1 যোব এবিষয়ে তাঁর গম্ভীর কথা বলে চললেন; তিনি বললেন :
2 আহা! যদি আমি সেইমত আবার হতে পারতাম, আগেকার মাসগুলিতে যেমন ছিলাম! সেই দিনগুলিতেই, যখন ঈশ্বর আমাকে রক্ষা করতেন!
3 হ্যাঁ, সেসময়ে আমার মাথার উপরে তাঁর প্রদীপ জ্বলতে থাকত, তাঁর আলোতে আমি অন্ধকারেও চলতে পারতাম।
4 আমি যদি সেই শস্যকাটার সময় আবার দেখতে পেতাম, যখন ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব আমার তাঁবুর উপর বিরাজ করত!
5 সর্বশক্তিমান তখনও আমার সঙ্গে ছিলেন, আমার সন্তানেরাও আমার চারপাশে ছিল!
6 সেসময়ে আমি দুধেই পা ধুয়ে নিতাম, শৈল থেকে তেল নদীর মতই বয়ে যেত।
7 সেসময়ে আমি নগরদ্বারের দিকে বেরিয়ে যেতাম, সেই খোলা জায়গায় আমার আসন পেতে দিতাম ;
8 আমাকে দেখে যুবকেরা পাশে সরে যেত, প্রবীণেরা পায়ে উঠে দাঁড়াতেন :
9 গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও কথা বলা বন্ধ করতেন, নিজ নিজ মুখে হাত দিয়ে থাকতেন।
10 সমাজনেতারা নীরব হয়ে পড়তেন, তাঁদের জিহ্বা তালুতে লেগে থাকত ;
11 যারা আমাকে শুনত, তারা আমাকে সুখী বলত, যারা আমাকে দেখত, তারা আমার প্রশংসাবাদ করত,
12 কারণ দুঃখী চিৎকার করলে আমি তাকে সাহায্যদান করতাম, এতিম ও অসহায়কে উদ্ধার করতাম।
13 মরণাপন্নের আশীর্বাদ আমার উপরে নেমে আসত, বিধবার অন্তরে আমি আনন্দ সঞ্চার করতাম।
14 আমি পোশাকরূপে ধর্মময়তা পরতাম, আমার ন্যায়নিষ্ঠা ছিল আমার আলোয়ান ও আমার মাথার পাগড়ি।
15 আমি ছিলাম অন্ধের চোখ, ছিলাম গৌড়ার পা।
16 আমি ছিলাম দুঃখীদের পিতা, অপরিচিতের বিবাদ তদন্ত করতাম ;
17 দুষ্কর্মার চোয়াল ভেঙে দিতাম, তার দাঁত থেকে শিকার ছিনিয়ে নিতাম।
18 ভাবতাম : আমি নিজ বাসার মধ্যেই মরব, আমার দিন বালুকণার মত বহুসংখ্যক হবে।
19 আমার মূল জল পর্যন্ত বিস্তৃত, রাতে আমার শাখায় শিশিরপাত করে ;
20 আমার গৌরব নিত্যসতেজ থাকবে, আমার ধনুক আমার হাতে নিত্যদৃঢ় থাকবে।
21 লোকে প্রত্যাশার সঙ্গেই আমার কথা শুনত, আমার সুমন্ত্রণার জন্য নীরব থাকত।
22 আমার কথার পরে তারা প্রতিবাদ করত না, আমার বচনগুলো তাদের উপরে ফোঁটা ফোঁটা পড়ত।
23 যেমন বৃষ্টির, তেমন আমারই প্রতীক্ষায় তারা থাকত, যেন শেষ বর্ষার জন্য তারা হা করে থাকত।
24 আমি তাদের প্রতি হাসিমুখ দেখালে তারা বিশ্বাস করত না, আমার মুখের আলো সাগ্রহে গ্রহণ করত।
25 আমি তাদের পথ দেখাতাম, প্রধান হিসাবে আসন নিতাম, সৈন্যদলের মধ্যে যেমন রাজা, তেমনিই থাকতাম, শোকার্তদের সান্ত্বনাদানকারীর মতই থাকতাম।