1 এই যে আমার সেই দাস, আমি নিজেই যাঁর নির্ভর : তিনি আমার মনোনীতজন, আমার প্রাণ তাঁতেই প্রসন্ন। আমি তাঁর উপর আমার আত্মা প্রেরণ করেছি : সকল দেশের কাছে তিনি নিয়ে যাবেন সুবিচার।
2 তিনি চিৎকার করবেন না, জোর গলায় কথা বলবেন না, রাস্তা-ঘাটে নিজ কণ্ঠস্বর শোনাবেন না।
3 তিনি থেঁতলানো নলগাছ ছিঁড়ে ফেলবেন না, টিমটিমে সলতেও নিভিয়ে দেবেন না ; তিনি বিশ্বস্ততার সঙ্গেই ন্যায় ঘোষণা করবেন।
4 তিনি ক্ষান্ত হবেন না, ভেঙে পড়বেন না, যতদিন না পৃথিবীতে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেন। দ্বীপপুঞ্জ তাঁর বিধিবিধানের অপেক্ষায় থাকবে।
5 প্রভু ঈশ্বর, যিনি আকাশমণ্ডল সৃষ্টি করে তা বিছিয়ে দিয়েছেন, যিনি মতকে ও তা থেকে যা কিছু উৎপন্ন পিটিয়ে পিটিয়ে তা পেতে দিয়েছেন, যিনি মর্তবাসীদের শ্বাস দান করেন, ও মর্তের উপরে যা কিছু হাঁটে, তাকে আত্মা দান করেন তিনি একথা বলছেন :
6 আমি প্রভু ধর্মময়তার উদ্দেশ্যে তোমাকে আহ্বান করেছি, আমি তোমার হাত শক্ত করে ধরেছি; তোমাকে গড়েছি, জনগণের জন্য সন্ধি ও দেশগুলির জন্য আলোরূপেই তোমাকে নিযুক্ত করেছি।
7 অন্ধদের চোখ খুলে দেবার জন্য, এবং কারাবাস থেকে বন্দিদের, ও যারা অন্ধকারে বাস করে, কারাকুয়ো থেকে তাদের বের করে আনার জন্য।
8 আমি প্রভু, এ-ই আমার নাম ! আমি আমার গৌরব অন্যের হাতে ছেড়ে দেব না, আমার মর্যাদাও দেবমূর্তির হাতে তুলে দেব না।
9 দেখ, প্রথম ঘটানাগুলো সিদ্ধিলাভ করেছে, এবার নতুনগুলির বিষয়ে পূর্বসংবাদ দিই; সেগুলি পুষ্পিত হবার আগেই তার কথা তোমাদের শোনাই।'
10 প্রভুর উদ্দেশে গাও নতুন গান, পৃথিবীর প্রান্তসীমা থেকে ধ্বনিত হোক তাঁর প্রশংসাগান। তাঁর স্তুতিগান করুক সাগর ও তার গভীরে যা কিছু আছে, দ্বীপপুঞ্জ ও তার যত অধিবাসী।
11 মেতে উঠুক প্রান্তর ও তার যত শহর, কেদারের যত বাসস্থান, সেলা-বাসীরা আনন্দধ্বনি তুলুক, পর্বতচূড়া থেকে চিৎকার করুক।
12 তারা প্রভুতে আরোপ করুক গৌরব, দ্বীপগুলিতে প্রচার করুক তাঁর প্রশংসাবাদ।
13 বীরের মত বেরিয়ে আসছেন প্রভু, যোদ্ধার মত নিজ উদ্যোগ করেন উত্তেজিত, জয়ধ্বনি করেন, রণনিনাদ তোলেন, নিজ বীরত্ব দেখান শত্রুদের উপর।
14 বহুদিন ধরে আমি চুপ করে থাকলাম, নীরব থাকলাম, নিজেকে সংযত রাখলাম। হাঁপ ধরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে এখন প্রসবিনী নারীর মত চিৎকার করব।
15 পর্বত-উপপর্বত উচ্ছন্ন করে দেব, তাদের ঘাস শুষ্ক করে ফেলব ; নদনদী দ্বীপপুঞ্জে পরিণত করব, জলাশয় শুকিয়ে দেব।
16 আমি অন্ধ মানুষকে নিয়ে যাব তাদের অজানা পথে, তাদের অজানা রাস্তায় তাদের চালনা করব ; তাদের সামনে অন্ধকার আলোতে পরিণত করব, অসমতল ভূমি করব সমতল। তেমন কিছুই করব, তা করায় অবহেলা করব না!
17 যারা দেবমূর্তিতে ভরসা রাখে, যারা প্রতিমাকে বলে, 'তোমরাই আমাদের দেবতা, তারা সকলে লজ্জিত হয়ে পিছনে হটে যাবে।
18 বধিরসকল, শোন ; অন্ধেরা, দেখবার জন্য চেয়ে দেখ।
19 আমার দাস ছাড়া আর অন্ধ কে? আমার প্রেরিতদূতের মত বধির কে? আমার প্রিয় বন্ধুর মত অন্ধ কে ? প্রভুর দাসের মত বধির কে?
20 তুমি তো অনেক কিছু দেখেছ, কিন্তু মন দাওনি; তোমার কান খোলা, কিন্তু তুমি শোন না।
21 আপন ধর্মময়তার খাতিরে প্রভু বিধানকে মহান ও মহিমময় করতে প্রীত হলেন।
22 অথচ এরা অপহৃত লুণ্ঠিত এক জাতি, সকলে গুহাতে ফাঁদে বাঁধা, সকলে কারারুদ্ধ। এরা অপহৃত ছিল, আর উদ্ধারকর্তা কেউ ছিল না; লুণ্ঠিত ছিল, আর কেউ বলেনি, ‘ফিরিয়ে দাও।'
23 তোমাদের মধ্যে কে এতে কান দেয় ? মনোযোগ দিয়ে কে ভবিষ্যতের জন্য তা শুনে রাখে?
24 কে যাকোবকে লুটেরাদের হাতে তুলে দিয়েছেন? ইস্রায়েলকে অপহারকদের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন? সেই প্রভু কি নয়, যাঁর বিরুদ্ধে আমরা পাপ করেছি? তারা তাঁর পথে চলতে অসম্মত ছিল, তাঁর বিধানের প্রতি অবাধ্য ছিল।
25 এজন্য তিনি তার উপরে তাঁর জ্বলন্ত ক্রোধ ও যুদ্ধের প্রচণ্ডতা বর্ষণ করলেন। ফলে তার চারদিকে ঐশক্রোধের আগুন জ্বলে উঠল, —তা সত্ত্বেও সে বুঝল না ; সেই আগুন তাকে পুড়িয়ে ফেলল, —তা সত্ত্বেও সে মনোযোগ দিল না।