Index

Wisdom - Chapter 16

1 এজন্য তারা যোগ্যরূপেই সেই ধরনের প্রাণী দ্বারা দণ্ডিত হল, ও অসংখ্য কীট দ্বারা উৎপীড়িত হল।
2 তেমন শাস্তি না দিয়ে তুমি বরং তোমার জনগণের উপকারই করলে ; তাদের ক্ষুধার প্রবল আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে তুমি তাদের জন্য অতিরুচিকর খাদ্য—সেই ভারুই পাখি—ব্যবস্থা করলে।
3 কেননা খাদ্য বাসনা করলেও, সেই মিশরীয়েরা তাদের বিরুদ্ধে পাঠানো সেই পশুদের প্রতি বিতