1 আম্মোনীয়দের সম্বন্ধে। প্রভু একথা বলছেন : “ইস্রায়েলের কি পুত্রসন্তান নেই ? তার কি উত্তরাধিকারী কেউ নেই? তবে মিক্ষম কেন পাদ উত্তরাধিকাররূপে পেল, ও তার প্রজারা ওর শহরগুলোতে বসতি করল?
2 এজন্য দেখ, এমন দিনগুলি আসছে —প্রভুর উক্তি— যখন আমি আম্মোনীয়দের রাব্বায় শোনাব যুদ্ধের সিংহনাদ : তখন তা ধ্বংসস্তূপের ঢিপি হবে, তার উপনগরগুলো আগুনে দগ্ধ হবে; যারা একসময় ইস্রায়েলকে অধিকারচ্যুত করেছিল, ইস্রায়েল তাদের অধিকারচ্যুত করবে ; -বলছেন প্রভু।
3 হে হেসবোন, চিৎকার কর, কেননা আই এখন ধ্বংসিতা ; হে রাব্বা-কন্যারা, হাহাকার কর, চটের কাপড় পর, বিলাপগান ধর, প্রাচীরের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি কর, কেননা মিল্কম নির্বাসন দেশে চলে যাবে, আর তার সঙ্গে যাবে তার যাজক ও নেতা সকল।
4 হে বিদ্রোহিণী কন্যা, কেন তোমার উপত্যকাগুলি নিয়ে গর্ব কর? তুমি তো তোমার নিজের ধনে ভরসা রেখে বলে ওঠ : কেইবা আমাকে আক্রমণ করবে?
5 দেখ, আমি তোমার চারদিক থেকে তোমার উপরে সন্ত্রাস নিয়ে আসব, — সেনাবাহিনীর পরমেশ্বর প্রভুর উক্তি। তোমরা প্রত্যেকে যে যার পথে বিতাড়িত হবে, কেউই পলাতকদের সংগ্রহ করবে না।
6 কিন্তু পরে আমি আম্মোনীয়দের দশা ফেরাব।' —প্রভুর উক্তি।
7 এদোম সম্বন্ধে। সেনাবাহিনীর প্রভু একথা বলছেন : “তেমানে কি আর প্রজ্ঞা নেই? প্রজ্ঞাবানদের সুমন্ত্রণা কি নিশ্চিহ্ন হয়েছে? তাদের প্রজ্ঞা কি মিলিয়ে গেছে?
8 হে দেদান-নিবাসী সকল, পালিয়ে যাও, রওনা দাও, গুপ্ত স্থানে লুকাও, কেননা আমি এসৌয়ের উপরে নামিয়ে আনছি তার সর্বনাশ, আনছি তার প্রতিফলের ক্ষণ।
9 আঙুরফল সংগ্রহ করে যারা, যদি তারা তোমার কাছে আসে, কিছুই ফল বাকি রাখবে না : রাতের বেলায় যদি চোর আসে, তাদের ইচ্ছামতই চুরি করবে।
10 বস্তুত আমি এসৌকে বস্ত্রহীন করব, তার যত গুপ্ত স্থান অনাবৃত করব, আর কোথাও লুকোতে পারবে না। তার বংশ, তার ভাই সকল ও প্রতিবেশী সকলে বিলুপ্ত ; সে আর নেই !
11 তোমার এতিমদের ত্যাগ কর, আমিই বাঁচাব তাদের, তোমার বিধবারা আমাতেই ভরসা রাখুক!
