1 বাবিলন-রাজ নেবুকাদেজার, তাঁর সমস্ত সৈন্য ও তাঁর কর্তৃত্বাধীন পৃথিবীর সমস্ত রাজ্য, এবং সকল জাতি যে সময় যেরুসালেম ও তার সমস্ত শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল, সেসময় প্রভুর কাছ থেকে এই বাণী যেরেমিয়ার কাছে এসে উপস্থিত হল :
2 “প্রভু, ইস্রায়েলের পরমেশ্বর, একথা বলছেন : যাও, যুদারাজ সেদেকিয়ার সঙ্গে আলাপ করে তাকে বল : প্রভু একথা বলছেন : দেখ, আমি বাবিলন-রাজের হাতে এই নগরী তুলে দেব, আর সে তা আগুনে পুড়িয়ে দেবে।
3 তুমিও তার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাবে না, ধরা পড়বেই, তোমাকে তার হাতে তুলে দেওয়া হবে। তুমি নিজের চোখেই তাকে দেখবে, ও সে মুখোমুখি হয়ে তোমার সঙ্গে কথা বলবে, পরে তোমাকে বাবিলনে যেতে হবে।
4 তবু, হে ঘুদারাজ সেদেকিয়া, প্রভুর বাণী শোন! প্রভু তোমার বিষয়ে একথা বলেন: তুমি খড়োর আঘাতে মরবে না!
5 তুমি শান্তিতেই মরবে, এবং তোমার পিতৃপুরুষদের জন্য, তোমার আগেকার রাজাদের জন্য যেমন সুগন্ধি মসলাদি পোড়ানো হয়েছিল, তেমনি তোমার জন্যও সুগন্ধি মসলাদি পোড়ানো হবে, এবং “হায় প্রভু” বলে তোমার জন্য বিলাপ করা হবে। আমিই একথা বললাম।' প্রভুর উক্তি।
6 যেরেমিয়া নবী যেরুসালেমে যুদা রাজ সেদেকিয়াকে ওই সমস্ত কথা জানালেন ;
7 সেসময় বাবিলন-রাজের সৈন্যদল যেরুসালেমের বিরুদ্ধে ও যুদার বাকি সকল শহরের বিরুদ্ধে, লাখিশের বিরুদ্ধে ও আজেকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল; বাস্তবিক যুদার শহরগুলির মধ্যে প্রাচীরে ঘেরা কেবল সেই লাখিশ ও আজেকাই বাকি রয়েছিল।
8 সেদেকিয়া রাজা যেরুসালেমের গোটা জনগণের সঙ্গে ক্রীতদাসদের কাছে মুক্তি ঘোষণা করার জন্য সন্ধি স্থির করার পর, প্রভুর কাছ থেকে এই বাণী যেরেমিয়ার কাছে এসে উপস্থিত হল :
9 এ স্থির করা হয়েছিল যে, প্রত্যেকজন নিজ নিজ হিব্রু ক্রীতদাসকে কি হিব্রু ক্রীতদাসীকে মুক্ত করে ছেড়ে দেবে, কেউ তাদের অর্থাৎ নিজ ইহুদী ভাইকে ক্রীতদাস হতে বাধ্য করবে না।
10 আরও, সন্ধিতে আবদ্ধ সকল সমাজনেতা ও গোটা জনপণ এতে সম্মতি জানিয়েছিল যে, প্রত্যেকজন নিজ নিজ ক্রীতদাস-দাসীকে মুক্ত করে ছেড়ে দেবে ও তাদের ক্রীতদাস হতে বাধ্য করবে না; তারা সম্মতি জানিয়ে তাদের মুক্ত করে ছেড়ে দিয়েছিল।
11 কিন্তু পরে তারা মন ফিরিয়ে বসল, ফলে, যাদের মুক্ত করে ছেড়ে দিয়েছিল, সেই ক্রীতদাস-দাসীদের আবার আনিয়ে নিজেদের ক্রীতদাস-দাসী অবস্থায় বশীভূত করল।
