথা বলছেন : “আমার সন্তানদের বিষয়ে যা করা উচিত, তোমরা কি তা আমার কাছ থেকে দাবি করছ? আমার নিজের হাতের কাজ সম্বন্ধে আমাকে আজ্ঞা দিচ্ছ?
12 আমিই তো পৃথিবী নির্মাণ করেছি। ও তার উপরে মানুষকে সৃষ্টি করেছি ; আমিই নিজের হাতে আকাশমণ্ডল বিস্তৃত করেছি "ও আকাশের সমস্ত বাহিনীকে আজ্ঞা দিয়েছি!
13 আমিই এই মানুষকে জাগিয়ে তুলেছি ধর্মময়তার উদ্দেশ্যে, আমি তার সকল পথ সরল করব। সে আমার নগরী পুনর্নির্মাণ করবে, আমার নির্বাসিতদের ফিরিয়ে দেবে, বিনামূল্যে, বিনা পুরস্কারেই তাদের ফিরিয়ে দেবে ; একথা বলছেন সেনাবাহিনীর প্রভু।
14 প্রভু একথা বলছেন : ‘মিশরের উৎপন্ন ঐশ্বর্য, ইথিওপিয়ার যত বাণিজ্য, ও শেবার সেই লম্বা লম্বা মানুষ তোমার হাতে চলে আসবে, তারা তোমারই হবে, শৃঙ্খলিত অবস্থায় তোমার পিছু পিছু হেঁটে চলবে, তোমার কাছে প্রণিপাত করে মিনতির কণ্ঠে বলবে : কেবল তোমারই সঙ্গে ঈশ্বর আছেন; তিনি ছাড়া আর কেউ নয় ; অন্য কোন ঈশ্বর নেই।'
15 সত্যি তুমি এমন ঈশ্বর যিনি লুকিয়ে থাকেন, ওগো ইস্রায়েলের পরমেশ্বর, পরিত্রাতা;
16 লজ্জিত অপমানিত হবে তারা সবাই, তারাই অপমানিত হয়ে চলে যাবে, দেবমূর্তি খোদাই করে যারা।
17 ইস্রায়েল প্রভু দ্বারা হবে চিরপরিত্রাণে পরিত্রাণকৃত। তোমরা আর কখনও লজ্জিত অপমানিত হবে না।
18 কারণ একথা বলছেন সেই প্রভু, যিনি আকাশমণ্ডল সৃষ্টি করলেন; তিনিই সেই পরমেশ্বর, যিনি পৃথিবী সংগঠন ক'রে নির্মাণ করলেন, করলেন দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত, যিনি তা ঘোর অঞ্চল হবার জন্য করেননি সৃষ্টি, বাসস্থানই হবার জন্য বরং তা সংগঠন করলেন : “আমিই প্রভু, আর কেউ নয় !
19 নিভূতে, পৃথিবীর কোন অন্ধকার স্থান থেকে আমি কথা বলিনি, যাকোব-বংশকে বলিনি : ঘোর অঞ্চলেই আমার অন্বেষণ কর। আমি তো প্রভু ! সত্যকথা বলি, ন্যায়কথা ঘোষণা করি।
20 একত্র হও, এসো, এগিয়ে এসো সবাই মিলে, তোমরা যারা ভিনজাতির দেশ থেকে রেহাই পেলে। তাদের তো কিছুই জ্ঞান নেই, কাঠের প্রতিমা বয়ে বেড়ায় যারা, যারা এমন দেবতার কাছে প্রার্থনা করে, যার ত্রাণ করার ক্ষমতা নেই।
21 খুলে বল, তোমাদের যুক্তি উপস্থিত কর, তারা একসঙ্গে মন্ত্রণাও করুক; প্রথম থেকে কে শুনিয়েছেন এসব কিছু? সেকাল থেকে এসব কিছুর সংবাদ দিলেন কে? আমি, সেই প্রভু, তাই না? আমি ব্যতীত অন্য ঈশ্বর নেই, আমি ছাড়া অন্য ধর্মময় ঈশ্বর ও ত্রাণকর্তা নেই।
22 আমার দিকে ফিরে তাকাও, তবেই ত্রাণ পাবে তোমরা, হে পৃথিবীর সকল প্রান্ত, কারণ আমিই ঈশ্বর, আর কেউ নয়!
23 নিজের দিব্যি দিয়ে করেছি শপথ, আমার মুখ থেকে যে সত্য বাণী বের হয় তার অন্যথা হবে না- প্রতিটি জানু আমার সম্মুখে আনত হবে, প্রতিটি জিহ্বা আমার দিব্যি দিয়ে শপথ করবে।'
24 তারা তখন বলবে : 'শুধু প্রস্তুতেই রয়েছে ধর্মময়তা, রয়েছে শক্তি!” যারা তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ ছিল, তারা লজ্জিত হয়ে তাঁর কাছে আসবে।
25 ইস্রায়েলের সকল বংশধর প্রভুতে পারে ধর্মময়তা, পাবে গৌরব।