1 সেসময়—প্রভুর উক্তি—যুদার রাজাদের হাড়, তাদের নেতাদের হাড়, যাজকদের হাড়, নবীদের হাড় ও যেরুসালেম-বাসীদের হাড় তাদের কবর থেকে বের করে দেওয়া হবে;
2 আর সেই সকল হাড় ছড়িয়ে দেওয়া হবে সেই সূর্য, চন্দ্র ও সমস্ত আকাশের তারকা বাহিনীর সামনে, যেগুলিকে তারা ভক্তি ও সেবা করল, যেগুলির অনুগামী হল, যেগুলির অভিমত অনুসন্ধান করল ও যেগুলির উদ্দেশে প্রণিপাত করল। সেই হাড়গুলিকে আর জড় করা হবে না, আবার কবরে আর দেওয়া হবে না, কিন্তু পড়ে থাকবে মাটির উপরে সারের মত।
3 তখন এই ধূর্ত বংশের যত লোক বাকি থাকবে, যে সকল জায়গায় আমি তাদের বিক্ষিপ্ত করেছি, সেই সকল জায়গায় তারা জীবনের চেয়ে মৃত্যুই বাঞ্ছনীয় মনে করবে।' সেনাবাহিনীর প্রভুর উক্তি।
4 তুমি তাদের আরও বলবে : 'প্রভু একথা বলছেন : মানুষ পড়লে সে কি আর ওঠে না? বিপথে গেলে মানুষ কি আর ফিরে আসে না?
5 তবে এই জাতি কেন যেরুসালেমে শুধু বিদ্রোহ করে থাকে? তারা ধূর্ততাকে আঁকড়ে ধরে রয়েছে, ফিরে আসতে অস্বীকার করে।
6 আমি মনোযোগ দিয়ে শুনলাম, কিন্তু তারা উচিত কথা বলে না। নিজের শঠতার জন্য অনুতাপ করে কেউ বলে না। হায়, আমি কী করলাম ! যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ছে এমন ঘোড়ার মত তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ কর্মগতিতে ফিরে যায়।
7 আকাশে হাড়গিলেও তার নিজের সময় জানে, এবং ঘুঘু, তালচোঁচ ও বক নিজ নিজ আগমনের কাল পালন করে, কিন্তু আমার জনগণ প্রভুর নিয়ম জানে না।'
8 তোমরা কেমন করে বলতে পার 'আমরা প্রজ্ঞাবান, প্রভুর বিধান আমাদের সঙ্গে আছে?” দেখ, শাস্ত্রীদের সেই মিথ্যা-লেখনী বিধানকে কেমন মিথ্যাই করে ফেলেছে।
9 প্রজ্ঞাবান যত মানুষ লজ্জিত হবে, দিশেহারা হবে, ফাঁদে ধরা পড়বে। দেখ, তারা প্রভুর বাণী অগ্রাহ্য করেছে, তবে তাদের প্রজ্ঞা কী ধরনের?
10 অতএব আমি তাদের স্ত্রীদের অন্য লোকদের দেব, তাদের জমি নতুন মালিকদের দেব, কেননা ছোটজন থেকে বড়জন পর্যন্ত সকলেই লোভী ও কুটিল ; নবী থেকে যাজক পর্যন্ত সকলেই ছলনায় রত।
11 তারা আমার জাতি-কন্যার ক্ষতের যত্ন নেয় বটে, কিন্তু ভাসা ভাসাই সেই যত্ন ; হ্যাঁ, তারা 'শান্তি শান্তি' বলে, কিন্তু শান্তি নেই।
12 তারা তেমন জঘন্য কাজ করে কি লজ্জাবোধ করে? না, আদৌ লজ্জাবোধ করে না, লজ্জায় লাল হতেও জানে না। এজন্য পতিতদের মধ্যে তাদেরও পতন হবে, শাস্তির ক্ষণে তাদের লুটিয়ে দেওয়া হবে। প্রভুর উক্তি।
13 আমি তাদের নিঃশেষেই নিশ্চিহ্ন করব—প্রভুর উক্তি : আঙুরলতায় আর থাকবে না আঙুরফল, ডুমুরগাছেও আর থাকবে না ডুমুরফল, কেবল জীর্ণ পাতাই থাকবে ; আমি এমন এক জাতিকে যুগিয়েছি, যারা তাদের পদদলিত করবে!
14 আমরা কেন বসে থাকি? জড় হও; এসো, আমরা সুরক্ষিত নগরগুলিতে প্রবেশ করে সেখানে নিস্তব্ধ হয়ে থাকি, কারণ আমাদের পরমেশ্বর প্রভুই আমাদের স্তব্ধ করে দিচ্ছেন। তিনি তো বিষাক্ত জল আমাদের পান করাচ্ছেন, আমরা যে প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি!
15 আমরা শান্তির জন্য প্রত্যাশা করছিলাম, কিন্তু মঙ্গল হল না; নিরাময়-ক্ষণের প্রত্যাশায় ছিলাম, কিন্তু দেখ, সন্ত্রাসই উপস্থিত।
16 দান থেকে তার ঘোড়াদের হাঁপানি শোনা যাচ্ছে, তার দ্রুতগামী ঘোড়াদের ডাকের শব্দে সমস্ত দেশ কাঁপছে তারা দেশ ও তার মধ্যে যা কিছু আছে, শহর ও তার অধিবাসীদের গ্রাস করতে আসছে।
17 দেখ, আমি তোমাদের মাঝে পাঠাচ্ছি এমন বিষাক্ত সাপের দল, যেগুলো কোন জাদু মানবে না ; সেগুলো তোমাদের কামড়াবে। প্রভুর উক্তি।
18 হায়, আমার দুঃখের প্রতিকার নেই! আমার হৃদয় মূর্ছা যায়!
19 এই যে, দূরদূরান্তর এক বিস্তীর্ণ দেশ থেকে আমার জাতি-কন্যার চিৎকার ধ্বনিত হচ্ছে; প্রভু কি সিয়োনে আর নেই ? তার রাজা কি তার মধ্যে আর নেই? তারা কেন তাদের দেবমূর্তি দ্বারা, ও বিজাতীয় অসার বস্তুগুলো দ্বারা আমাকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে?
20 শস্য কাটার সময় গেল, ফলসংগ্রহের কাল শেষ হল, কিন্তু আমরা পরিত্রাণ পাইনি।
21 আমার জাতি-কন্যার ক্ষতের জন্য আমি নিজেই বিক্ষত, আমি সম্পূর্ণ দিশেহারা, সন্ত্রাসগ্রস্ত।
22 গিলেয়াদে কি আর মলম নেই? সেখানে আর কোন চিকিৎসক নেই? আমার জাতি-কন্যার ক্ষত কেন নিরাময় হয় না?
23 হায়, কে আমার মাথা জলের উৎস করবে? কে আমার চোখ অশ্রুজলের ঝরনা করবে, যেন আমার জাতি-কন্যার নিহতদের জন্য আমি দিনরাত অঝোরে চোখের জল ফেলতে পারি?