1 প্রভু আমাকে বললেন, “যদিও মোশী ও সামুয়েল আমার সামনে দাঁড়াত, তবুও আমি এই জনগণের প্রতি আনত হতাম না। আমার সামনে থেকে তাদের দূর কর, তারা চলে যাক!
2 আর যদি তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, কোথায় চলে যাব? তবে তাদের বল : প্রভু একথা বলছেন : মৃত্যুর পাত্র মৃত্যুর হাতে, খড়োর পাত্র খড়োর হাতে, দুর্ভিক্ষের পাত্র দুর্ভিক্ষের হাতে, বন্দিদশার পাত্র বন্দিদশার হাতে!
3 আমি তাদের বিরুদ্ধে চার প্রকার অমঙ্গল প্রেরণ করব—প্রভুর উক্তি : বধ করার জন্য খড়্গা, টানাটানি করার জন্য কুকুর, গ্রাস ও বিনাশ করার জন্য আকাশের পাখি ও বন্যজন্তু।
4 আর আমি তাদের পৃথিবীর সকল রাজ্যের কাছে আতঙ্কের বস্তু করব; হেজেকিয়ার সন্তান যুদা রাজ মানাসের কারণে, যেরুসালেমে তার সাধিত কাজের কারণেই তা করব।'
5 হে যেরুসালেম, কে তোমার প্রতি দয়া দেখাবে? কেইবা তোমার উপর বিলাপ করবে? তোমার মঙ্গল জিজ্ঞাসা করার জন্য কেইবা একটু দাঁড়াবে?
6 তুমিই তো আমাকে ত্যাগ করেছ—বলছেন প্রভু তুমিই পিছিয়ে পড়েছ : তাই আমি তোমাকে বিনাশ করার জন্য তোমার বিরুদ্ধে বাড়ালাম হাত ; আমি ক্ষমা করতে ক্লান্ত হয়ে পড়লাম।
7 আমি দেশের নগরদ্বারগুলিতে কুলো দিয়ে তাদের ঝেড়েছি, তাদের সন্তানবিহীন করেছি, আমার জনগণকে বিনষ্টই করেছি, কারণ তারা ফেরেনি তাদের পথ ছেড়ে।
8 আমা দ্বারা তাদের বিধবারা সমুদ্রের বালুর চেয়েও বহুসংখ্যক হয়েছে ; আমি জননীদের ও যুবকদের উপরে মধ্যাহ্নকালেই বিনাশক একজনকে এনেছি : তাদের উপর অকস্মাৎ উদ্বেগ ও সন্ত্রাস ডেকে এনেছি।
9 সাত সন্তানের যে মাতা, সে ক্ষীণ হয়ে পড়েছে, প্রাণ ত্যাগ করছে ; দিন থাকতে তার সূর্য অস্ত গেছে, সে লজ্জায় ও হতাশায় অভিভূতা। আমি তাদের অবশিষ্টাংশকেও শত্রুদের চোখের সামনে খড়োর হাতে তুলে দেব। প্রভুর উক্তি।
10 হায় রে আমি! সমস্ত দেশে কলহ-বিবাদের মানুষ হতেই তুমি যে আমাকে প্রসব করেছ, মা আমার! ধারও দিইনি, ধারও নিইনি, অথচ সকলে আমাকে অভিশাপ দেয়।
11 প্রভু, আমি কি যথাসাধ্য তোমার সেবা করিনি? সঙ্কট ও অমঙ্গলের দিনে আমি কি শত্রুর হয়ে তোমার কাছে মিনতি করিনি?
12 লোহা কি উত্তর দেশীয় সেই লোহা ও ব্রঞ্জ ভাঙতে পারবে?
13 তোমার রাজ্যাধীন সমস্ত স্থানে তুমি যত পাপকর্ম সাধন করেছ, সেই পাপের কারণে—ক্ষতিপূরণ বলে নয় ! – আমি তোমার ঐশ্বর্য ও ধনকোষ লুটতরাজের হাতে তুলে দেব।
14 এমন দেশ যা তুমি জান না, সেইখানে আমি তোমাকে তোমার শত্রুদের দাস করব, কারণ আমার ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠল, তা তোমাদের বিরুদ্ধে জ্বলতে থাকবে!'
15 তুমি সবই জান! প্রভু, আমাকে স্মরণ কর, আমার যত্ন নাও, আমার পক্ষে আমার নির্যাতকদের যোগ্য প্রতিফল দাও। তোমার ধৈর্যের ফলে আমাকে যেন ছিনিয়ে নেওয়া না হয় ; জেনে রাখ, আমি তোমার খাতিরেই দুর্নাম সহ্য করছি।
16 তোমার বাণীগুলো পেলেই আমি তা গিলে ফেলতাম, তোমার বাণীগুলো ছিল আমার পুলক, আমার মনের আনন্দ, কেননা হে প্রভু, সেনাবাহিনীর পরমেশ্বর, আমি তোমার আপন নাম বহন করতাম।
17 আমোদপ্রমোদ করার জন্য আমি বিদ্রূপকারীদের সঙ্গে কখনও বসিনি, বরং তোমার হাতের প্রেরণায় আমি একাকী বসতাম, যেহেতু তুমি আমাকে ক্ষোভে পূর্ণ করেছিলে।
18 আমার যন্ত্রণা কেন নিত্যস্থায়ী? প্রতিকারের অতীত আমার এই ক্ষত কেন নিরাময় হতে অস্বীকার করে? সত্যি, তুমি আমার কাছে এমন কুটিল স্রোতের মত, যার জল নির্ভরযোগ্য নয় !
19 প্রভু তখন এই বলে উত্তর দিলেন, “তুমি ফিরে এলে আমি তোমাকে ফিরিয়ে আনব, যেন তুমি আমার সাক্ষাতে দাঁড়াতে পার ; তুমি হালকার চেয়ে বহুমূল্যই কথা ব্যক্ত করলে তবে নিজেই হবে আমার মুখের মত। ওরা তোমার কাছে ফিরে আসবে, কিন্তু তোমাকে ওদের কাছে ফিরে যেতে হবে না ;
20 আর এই জনগণের বেলায় আমি তোমাকে করব যেন ব্রঞ্জের দৃঢ়তম প্রাচীরের মত : তারা তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, কিন্তু তোমার উপরে জয়ী হতে পারবে না, কারণ তোমাকে ত্রাণ করতে ও উদ্ধার করতে আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে আছি—প্রভুর উক্তি।
21 আমি দুর্জনদের হাত থেকে তোমাকে উদ্ধার করব, হিংসাপন্থীদের কবল থেকে তোমাকে মুক্ত করব।'