12 তখন প্রভুর কাছ থেকে এই বাণী যেরেমিয়ার কাছে এসে উপস্থিত হল :
13 ‘প্রভু, ইস্রায়েলের পরমেশ্বর, একথা বলছেন : মিশর দেশ থেকে, দাসত্ব-অবস্থা থেকে তোমাদের পিতৃপুরুষদের বের করে আনবার দিনে আমি তাদের সঙ্গে এই বলে সন্ধি করেছিলাম:
14 “তোমার যে হিব্রু ভাই তোমার কাছে নিজেকে বিক্রি করেছে, সপ্তম বছর শেষে তোমরা প্রত্যেকে তাকে মুক্ত করে দেবে; সে ছয় বছর ধরে তোমার সেবা করে যাবে, পরে তুমি তাকে মুক্ত অবস্থায়ই তোমার কাছ থেকে বিদায় দেবে।” কিন্তু তোমাদের পিতৃপুরুষেরা আমাকে শুনতে চাইল না, আমার কথায় কান দিল না।
15 তোমরা কিছু দিন আগে মন ফিরিয়েছিলে, আমার দৃষ্টিতে যা ন্যায়, তেমনই কাজ করেছিলে, অর্থাৎ প্রত্যেকজন নিজ নিজ ভাইয়ের মুক্তি ঘোষণা করেছিলে, এবং যে গৃহ আমার আপন নাম বহন করে, তার মধ্যে আমার সামনে সন্ধি স্থির করেছিলে।
16 কিন্তু এখন তোমরা মন ফিরিয়ে বসেছ, আমার নাম অপবিত্র করেছ; যাদের মুক্ত করে তাদের মনের ইচ্ছা অনুসারে ছেড়ে দিয়েছিলে, তাদের তোমরা প্রত্যেকে আবার নিজ নিজ ক্রীতদাস-দাসী করেছ এবং জোর করে তাদের তোমাদের ক্রীতদাস-দাসী হতে বশীভূত করেছ।
17 এজন্য প্রভু একথা বলছেন : নিজ নিজ ভাই ও প্রতিবেশীর মুক্তি ঘোষণা করার ব্যাপারে তোমরা আমার প্রতি বাধ্য হওনি। সুতরাং দেখ—প্রভুর উক্তি তোমাদের মুক্তি আমি খড়্গা, মহামারী ও দুর্ভিক্ষেরই হাতে ন্যস্ত করছি; পৃথিবীর সকল রাজ্যের কাছে তোমাদের আশঙ্কার বস্তু করব।
18 আর যে লোকেরা আমার সন্ধি ভঙ্গ করেছে, যারা আমার সামনে সন্ধি করে তার কথা রক্ষা করেনি, আমি তাদের সেই বাছুরের মত করব, তার মধ্য দিয়ে যাবার জন্য যা তারা দু'টুকরো করে।
19 যুদার নেতারা, যেরুসালেমের নেতারা, বন্ধুকীরা, যাজকেরা ও দেশের গোটা জনগণ, যারা বাছুরের দু'টুকরোর মধ্য দিয়ে পেরিয়ে গেছে,
20 তাদের আমি তাদের শত্রুদের হাতে ও তাদের প্রাণনাশে সচেষ্ট লোকদের হাতে তুলে দেব; তখন তাদের মৃতদেহ আকাশের পাখিদের ও বন্যজন্তুদের খাদ্য হবে।
21 আর যুদা রাজ সেদেকিয়াকে ও তার অধিনায়কদের আমি তাদের শত্রুদের ও তাদের প্রাণনাশে সচেষ্ট লোকদের হাতে, হ্যাঁ, বাবিলন-রাজের যে সৈন্যদল ইতিমধ্যে তোমাদের কাছ থেকে চলে গেছে, তাদেরই হাতে তুলে দেব।
22 দেখ, আমি আজ্ঞা দেব—প্রভুর উক্তি—আমি তাদের এই নগরীতে ফিরিয়ে আনব; তারা এই নগরী অবরোধ করে হস্তগত করবে ও আগুনে পুড়িয়ে দেবে ; আর আমি যুদার সকল শহর উৎসন্ন ও নিবাসী-বিহীন করব।