Index

যোব - Chapter 5

1 তবে ডাক দেখি! কেউ কি তোমাকে সাড়া দেবে? পুণ্যজনদের মধ্যে কার শরণ তুমি নেবে?
2 কেননা ক্ষোভ মূর্খের মৃত্যু ঘটায়, ঈর্ষা নির্বোধের বিনাশ ঘটায়।
3 আমি দেখেছিলাম, মূর্খ মাটিতে নিজের শিকড় নামাল, কিন্তু আমি তার আবাসের উপরে অকস্মাৎ অভিশাপ নামিয়ে আনলাম।
4 তার সন্তানেরা সমৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত, নগরদ্বারে তারা অত্যাচারিত — উদ্ধারকর্তা কেউ নেই।
5 ক্ষুধিত মানুষ তার শস্য খেয়ে ফেলে, কাঁটাঝোপের বেড়া ভেঙে তারা সেইসব কেড়ে নেয় ; লোভী যত মানুষ তার সম্পদ চুষে খায়।
6 কারণ অমঙ্গল যে ধুলা থেকে উদ্‌গত হয়, তা কখনও হয় না, দুর্দশাও মাটি থেকে গজিয়ে ওঠে না।
7 মানুষই বরং তার নিজের দুর্দশার উদ্ভব ঘটায়, ঠিক যেমন আগুনের স্ফুলিঙ্গ ঊর্ধ্বের দিকে উড়ে যায়।
8 কিন্তু আমি, আমি তো সহায়ক বলে ঈশ্বরেরই অন্বেষণ করতাম, পরমেশ্বরেরই হাতে আমার পক্ষসমর্থনের ভার তুলে দিতাম ;
9 তাঁরই হাতে, যিনি এমন মহা মহা কাজ সাধন করেন, যা গণনার অতীত, যিনি এমন আশ্চর্য কর্মকীর্তির সাধক, যার সংখ্যা নেই।
10 তিনি তো পৃথিবীর উপর বৃষ্টি নামিয়ে আনেন, মাঠের উপর জলবর্ষণ করেন।
11 তিনি অবনমিতদের তুলে আনেন, শোকার্তদের সমৃদ্ধিতে উন্নীত করেন।
12 তিনি কুটিলদের ভাবনা ব্যর্থ করেন, তাই তাদের হাত সেই মতলব সাধনে অক্ষম হয়ে পড়ে।
13 তিনি প্রজ্ঞাবানদের তাদের নিজেদের কুটিলতার ফাঁদে ধরে ফেলেন, বাঁকা-মনদের ষড়যন্ত্র বিফল করেন।
14 তাই তারা দিবালোকেও অন্ধকারের মুখে পড়ে মধ্যাহ্নে রাত্রিবেলার মত হাতড়ে বেড়ায়।
15 কিন্তু তিনি ওদের কবল থেকে অত্যাচারিতকে ত্রাণ করেন, শক্তিশালীদের হাত থেকে নিঃস্বকে বাঁচান।
16 তখন দীনহীনের জন্য আশা ফুটে ওঠে, অধর্ম নিজের মুখ বন্ধ করে।
17 আহা, সুখী সেই মানুষ, যাকে ঈশ্বর দ্বারাই ভর্ৎসনা করা হয় ; তাই তুমি সর্বশক্তিমানের শাসন অবজ্ঞা করো না;
18 কেননা তিনি ক্ষত করেন, আবার বেঁধে দেন ; তিনি আঘাত করেন, তাঁর হাত আবার নিরাময় করে।
19 তিনি ছ'টা সঙ্কট থেকে তোমাকে উদ্ধার করবেন, সপ্তম সঙ্কটে কোন অমঙ্গল তোমাকে আর স্পর্শ করবে না ;
20 দুর্ভিক্ষের দিনে তিনি মৃত্যু থেকে তোমাকে রেহাই দেবেন, যুদ্ধের দিনে খড়ের আঘাত থেকে তোমাকে মুক্ত করবেন।
21 জিহ্বার কশাঘাত থেকে তুমি আশ্রয় পাবে, বিনাশের আগমনেও তুমি ভীত হবে না।
22 বিনাশ ও দুর্ভিক্ষ হবে তোমার হাসির বিষয়, বন্যজন্তুদেরও তুমি ভয় পাবে না :
23 হ্যাঁ, মাঠের পাথরের সঙ্গে তোমার সন্ধি হবে, হিংস্র পশুরাও তোমার পাশে শান্তিতে থাকবে।
24 তুমি এতে নিশ্চিত হবে যে, তোমার তাঁবু বিপদমুক্ত, পরিদর্শন করে তুমি দেখবে যে, তোমার মেষঘেরি নিরাপদ।
25 তুমি দেখতে পাবে, তোমার বংশধরদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তোমার সন্তানসন্ততিরা মাঠের ঘাসের মত বেড়ে উঠছে।
26 সময় হলে যেমন শস্যের আটি জমা হয়, পূর্ণায়ু হলে তেমনি তোমাকে সমাধি দেওয়া হবে।
27 দেখ, আমরা এসব কিছু লক্ষ করেছি, আর আসলে ব্যাপারটা ঠিক তা-ই। তেমন কথা শোন; নিজেই সুবিবেচক হয়ে উঠবে।