Index

যোব - Chapter 28

1 অবশ্য, রুপোর খনি আছে, সোনারও নিখাদ হওয়ার স্থান আছে;
2 লোহা মাটি থেকে বের করা হয়, পাথর গলিয়ে দিলে পিতল পাওয়া যায়।
3 মানুষ অন্ধকারের একটা সীমা রাখে, অন্ধকারময় ঘন তমসার মধ্যে সে চরম প্রান্ত পর্যন্তই কালো পাথর খনন করে।
4 মানুষ যেখানে পা বাড়াতেও ভুলে গেছে, সেইখানে, লোকালয় থেকে দূরান্ত স্থানে তারা গর্ত খোঁড়ে, লোকদের কাছ থেকে দূরেই ঝুলে তারা দুলতে থাকে।
5 যে মাটি থেকে শস্যের উৎপত্তি হয়, নিচের সেই মাটি হল সর্বনাশা আগুনের স্থান।
6 সেই মাটির পাথর হল নীলকান্তমণির জন্মস্থান, সেই মাটির ধুলায় রয়েছে সোনা।
7 তেমন পথ চিলের অজানা, শকুনের চোখেরও অগোচর।
8 হিংস্র কোন পশু সেই পথ পায়ে মাড়ায় না, কোন সিংহও সেখানে কখনও হেঁটে বেড়ায়নি।
9 মানুষ শৈলে আঘাত হানে, পাহাড়পর্বতকে সমূলে উল্টিয়ে ফেলে,
10 শৈলের মধ্যে স্থানে স্থানে খাল কাটে, বহুমূল্য সবকিছুর উপরে চোখ নিবন্ধ রাখে,
11 নদনদীর উৎসের আবিষ্কারে ঘুরে বেড়ায়, গুপ্ত যা কিছু আছে, সে তা আলোয় আনে।
12 কিন্তু প্রজ্ঞা কোথা থেকে বের করা হয়? কোথায়ই বা সদ্বিবেচনার স্থান?
13 মানুষ তো সেদিকের পথ জানেই না, জীবিতদের দেশে তা পাওয়া যায় না।
14 অতল গহ্বর স্পষ্টই বলে, তা আমাতে নেই ; সমুদ্রও স্পষ্ট বলে, আমার কাছেও তা নেই।
15 সবচেয়ে খাঁটি সোনার বিনিময়েও তা পাওয়া যায় না, কোন রুপোর তাল মেপেও তা কেনা যায় না।
16 ওফিরের সোনার সঙ্গেও তার মূল্য তুলনা করা হয় না, বহুমূল্য সেই বৈদুর্যমণি ও নীলকান্তমণির সঙ্গেও নয়।
17 সোনা ও স্বচ্ছ কাচ তার সমতুল্য হয় না, খাঁটি সোনার পাত্রের সঙ্গেও তার বিনিময় হয় না।
18 প্রবাল ও স্ফটিকের নামও উল্লেখ করা বৃথা, সমুদ্রের যত মুক্তার চেয়ে প্রজ্ঞারই আবিষ্কার করা শ্রেয়।
19 ইথিওপিয়ার পোখরাজের সঙ্গেও তার তুলনা করা চলে না, সোনা খাঁটি হলেও মূল্যহীন।
20 কিন্তু প্রজ্ঞা কোথা থেকে আসে? কোথায়ই বা সম্বিবেচনার স্থান?
21 সকল প্রাণীর চোখের কাছ থেকে তা গুপ্ত, আকাশের পাখিদের কাছ থেকেও তা লুক্কায়িত।
22 বিনাশ ও মৃত্যু মিলে বলে, "আমরা নিজেদের কানেই তার খ্যাতির কথা শুনেছি।'
23 কেবল ঈশ্বরের কাছেই তার পথ জানা, কেবল তিনিই জানেন, তা কোথায় পাওয়া যায় :
24 কারণ তিনি পৃথিবীর শেষপ্রান্ত পর্যন্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন, গগনতলের নিচে যা কিছু আছে, তিনি তা সবই দেখতে পান।
25 তিনি যখন বাতাসের ওজন নির্ধারণ করলেন, যখন জলরাশিকে একটা সীমানার মধ্যে সঙ্কুচিত রাখলেন,
26 তিনি যখন বৃষ্টির নিয়ম নির্ধারণ করলেন, যখন বিদ্যুৎ-ঝলক ও বজ্রনাদের পথ স্থির করলেন,
27 তখন তিনি প্রজ্ঞা দেখলেন, তার মূল্যায়ন করলেন, তা ধারণ করলেন, পুঙ্খানুপুঙ্খরূপেই তা তলিয়ে দেখলেন ;
28 পরে মানুষকে বললেন, 'দেখ, প্রভুকে ভয় করা, এই তো প্রজ্ঞা, অধর্ম থেকে সরে যাওয়া, এই তো সদ্বিবেচনা।'