12 কেননা প্রভু একথা বলছেন: দেখ, পানপাত্রে পান করতে যারা বাধ্য ছিল না, এখন তাদের তাতে পান করতে হবে; তাই তুমি কি মনে কর, শান্তি এড়াবে? না, তুমি শান্তি এড়াবে না, তোমাকে পান করতেই হবে,
13 কেননা আমি আমার নিজের দিব্যি দিয়ে শপথ করেছি যে—প্রভুর উক্তি—বসা আতঙ্ক, দুর্নাম, উৎসন্নতা ও অভিশাপের পাত্র হবে, এবং তার সমস্ত শহর চিরন্তন ধ্বংসস্তূপ হবে।
14 আমি প্রভুর কাছ থেকে এই সংবাদ পেয়েছি, দেশগুলোর মাঝে এক দূত প্রেরিত হয়েছে : জড় হও, তার বিরুদ্ধে রণ-অভিযান চালাও! যুদ্ধের জন্য তৈরী হও।
15 কেননা দেখ, আমি দেশগুলোর মধ্যে তোমাকে ছোট্ট করব, মানুষদের মধ্যে অবজ্ঞাতই করব।
16 ওহে তুমি, শৈলরাশির গর্তে যার বাসস্থান, ওহে তুমি, পর্বতচূড়া যে আঁকড়ে ধরে আছ, তোমার ভয়ঙ্করতা তোমাকে ভুলিয়েছে, তোমার হৃদয়ের দম্ভ তোমাকে প্রবঞ্চিত করেছে; যদিও তুমি ঈগলের মত উচ্চস্থানেই বাসা বাঁধ, তবু আমি সেখান থেকে তোমাকে নামাব —প্রভুর উক্তি।
17 এদোম আতঙ্কের বস্তু হবে; যে কেউ তার কাছ দিয়ে যাবে, তেমন কঠিন দশা দেখে সে ভয়ে চিৎকার করবে।
18 সদোম, গমোরা ও নিকটবর্তী শহরগুলির উৎপাটনের দিনে যেমন ঘটেছিল — বলছেন প্রভু—তেমনি এদোমেও আর কোন মানুষ বাস করবে না, কোন আদমসন্তান সেখানে আর বসতি করবে না।
19 দেখ, সিংহ যেমন যদনের বন থেকে উঠে সেই চিরন্তন চারণভূমির দিকে আসে, তেমনি একনিমেষেই আমি এদোম থেকে তাদের তাড়িয়ে দেব ও তাদের উপরে আমার মনোনীতজনকে নিযুক্ত করব; কেননা আমার সমকক্ষ কে? আমার বিপক্ষ কে? আমার সামনে দাঁড়াবে এমন পালক কোথায়?
20 তাই তোমরা প্রভুর সঙ্কল্প শোন, যা তিনি এদোমের বিরুদ্ধে করেছেন; তাঁর সেই সিদ্ধান্ত শোন, যা তিনি তেমান-নিবাসীদের বিরুদ্ধে নিয়েছেন। নিশ্চয়ই পালের ক্ষুদ্রতমদেরও টেনে নিয়ে যাওয়া হবে, নিশ্চয়ই তাদের চোখের সামনে তাদের চারণভূমি উৎসন্ন করা হবে।
21 তাদের পতনের শব্দে পৃথিবী কাঁপছে। লোহিত সাগর পর্যন্ত হাহাকারের সুর ধ্বনিত হচ্ছে।
22 দেখ, সে ঈগলের মত উড়ে আসবে, সে বস্ত্রার উপরে পাখা মেলে দেবে। সেইদিন এদোমের বীরপুরুষদের হৃদয় হবে প্রসবযন্ত্রণায় আক্রান্ত নারীর হৃদয়ের মত।'
23 দামাস্কাস সম্বন্ধে। হামাং ও আপাদ লজ্জায় অভিভূত, কেননা তারা অশুভ সংবাদ পেল ; তারা আলোড়িত ও অস্থির, তারা সাগরের মত, যা শান্ত করা যায় না।
24 দামাস্কাস বলহীন হয়েছে, পালাবার জন্য ফিরছে ; হঠাৎ সে শিহরে ওঠে। যন্ত্রণা ও ব্যথা তাকে ধরেছে, সে প্রসবকালে স্ত্রীলোকেরই মত।
25 প্রশংসার পাত্র এই নগরী, আমার আনন্দের পুরী, কেন পরিত্যক্তা হল?
26 তাই সেইদিন তার চত্বরে চত্বরে তার যুবকদের পতন হবে, তার সকল যোদ্ধাকেও সেইদিন স্তব্ধ করা হবে। — সেনাবাহিনীর প্রভুর উক্তি।
27 আমি দামাস্কাসের প্রাচীরে আগুন লাগাব, তা বেন-হাদাদের প্রাসাদগুলো গ্রাস করবে।
28 বাবিলন-রাজ নেবুকাদ্রেজার যা যা পরাজিত করেছিলেন, সেই কেদার ও হাৎসোর রাজ্যগুলি সম্বন্ধে। প্রভু একথা বলছেন : "ওঠ, কেদারের বিরুদ্ধে রণ-অভিযান চালাও, পুবদেশের লোকদের সবকিছুই লুট কর।
29 তাদের তাঁবুগুলো ও তাদের পশুপাল কেড়ে নাও, তাদের পরদাগুলো, তাদের সমস্ত পাত্র ও তাদের যত উট ছিনিয়ে নিয়ে যাও; তাদের উপরে এই চিৎকার ধ্বনিত হোক : চারদিকে সন্ত্রাস!
30 হে হাসোর-নিবাসীরা, পালিয়ে যাও, দূরে চলে যাও, গুপ্ত স্থানে লুকাও, -প্রভুর উক্তি- কেননা বাবিলন রাজ নেবুকাল্লেজার তোমাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করেছে, তোমাদের বিরুদ্ধে সঙ্কল্প স্থির করেছে।
31 ওঠ, রণযাত্রা কর সেই শান্তিপ্রিয় দেশের বিরুদ্ধে, যা নিরুদ্বিগ্ন হয়ে বাস করছে—প্রভুর উক্তি । তার তোরণদ্বার নেই, অর্গলও নেই, সে একাকী হয়ে বাস করে।
32 তার যত উট লুটের মাল হোক, তার বিপুল পশুধন লুটের বস্তু হোক। যত লোকে কেশকোণ মুণ্ডন করে, তাদের আমি চার বায়ুতে ছড়িয়ে দেব, চারদিক থেকে তাদের উপর আনব সর্বনাশ প্রভু এই কথা বলছেন।
33 হাতসোর হবে শিয়ালদের আশ্রয়স্থল, চিরস্থায়ী উৎসন্নস্থান ; সেখানে আর কোন মানুষ বাস করবে না, কোন আদমসন্তান সেখানে আর বসতি করবে না।'
34 যুদা-রাজ সেদেকিয়ার রাজত্বের আরম্ভকালে এলাম সম্বন্ধে প্রভুর যে বাণী যেরেমিয়া নবীর কাছে এসে উপস্থিত হল, তা এ।
35 সেনাবাহিনীর প্রভু একথা বলছেন : দেখ, আমি এলামের ধনুক, তার সেই বলের উৎস ভেঙে ফেলব।
36 এলামের বিরুদ্ধে আমি আকাশের চারদিক থেকে চার বায়ু বহাব, এবং ওই সকল বায়ুর দিকে তাদের উড়িয়ে দেব; দূরীকৃত এলামীয়েরা যার কাছে না যাবে, এমন দেশ থাকবে না।
37 এলামীয়দের শত্রু যারা, তাদের প্রাণনাশে সচেষ্ট যারা, তাদের সামনে আমি এলামীয়দের অন্তরে আশঙ্কা সঞ্চার করব ; তাদের উপরে অমঙ্গল আনব, আনব আমার জ্বলন্ত ক্রোধ—প্রভুর উক্তি। আমি তাদের ধাওয়া করতে আমার খড়্গা প্রেরণ করব, যতক্ষণ না তাদের নিঃশেষে সংহার করি।
38 আমি আমার সিংহাসন এলামে স্থাপন করব, তার রাজা ও নেতা সকলকেই উচ্ছিন্ন করব—প্রভুর উক্তি।
39 কিন্তু অন্তিম দিনগুলিতে আমি এলামের দশা ফেরাব।' প্রভুর উক্তি।