Index

যোব - Chapter 22

1 তেমান-নিবাসী এলিফাজ তখন একথা বললেন :
2 জ্ঞানবান যখন কেবল নিজেরই উপকার করতে পারে, তখন মানুষ কি ঈশ্বরকে উপকার করতে পারে?
3 তুমি ধার্মিক হলে তাতে সর্বশক্তিমানের কী উপকার? তুমি সদাচরণ করলে তাতে তাঁর কী লাভ?
4 তিনি কি তোমার ধর্মভাবের জন্যই তোমাকে শাসন করছেন? এজন্যই কি তোমাকে বিচারে আহ্বান করছেন?
5 না! বরং তোমার মহা অধর্মের জন্য, তোমার সীমাহীন শঠতার জন্যই তোমার প্রতি তাঁর এই ব্যবহার।
6 কেননা তুমি অন্যায়ভাবে তোমার ভাইয়ের কাছ থেকে অর্থ দাবি করেছ, তুমি বস্ত্রহীনের পোশাক কেড়ে নিয়েছ।
7 তুমি পিপাসিতকে পান করতে জল দাওনি, ক্ষুধিতকে খাবার দিতে অস্বীকার করেছ,
8 পরাক্রমীর হাতে জমি তুলে দিয়েছ, যেন তার উপরে তোমার প্রিয়পাত্রই বাস করে।
9 তুমি বিধবাকে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিয়েছ, এতিমের বাহু ভেঙে দিয়েছ।
10 এজন্যই এখন তোমার চারপাশে ফাঁদ ! এজন্যই আকস্মিক বিভীষিকা তোমাকে বিহ্বল করে তোলে।
11 এজন্যই তোমার আলো অন্ধকার হয়েছে, আর তুমি দেখতে পাচ্ছ না, এজন্যই জলোচ্ছ্বাস তোমাকে নিমজ্জিত করেছে।
12 ঈশ্বর কিন্তু কি ঊর্ধ্বলোকে থাকেন না? তারকা রাজির মাথা দেখ: সেগুলো কেমন উচ্চ !
13 অথচ তুমি নাকি বলছ, ‘ঈশ্বর কী জানেন? তমসার মধ্যে তিনি কি বিচার করতে পারেন?
14 ঘন মেঘ তাঁর অন্তরাল, তাই তিনি দেখতে পান না ; তিনি সেই গগনতলেই চলাচল করেন।'
15 তুমি কি সেকালের পথ ধরে চলবে, যা ধরে চলেছিল যত শঠতাপূর্ণ মানুষ ?
16 তাদের তো অকালেই কেড়ে নেওয়া হল, তাদের ভিত বন্যায় ভেসে গেল।
17 তারা নাকি ঈশ্বরকে বলছিল, 'আমাদের কাছ থেকে দূরে চলে যাও ; সেই সর্বশক্তিমান আমাদের বিরুদ্ধে কী করতে পারেন?”
18 অথচ তিনিই তাদের ঘর মঙ্গলদানে পরিপূর্ণ করেছিলেন, যদিও দুর্জনদের মতলব তাঁর কাছ থেকে বেশ দূরে ছিল।
19 তা দেখে ধার্মিকেরা আনন্দিত হয়, নিরপরাধী ওদের ঠাটা করে বলে,
20 হ্যাঁ, আমাদের বিরোধীরা এবার ধ্বংসিত হয়েছে, তাদের যা কিছু বাকি রইল, তা আগুন গ্রাস করেছে।
21 তাই তাঁর সঙ্গে পুনর্মিলিত হও, তবেই শাস্তি পাবে, তবেই পরম মঙ্গল তোমার কাছে আসবে।
22 তাঁর মুখ থেকে নির্দেশবাণী গ্রহণ করে নাও, তাঁর বচনগুলো হৃদয়ে গেঁথে রাখ।
23 তুমি যদি নত হয়ে সর্বশক্তিমানের কাছে ফের, তোমার তাঁবু থেকে যদি অন্যায় দূরে রাখ,
24 তোমার সোনা যদি ধুলার হাতে ছেড়ে দাও, ওফিরের সোনা যদি জলস্রোতের পাথরকুচির মধ্যে ফেলে রাখ,
25 তাহলে সর্বশক্তিমান নিজেই হবেন তোমার সোনা, স্বয়ং তিনিই তোমার রাশি রাশি রুপোর তাল।
26 হ্যাঁ, তুমি তখন সেই সর্বশক্তিমানে আনন্দ ভোগ করবে, ঈশ্বরের দিকে মুখ তুলে চাইবে।
27 তুমি তাঁকে মিনতি জানাবে আর তিনি সাড়া দেবেন, আর তুমি তোমার ব্রতগুলি উদযাপন করতে পারবে।
28 তুমি যা কিছু করতে স্থির করবে, তা সফল হবে, তোমার চলার পথে আলো উদ্ভাসিত হবে।
29 কারণ তিনি গর্বোদ্ধতের স্পর্ধা নত করেন, কিন্তু যার চোখ অবনমিত, তিনি তার পরিত্রাণ সাধন করেন।
30 তিনি নিরপরাধীকে নিষ্কৃতি দেন, তাই হাত শুদ্ধ রাখ, তবেই নিষ্কৃতি পাবে।