1 ভক্তিহীনদের উপরে নির্মম রোয শেষ পর্যন্ত নেমে পড়ল, কেননা ঈশ্বর আগে থেকেই জানতেন তাদের ভাবী কাজ,
2 হ্যাঁ, তিনি জানতেন যে, তাঁর আপন জনগণকে যেতে দিয়ে, এমনকি, তাদের চলে যাওয়াটা যেন শীঘ্রই ঘটে, তাও চেষ্টা ক'রে তারা মন পাল্টিয়ে তাদের পিছনে ধাওয়া করবে।
3 বস্তুত তারা তখনও মৃত্যুশোকে ব্যস্ত আছে, তখনও নিজেদের মৃতজনদের কবরের উপর চোখের জল ফেলছে এমন সময় আর একটা নির্বোধ সিদ্ধান্ত নিল, হ্যাঁ, তারা যাদের চলে যেতে অনুরোধ করেছিল, পলাতক রূপে তাদের পিছনে ধাওয়া করল।
4 তেমন চরম অবস্থায় তাদের যোগ্য ভাগাই তাদের চালিত করছিল, ফলে তারা যা ঘটেছিল সবই ভুলে গেল, যাতে তাদের পীড়ার যা কিছু তখনও বাকি ছিল, তা যেন তারা পূর্ণ মাত্রায় ভরে তোলে,
5 আর তোমার জনগণ অসাধারণ সেই যাত্রায় পা দিতে দিতে, তারা যেন এক বিশেষ ধরনের মৃত্যুর সম্মুখীন হয়।
6 কেননা সমগ্র সৃষ্টি তোমার আজ্ঞাগুলিতে বাধ্য হয়ে তার নিজের স্বরূপটির নতুন এক রূপ আবার ধারণ করছিল, যেন তোমার সন্তানেরা নিরাপদে রেহাই পায়।
7 শিবিরের উপরে ছায়া ছড়াতে মেঘটি ছিল, আগে যেখানে জল ছিল, সেখানে এখন শুষ্ক মাটি ভেসে উঠছিল, লোহিত সাগরে বাধামুক্ত একটা পথ উন্মুক্ত হল, প্রচণ্ড তরঙ্গের স্থানে দেখা দিল সবুজ সমতল ভূমি ;
8 তেমন আশ্চর্যময় অলৌকিক লক্ষণ বিস্ময়ের চোখে দেখতে দেখতে তোমার হাত দ্বারা আশ্রিত হয়ে গোটা জনগণ পার হল।
9 চরে বেড়ায় এমন ঘোড়ার দলের মত, আনন্দে লাফায় এমন মেষশিশুদের মত তারা তোমার প্রশংসাগান করছিল, প্রভু – তুমি যে তাদের নিস্তারকর্তা।
10 কেননা তাদের নির্বাসনের ঘটনাগুলি তখনও তাদের স্মরণে ছিল : সেই মাটি, যা পশুদের পরিবর্তে মশা উৎপন্ন করেছিল, সেই নদী, যা মাছের পরিবর্তে কোটি কোটি বেঙ উদ্গিরণ করেছিল।
11 পরে তারা পাখিদের নতুন প্রকার প্রজন্মও দেখতে পেল, যখন ক্ষুধার জ্বালায় রুচিকর খাদ্য দাবি করল ;
12 আর আসলে তাদের তৃপ্ত করার জন্য সমুদ্র থেকে ভারুই পাখি উঠে এল।
13 কিন্তু পাপীদের উপরে নানা শাস্তি নেমে পড়ল, তাদের সতর্ক করার জন্য কোলাহলপূর্ণ বিদ্যুৎ-ঝলকও পূর্বলক্ষণ রূপে ঘটেছিল ; তাদের অপকর্মের ফলে তারা যোগ্য যন্ত্রণা ভোগ করল, বিদেশী মানুষদের প্রতি তারা যে পোষণ করেছিল এত তিক্ত ঘৃণা!
14 বস্তুত অন্য কেউ অচেনা অতিথিকে সাদরে গ্রহণ করেনি, কিন্তু এই মিশরীয়েরা উপকারী অতিথিদেরই ক্রীতদাস করল।
15 আরও, সেই পাপীদের জন্য অবশ্য দণ্ড থাকবে, যেহেতু শত্রুভাবে বিদেশীদের গ্রহণ করল ;
16 কিন্তু সেই মিশরীয়েরা, তাদেরই অভ্যর্থনা জানিয়ে যারা তাদের একই অধিকারের অংশীদার ছিল, পরবর্তীকালে কঠোরতম কর্ম তাদের উপর চাপিয়ে দিল।
17 এজন্য তারা অন্ধতায় আঘাতগ্রস্ত হল, ধার্মিকের দুয়ারপ্রান্তে সেই পাপীদের মত, যখন ঘোর অন্ধকারের মধ্যে আচ্ছন্ন হয়ে প্রত্যেকে খোঁজ করছিল নিজ নিজ দরজার প্রবেশপথ।
18 তখন পদার্থের নতুন বিধান দেখা দিল, বীণায় যেমন সুর রাগের পরদা নিত্য রক্ষা করেও নানা তালে অবলম্বন করে। ঘটনাবলির প্রতি সূক্ষ্ম মনোযোগ দিলে বলা যায় যে, তখন ঠিক তাই ঘটল :
19 স্থলভূমির পশু জলচর হল, জলজন্তু স্থলভূমিতে উঠল,
20 আগুন জলে আরও প্রতাপশালী হল, জল ভুলে গেল আগুন নিভিয়ে দেওয়ার গুণ,
21 অগ্নিশিখা নিজের মধ্যে চলন্ত ক্ষুদ্র প্রাণীর মাংস ক্ষয় করল না, সেই স্বর্গীয় খাদ্যও গলাল না, যা ছিল কুয়াশার মত দেখতে, ফলে যা সহজে গলিত হতে পারত।
22 প্রভু, সর্বতভাবেই তুমি তোমার আপন জাতিকে মহিমান্বিত ও গৌরবমণ্ডিত করেছ, সর্বকালে সর্বস্থানে তাদের সহায়তা করায় কখনও অবহেলা করনি।