Index

ইসাইয়া - Chapter 33

1 ধিক্ তোমাকে, তুমি যে কখনও ধ্বংসিত না হয়ে ধ্বংস করে বেড়াচ্ছ, তুমি যে কখনও বিশ্বাসঘাতকতার পাত্র না হয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করছে ! ধ্বংস করতে ক্ষান্ত হলে তুমি নিজে ধ্বংসিত হবে, বিশ্বাসঘাতকতা শেষ করলে তোমার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।
2 হে প্রভু, আমাদের প্রতি সদয় হও, আমরা তোমারই প্রতীক্ষায় আছি : প্রতি প্রভাতে হও তুমি আমাদের বাহু যেন, সঙ্কটকালে আমাদের পরিত্রাণ।
3 কোলাহলের শব্দে পালিয়ে যায় জাতিসকল তুমি উঠে দাঁড়ালেই দেশগুলো বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
4 তোমাদের লুটের মাল জমে যেমনটি শুঁয়াপোকা এসে জমে, তার উপর লোকে ছুটে আসে পঙ্গপালের ছুটাছুটি যেন।
5 প্রভু উচ্চতম, তিনি ঊর্ধ্বলোকেই তো করেন বসবাস, ন্যায় ও ধর্মময়তায় সিয়োনকে পরিপূর্ণ করেন।
6 তোমার আয়ুষ্কালে তিনি হবেন সুস্থিরতা ; প্রজ্ঞা ও জ্ঞান-ই ত্রাণকারী ধনভাণ্ডার : প্রভুভয় তার ধনসম্পদ।
7 দেখ, তাদের বীরপুরুষেরা রাস্তা-ঘাটে চিৎকার করছে, শান্তির দূতেরা তীব্রস্বরে ক্রন্দন করছে।
8 যত পথ জনশূন্য, রাস্তা-ঘাটে আর কোন পথিক নেই, যত চুক্তি-সন্ধি ভগ্ন, সাক্ষীরা উপেক্ষিত, কারও প্রতি সম্মান নেই।
9 বিলাপ করতে করতে শুষ্ক হচ্ছে দেশ, লজ্জায় ম্লান হচ্ছে লেবানন, শারোন হয়ে গেছে প্রান্তরেরই মত, রাশান ও কার্যেলের যত গাছ পাতা ঝেড়ে ফেলে।
10 এখন উঠব,' বলছেন প্রভু, 'এখন উন্নীত হব, এখন উত্তোলিত হব।
11 তোমরা ভুসি গর্ভধারণ করেছ, তোমরা খড় প্রসব করবে, আমার ফুৎকার আগুনের মত তোমাদের গ্রাস করবে।
12 জাতিসকল চুন দিয়েই যেন পুড়িয়ে দেওয়া হবে, ফালি করা কাঁটাকুচির মত তাদের আগুনে দগ্ধ করা হবে।
13 দূরে আছ যারা, শোন কী করেছি আমি, কাছে আছ যারা, জেনে নাও আমার প্রতাপ।'
14 সিয়োনে যত পাপী সন্ত্রাসিত, যত ভক্তিহীনকে ধরেছে শিহরণ— “আমাদের মধ্যে কে বাস করতে পারে সর্বগ্রাসী আগুনের সঙ্গে? চিরকালীন দাহনের সঙ্গে আমাদের মধ্যে কেই বাস করতে পারে?'
15 যে ধার্মিকভাবে চলে ও সত্য কথা বলে, অত্যাচারের অর্থলাভ যে অগ্রাহ্য করে, ঘুষ-স্পর্শ থেকে যে হাত দুরে রাখে : রক্তপাতের কথা শোনা থেকে যে কান বিরত রাখে, অনিষ্ট দর্শন থেকে যে বুজিয়ে রাখে চোখ ;
16 তেমন মানুষই উঁচুস্থানে করবে বসবাস, গিরি দুর্গ হবে তার আশ্রয়স্থল, তাকে খাদ্য দেওয়া হবে, নিশ্চিত হবে তার জল।
17 তোমার চোখ রাজার প্রতি, তাঁর সৌন্দর্যে, নিবন্ধ থাকবে, সীমাহীন এক দেশ দেখতে পাবে।
18 তোমার হৃদয় বিগত বিভীষিকার কথা ভাববে : যে টাকা-কড়ি তুলাদণ্ডে দিচ্ছিল, সে এখন কোথায়? যে দুর্গমিনার পরিদর্শন করছিল, সে এখন কোথায় ? “যে হিসাব করছিল, সে এখন কোথায় ?
19 তুমি সেই ধূর্ত জাতিকে আর দেখতে পাবে না, সেই জাতিকে, যার কথন তোমার কাছে অচেনা অজানা, যার ভাষা অস্পষ্ট অর্থহীন।
20 তোমার পর্বপুরী সিয়োনের দিকেই চোখ নিবন্ধ রাখ ! তোমার চোখ যেরুসালেম দেখতে পাবে, তা এমন নগরী, যা শান্ত আবাস, এমন তাঁবু, যা কখনও সরানো হবে না, যার গোঁজ কখনও উপড়ে ফেলা হবে না, যার দড়িগুলোর একটাও ছিঁড়বে না।
21 কারণ সেইখানে রয়েছেন সেই প্রতাপময়, আমাদের সপক্ষ সেই প্রভু ! তা হবে নদনদী ও বিস্তীর্ণ স্রোতমালার স্থান : সেখানে দাঁড় বেয়ে কোন পোত যাতায়াত করবে না, প্রতাপময় কোন জাহাজও তা পার হয়ে যাবে না।
22 কারণ স্বয়ং প্রভু আমাদের বিচারকর্তা, স্বয়ং প্রভু আমাদের বিধানকর্তা, স্বয়ং প্রভু আমাদের রাজা : তিনিই আমাদের পরিত্রাণ করবেন।
23 তোমার সমস্ত দড়ি ঢিলা হয়ে পড়েছে, মাস্তুলের গোড়া শক্ত করে রাখতে পারছে না, পাল খাটিয়ে দিতে পারছে না। তখন ভাগ করার মত এমন বিরাট লুটের মাল থাকবে যে, খোঁড়ারাও লুট করতে থাকবে :
24 নগরবাসীরা কেউই বলবে না : 'আমি অসুস্থ' : সেখানকার নিবাসী জনগণ অপরাধের ক্ষমা পাবে।