1 তেমান-নিবাসী এলিফাজ তখন একথা বললেন :
2 তোমাকে একবার যাচাই করলে তুমি সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে পড়েছ ! অথচ কেইবা কথা বলা থেকে নিজেকে সংযত রাখতে পারে?
3 দেখ, তুমি অনেককে উদ্বুদ্ধ করেছ, আবার দুর্বলের হাতে বল ঘুলিয়ে দিয়েছ।
4 তোমার কথা ছিল পতনোন্মুখের নির্ভর, আবার ভগ্ন হাঁটুতে তুমি বল সঞ্চার করেছ।
5 এখন তোমার পালা এসেছে, আর সহ্য হয় না তোমার, এই প্রথম স্পর্শে তুমি সঙ্গে সঙ্গে বিহ্বল !
6 তোমার ধর্মভাব, তা কি আর তোমার আস্থা নয় ? তোমার সদাচরণ, তা কি আর তোমার আশা নয় ?
7 নির্দোষী হয়ে যার বিনাশ হয়েছে, এমন কার কথা তোমার মনে পড়ে? কোথায়ই বা ঘটেছে ন্যায়নিষ্ঠদের উচ্ছেদ?
8 আমি তো দেখেছি, যে কেউ অধর্ম চাষ করে, যে কেউ অমঙ্গল-বীজ বোনে, সে ঠিক তাই কাটে।
9 ঈশ্বরের একটা ফুৎকারে তাদের বিনাশ হয়, তাঁর রোষের ফুৎকারে তাদের সংহার হয়।
10 সিংহ গর্জন করুক, যতই ভয়ঙ্কর হোক তার হুঙ্কার, কিন্তু যুবসিংহের দাঁতের মত সবই ভেঙে যায়।
11 শিকারের অভাবে সিংহের মৃত্যু হল, আর সিংহীর যত বাচ্চাকে ছড়িয়ে দেওয়া হল।
12 একটা গোপন কথা আমাকে জানানো হল, মৃদু এক মর্মরধ্বনি আমার কানে এল।
13 রাত্রিকালে যখন দুঃস্বপ্ন মনকে দিশেহারা করে, নিদ্রার ঘোর যখন মানুষকে আচ্ছন্ন করে,
14 এমন সময় সন্ত্রাস ও আতঙ্ক ধরে ফেলল আমায়, কম্পান্বিত করে তুলল আমার সকল হাড় ;
15 কার যেন শ্বাস আমার মুখ দিয়ে বয়ে গেল, শিহরে উঠল দেহ রোমাঞ্চিত হয়ে।
16 কে যেন একজন সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল। -তার চেহারা চিনতে পারলাম না ; হ্যাঁ, আমার চোখের সামনে এক ছায়ামূর্তি দাঁড়ানো ; আবার মৃদু এক মর্মরধ্বনি ..., তারপর আমি এক কণ্ঠস্বর শুনলাম :
17 মরণশীল মানুষ কি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ধর্মময় হতে পারে? কিংবা তার নির্মাতার সাক্ষাতে মানুষ কি নিরপরাধী হতে পারে?
18 দেখ, নিজের দাসদের তিনি বিশ্বাস করেন না, নিজের দূতদের মধ্যেও তিনি ত্রুটি পান ;
19 তাহলে যারা সেই মাটির ঘরে বাস করে, ধুলায় যার ভিত, কাঁট কামড়ালেই যার পতন, তাদের কী দশা হবে?
20 সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যেই চূর্ণ হয়ে তারা চিরকালের মত বিলুপ্ত হয়—তাদের প্রতি আর কারও চিন্তা নেই !
21 তাদের তাঁবুর গোঁজ কি উপড়ে ফেলা হয় না? হ্যাঁ, তারা মরে, কিন্তু প্রজ্ঞা-বঞ্চিত হয়ে!'