1 প্রজ্ঞা জগতের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত শক্তির সঙ্গে পরিব্যাপ্ত উত্তম মঙ্গলময়তার সঙ্গে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে।
2 তরুণ বয়স থেকে আমি তাকেই ভালবেসেছি, তারই অন্বেষণ করেছি : তাকেই নিজের কনে রূপে নিতে চেষ্টা করেছি, হ্যাঁ, আমি তার সৌন্দর্যের প্রেমে পড়েছি!
3 সে তার আপন বংশমর্যাদা প্রকাশ করে, সে তো ঈশ্বরের জীবনেই সহভাগিতা ভোগ করে, কেননা বিশ্বগ্রন্থ তাকে ভালবেসেছেন।
4 এমনকি, সে ঐশজ্ঞানে দীক্ষিত, তিনি যা যা করবেন, প্রজ্ঞাই তা বেছে নেয়।
5 যখন ধনসম্পদ এজীবনে একটি আকাঙ্ক্ষণীয় মঙ্গল, তখন সবকিছুতে যা ক্রিয়াশীল, সেই প্রজ্ঞার চেয়ে মহত্তর ধন কী থাকতে পারে ?
6 যদি বুদ্ধিই সবকিছুতে ক্রিয়াশীল, তবে সৃষ্টির মধ্যে কেইবা তার চেয়ে নিপুণ নির্মাতা ?
7 আর কেউ যদি ধর্মময়তা ভালবাসে, সদগুণ হল তার পরিশ্রমের ফল : কারণ প্রজ্ঞা সেই আত্মসংযম ও সদ্বিবেচনায়, সেই ধর্মময়তা ও সুস্থিরতায় উদ্বুদ্ধ করে, মানুষের পক্ষে এজীবনে যার চেয়ে উপযোগী আর কিছু নেই।
8 কেউ যদি বিচিত্র ধরনের অভিজ্ঞতা বাসনা করে, তবে প্রজ্ঞাই অতীত ঘটনা জানে ও ভাবী ঘটনার পূর্বাভাস পায়, সে-ই জানে যত চিকন তর্কযুক্তি ও যত প্রহেলিকার উত্তর, চিহ্ন ও অলৌকিক লক্ষণও পূর্বঘোষণা করে, আর সেই সঙ্গে কাল ও যুগের ঘটনাগুলিকেও পূর্বপ্রচার করে।
9 তাই স্থির করেছি, আমার জীবন সঙ্গিনী রূপে আমি তাকেই নেব, একথা জেনে যে, শুভদিনে সে আমার পরামর্শদাতা হবে, দুঃখে উদ্বেগে আমাকে সান্ত্বনা দেবে।
10 তার মধ্য দিয়ে আমি বিপুল জনসমাবেশে গৌরব লাভ করব, যুবা হয়েও প্রবীণদের মাঝে সম্মানের পাত্র হয়ে উঠব।
11 বিচারে সবাই আমাকে বিচক্ষণ দেখবে, প্রতাপশালীরা আমার বিষয়ে আশ্চর্য হবে।
12 আমি নীরব থাকলে তারা আমার বাণীর প্রতীক্ষায় থাকবে, আমি কথা বললে তারা মনোযোগ দেবে ; আমি দীর্ঘ বক্তব্য দিলে তারা মুখে হাত দেবে।
13 প্রজ্ঞার মধ্য দিয়ে আমি অমরত্ব লাভ করব, আমার পরে যারা রাজপদে বসবে, তাদের কাছে চিরন্তন স্মৃতি রাখব।
14 জাতিগুলিকে শাসন করব, দেশসকল আমার অধীন হবে;
15 আমার নাম শুনে ভয়ঙ্কর রাজনেতারা ভয়ে অভিভূত হবে, লোকদের মধ্যে মঙ্গলময়, যুদ্ধে সাহসী নিজেকে দেখাব।
16 বাড়ি ফিরে এসে আমি তার কাছে বিশ্রাম করব, কারণ তার সাহচর্যে তিক্ত বলতে কিছুই নেই, তার সঙ্গও দুঃখজনক নয়, বরং প্রাণে আনন্দ-সুখ সঞ্চার করে।
17 মনে মনে এসমস্ত বিষয় ধ্যান ক'রে, একথাও ভেবে যে, প্রজ্ঞার সঙ্গে মিলনে রয়েছে অমরত্ব,
18 তার বন্ধুত্বলাভে পরম সন্তোষ, তার কর্মফলে অফুরন্ত ঐশ্বর্য, তার সঙ্গে অবিরত সম্পর্কে সদ্বিবেচনা, তার সমস্ত কথার সহভাগিতায় খ্যাতি, আমি চেষ্টা করে বেড়াচ্ছিলাম, কেমন করে তাকে আমার সঙ্গিনী রূপে নিতে পারব।
19 আমি ছিলাম সজ্জন প্রকৃতির এক তরুণ, আমার সৌভাগ্যই যে আমি পেয়েছিলাম সৎপ্রাণ ;
20 বরং বলব, সৎ হওয়ায় আমি কলুষমুক্ত এক দেহে প্রবেশ করেছিলাম।
21 কিন্তু একথা জেনে যে, ঈশ্বর নিজেই আমাকে প্রজ্ঞা না দিলে অন্য উপায়ে আমি তার অধিকারী হতে পারব না, —তেমন শুভদান যে কার কাছ থেকে আসে, একথা জানা তো সুবুদ্ধিরই পরিচয়!— আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলাম, তাঁকে মিনতি জানালাম, এবং সমস্ত হৃদয় দিয়ে বলে উঠলাম :