1 যেহোইয়াকিমের সন্তান কনিয়ার পদে যোসিয়ার সন্তান সেদেকিয়া রাজ্যভার গ্রহণ করেন : বাবিলন-রাজ নেবুকাদ্রেজার তাঁকে যুদা দেশের রাজা করেছিলেন।
2 কিন্তু তিনি, তাঁর পরিষদেরা ও দেশের জনগণ যেরেমিয়া নবীর মধ্য দিয়ে উচ্চারিত প্রভুর বাণীতে কান দিলেন না।
3 সেদেকিয়া রাজা শেলেমিয়ার সন্তান ইহুকালকে ও মাসেইয়ার সন্তান জেফানিয়া যাজককে যেরেমিয়া নবীর কাছে একথা বলতে পাঠালেন, ‘আপনার দোহাই, আমাদের পরমেশ্বর প্রভুর কাছে আমাদের হয়ে প্রার্থনা করুন!
4 সেসময় যেরেমিয়া জনগণের মধ্যে যাতায়াত করতেন, কারণ তিনি তখনও কারারুদ্ধ হননি।
5 কিন্তু ইতিমধ্যে ফারাওর সৈন্যদল মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিল, এবং কান্দীয়েরা, যারা যেরুসালেম অবরোধ করছিল, সেই খবর শোনামাত্র যেরুসালেম থেকে চলে গেছিল।
6 তখন প্রভুর বাণী যেরেমিয়া নবীর কাছে এসে উপস্থিত হয়ে বলল :
7 'প্রভু, ইস্রায়েলের পরমেশ্বর, একথা বলছেন : যুদা-রাজ আমার অভিমত অনুসন্ধান করতে লোক পাঠিয়েছে; তাকে একথা বল : দেখ, ফারাওর যে সৈন্যদল তোমাদের সাহায্য করতে বের হয়ে এসেছে, তারা মিশরে, তাদের নিজেদের দেশে, ফিরে যাবে।
8 আর কান্দীয়েরা আবার এসে নগরী আক্রমণ করবে, এবং তা হস্তগত করে আগুনে পুড়িয়ে দেবে।
9 প্রভু একথা বলছেন: 'তোমরা এই বলে নিজেদের ভুলিয়ো না যে, কান্দীয়েরা আমাদের কাছ থেকে একেবারে চলে যাচ্ছে; কেননা তারা চলে যাচ্ছে না। বাস্তবিক যে কান্দীয়েরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, তোমরা তাদের সমস্ত সৈন্যদলকে আঘাত করলেও ও তাদের মধ্যে কেবল আহত অল্পজনই বাকি থাকলেও তারাই তাদের তাঁবু থেকে উঠে এই নগরী আগুনে পুড়িয়ে দেবে।
10 বাস্তবিক যে কান্দীয়েরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, তোমরা তাদের সমস্ত সৈন্যদলকে আঘাত করলেও ও তাদের মধ্যে কেবল আহত অল্পজনই বাকি থাকলেও তারাই তাদের তাঁবু থেকে উঠে এই নগরী আগুনে পুড়িয়ে দেবে।
11 কান্দীয়দের সৈন্যদল যে সময়ে ফারাওর সৈন্যদলের ভয়ে যেরুসালেমের অবরোধ উঠিয়ে নিয়েছিল,
12 সেসময়ে যেরেমিয়া বেঞ্জামিন-এলাকায় তাঁর জ্ঞাতিভাইদের মধ্যে তাঁর প্রাপ্য অংশ পাবার উদ্দেশ্যে সেখানে যাবার জন্য যেরুসালেম থেকে রওনা হলেন।
13 যখন তিনি বেঞ্জামিন-দ্বারে এসে পৌঁছেন, তখন সেখানে প্রহরী দলের একজন প্রহরীপতি ছিল, তার নাম ইরিয়া, সে হানানিয়ার পৌত্র, শেলেমিয়ার সন্তান; লোকটা যেরেমিয়া নবীকে এই বলে গ্রেপ্তার করল, “তুমি কাল্দীয়দের পক্ষে যোগ দিতে যাচ্ছ!'
14 যেরেমিয়া উত্তরে বললেন, 'এ মিথ্যাকথা, আমি কাদীয়দের পক্ষে যোগ দিতে যাচ্ছি না। কিন্তু ইরিয়া তাঁর কথা না শুনে যেরেমিয়াকে গ্রেপ্তার করে অধিনায়কদের কাছে নিয়ে গেল।
15 অধিনায়কেরা যেরেমিয়ার উপর খুবই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠল, তাঁকে মারল, এবং শাস্ত্রী যোনাথানের বাড়িতে কারারুদ্ধ অবস্থায় রাখল, কেননা তারা সেই বাড়ি কারাগার করেছিল।
16 যেরেমিয়া মাটির নিচে সেই ধনুকাকৃতি খিলান কারাগারে ঢুকে সেখানে বহুদিন থাকলেন।
17 পত্রে সেদেকিয়া রাজা লোক পাঠিয়ে তাঁকে আনালেন, এবং নিজের বাড়িতে—গোপনে—তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন: 'প্রভুর কাছ থেকে কি কোন বাণী আছে?” যেরেমিয়া বললেন, 'হ্যাঁ, আছে।' তিনি বলে চললেন, 'আপনাকে বাবিলন-রাজের হাতে তুলে দেওয়া হবে।'
18 যেরেমিয়া সেদেকিয়া রাজাকে এও বললেন, “আপনার বিরুদ্ধে, আপনার পরিষদদের বিরুদ্ধে, বা আপনার জনগণের বিরুদ্ধে আমি কি অপরাধ করেছি যে, আপনারা আমাকে কারাগারে রেখেছেন ?
19 আর যারা আপনাদের কাছে এই ভাববাণী দিত যে, বাবিলন-রাজ আপনাদের বা এই দেশ আক্রমণ করবেন না, আপনাদের সেই নবীরা কোথায় ?
20 এখন, হে আমার প্রভু মহারাজ, বিনয় করি, শুনুন আমি শাস্ত্রী যোনাথানের বাড়িতে যেন না মরি, এজন্য আপনি সেখানে আমাকে আর পাঠাবেন না; বিনয় করি, আমার এই মিনতি আপনার সাক্ষাতে গ্রাহ্য হোক।'
21 সেদেকিয়া রাজার আজ্ঞায় যেরেমিয়াকে কারাবাসের প্রাঙ্গণে রাখা হল, এবং নগরের সমস্ত রুটি ফুরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন রুটিওয়ালাদের পাড়া থেকে একটা করে রুটি তাঁকে দেওয়া হল। এইভাবে যেরেমিয়া কারাবাসের প্রাঙ্গণে থাকলেন।