1 ঈশ্বর সম্বন্ধে সচেতন নয় যত মানুষ, তারা সত্যিই স্বভাবে নির্বোধ : তারাও নির্বোধ, যারা দৃশ্য মঙ্গলদানগুলি দেখেও তাঁকেই চিনতে পারল না, যিনি আছেন, সৃষ্টিকর্ম অধ্যয়ন করেও সেগুলোর নির্মাতাকে জানতে পারল না।
2 বরং আগুন বা বাতাস বা সূক্ষ্ম হাওয়া, বা তারামণ্ডল বা প্রবল জলরাশি বা আকাশের বাতিগুলো - তা-ই তারা দেবতা ও বিশ্বনিয়ন্তা বলে বিবেচনা করল।
3 সেগুলির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তারা যখন সেগুলিকে দেবতা বলে মেনে নিল, তখন চিন্তা করুক, এই সবকিছুর চেয়ে কতই না মহত্তরই না হবেন প্রভু, কারণ সৌন্দর্যের স্বয়ং সাধকই তো সেগুলি সৃষ্টি করলেন!
4 সেগুলির প্রতাপ ও কর্মক্ষমতা দেখে তারা যখন অবাক তখন এ থেকে অনুমান করুক তিনি কতই না প্রতাপশালী, যিনি সেগুলির নির্মাতা।
5 বস্তুত সৃষ্টির মাহাত্ম্য ও সৌন্দর্যের মধ্য দিয়ে সাদৃশ্যের পথ ধরে তাঁরই দর্শন পাওয়া যায়, সেগুলিকে যিনি রচনা করলেন।
6 যাই হোক, এদের বিরুদ্ধে অনুযোগ লঘুতর, কেননা ঈশ্বর-অন্বেষার ও তাঁর সন্ধান পাওয়ার চেষ্টায় সম্ভবত এদের ভুল ধারণা হয়।
7 তাঁর সৃষ্টিকর্ম বিষয়ে ব্যস্ত হয়ে তারা তা তন্ন তন্ন করে তদন্ত করে থাকে, আর তত সৌন্দর্য দেখে সেগুলির চেহারার মায়ায় পতিত হয় ;
8 কিন্তু তবুও এদের জন্য কোন ছুতা নেই,
9 কারণ বিশ্বকে তন্ন তন্ন করে তদন্ত করার মত যখন তাদের তত জ্ঞান ছিল, তখন কেনই বা আরও শীঘ্রই বিশ্বপতির সন্ধান পেতে পারেনি?
10 দুর্ভাগাই তারা, মৃত বস্তুর উপরে যাদের প্রত্যাশা, যারা দেবতা বলে ডাকে সেই সব কাজ, যা মানুষের হাতে তৈরী, যা সোনা ও রুপোর কারুকাজমাত্র, পশুদের প্রতিমূর্তিমাত্র, প্রাচীনকালে কার যেন হাত দ্বারা খোদাই করা মূল্যহীন পাথরমাত্র!
11 কাঠকাটিয়ের কথা ধর: সে উপযুক্ত গাছ নামায়, যত্নের সঙ্গে তার ছাল খুলে দেয়, পরে নিপুণ দক্ষতা লাগিয়ে সেই কাঠ দিয়ে দৈনন্দিন জীবনের উপযুক্ত এক পাত্র গড়ে।
12 তারপর তার সেই কাজের বাকি অংশটুকু কুড়িয়ে নিয়ে তা নিজের খাদ্য প্রস্তুত করার জন্য ব্যবহার করে আর তৃপ্তির সঙ্গে খায়!
13 এ থেকে যা কিছু এখনও বাকি রয়েছে—যা কোন কাজেই লাগে না- তেমন বাঁকা ও গিঁটভরা কাঠ তুলে নিয়ে সময় কাটাবার জন্য তাতে কিছুটা খোদাই করে ; মন না দিয়ে, এমনি আমোদের খাতিরেই, গড়তে গড়তে সে সেই কাঠকে মানুষের মত গঠন দেয়,
14 কিংবা তা নীচ পশুর সাদৃশ্যে খোদাই করে। পরে রঙিন মাটি দিয়ে লেপ দেয়, তার বহির্ভাগে লাল রঙ লাগায়, যত কালিমা অদৃশ্য করে তা চক্চকে করে।
15 তারপর তার জন্য যোগ্য আবাস প্রস্তুত ক'রে তা দেওয়ালে দেয়—পেরেক মেরেই তা স্থির করে।
16 তা যেন না পড়ে, সেই ব্যবস্থাও সে করে, কেননা সে ভালই জানে যে, তেমন বস্তু নিজেকে সাহায্য করতে অক্ষম, বস্তুত তা কেবল একটা মূর্তি, তার সাহায্য দরকার।
17 অথচ সে নিজের সম্পত্তির জন্য, নিজের বিবাহের জন্য বা নিজের সন্তানদের জন্য প্রার্থনা করতে গিয়ে সেই অচলা বস্তুর সঙ্গে কথা বলতে তার লজ্জা হয় না ; স্বাস্থ্যের জন্য—যা দুর্বল, তা ডাকে,
18 জীবনের জন্য— যা মৃত, তার কাছে আবেদন জানায়, সাহায্যের জন্য—যা অনভিজ্ঞ, তার কাছে মিনতি জানায়, যাত্রার জন্য—যা চলতেও পারে না, তার কাছে যাচনা রাখে।
19 অর্থলাভ, চাকরি ও ব্যবসায় সাফল্যের জন্য সে এমন কিছুর কাছে দক্ষতা প্রার্থনা করে, যার হাতের কোন দক্ষতা নেই।