1 যোব তখন উত্তর দিয়ে একথা বললেন :
2 অবশ্য, তোমরাই প্রকৃত মানুষ, তোমাদের মৃত্যু হলে তখন প্রজ্ঞারও মৃত্যু হবে!
3 তবু তোমাদের মত আমারও কাণ্ডজ্ঞান আছে; তোমাদের চেয়ে আমি তত ছোট নই; বাস্তবিক সেইসব কথা কে না জানে?
4 ঈশ্বরের কাছে চিৎকার করলে যে কেউ তাঁর সাড়া পেতে চায়, বন্ধুর কাছে সে হাসির পাত্র হয়েছে; হ্যাঁ, যে ধার্মিক, যে সৎ, সে হাসির পাত্র হয়েছে !
5 সুখে আছে যারা, তারা ভাবে: ‘দুর্ভাগ্যে অবজ্ঞাও যোগ দাও ! যার পা পিছলে যাচ্ছে, তাকে ধাক্কা দাও।'
6 অথচ দস্যুদের তাঁবু শাস্তিভোগ করে, যারা ঈশ্বরকে ক্ষুব্ধ করে, যারা ঈশ্বরকে নিজেদের হাতে রাখতে চায়, তারা নিরাপদেই থাকে।
7 তুমি শুধু পশুদের জিজ্ঞাসা কর, সেগুলো তোমাকে উদ্বুদ্ধ করবে; আকাশের পাখিদের জিজ্ঞাসা কর, সেগুলো তোমাকে সবই জানিয়ে দেবে।
8 ভূমির সরিসৃপকেও জিজ্ঞাসা কর, তারা তোমাকে সুমন্ত্রণা দেবে সমুদ্রের মাছকেও জিজ্ঞাসা কর, সেগুলো তোমাকে সবই বলে দেবে।
9 এই সমস্ত প্রাণীর মধ্যে কোনটাই বা একথা না জানে যে, প্রভুর হাত এই সবকিছু এইভাবে নিরূপণ করল ?
10 তাঁরই হাতে রয়েছে সমস্ত জীবের প্রাণ, প্রতিটি মানবের শ্বাস।
11 জিহ্বা যেমন খাদ্যের স্বাদ নির্ণয় করতে পারে, তেমনি কান কি কথার মধ্যে কথা নির্ণয় করতে পারে না?
12 প্রজ্ঞা প্রাচীনদের সম্পদ : সত্বিবেচনা দীর্ঘায়ুর অধিকার।
13 কিন্তু তাঁরই কাছে রয়েছে প্রজ্ঞা ও পরাক্রম ; সুমন্ত্রণা ও সদ্বিবেচনা তাঁরই।
14 দেখ, তিনি ভেঙে ফেললে আর পুনর্নির্মাণ করা যায় না ; তিনি মানুষকে রুদ্ধ করলে মুক্ত করা যায় না।
15 দেখ, তিনি জল অবরোধ করলে সবকিছু শুষ্ক হয় ; তিনি জল ছেড়ে দিলে তা পৃথিবীকে বিধ্বস্ত করে।
16 বল ও বুদ্ধিকৌশল তাঁরই, প্রবঞ্চিত ও প্রবঞ্চকও তাঁরই।
17 তিনি মন্ত্রীদের প্রজ্ঞাহীন করে তোলেন, বিচারকর্তাদের কাণ্ডজ্ঞান-বঞ্চিত করেন।
18 তিনি রাজাদের রাজবন্ধন খুলে দেন, তাঁদের কোমরে বন্দির বাঁধনই বেঁধে দেন।
19 তিনি যাজকদের জুতো-বঞ্চিত করেন, প্রতাপশালীদের পদচ্যুত করেন।
20 তিনি বাচতুরদের বাক্যহীন করে তোলেন, প্রবীণদের সুবুদ্ধি-বঞ্চিত করেন।
21 তিনি অভিজাতদের উপর অবজ্ঞা বর্ষণ করেন, শক্তিশালীদের শক্তির বন্ধনী ছিন্ন করেন।
22 তিনি অন্ধকারের গভীরতম বিষয় অনাবৃত করেন, ঘন ছায়াকে আলোয় আনেন।
23 তিনি জাতিগুলিকে মহান করে তোলেন, আবার বিনাশ করেন, দেশগুলিকে প্রসারিত করেন, আবার ছেড়ে দেন।
24 তিনি জননায়কদের কাণ্ডজ্ঞান কেড়ে নেন, পথহীন মরুভূমিতে তাদের ফেলে রাখেন,
25 তখন তারা আলোবিহীন অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ায়, মাতালের মত টলতে টলতে হেঁটে চলে।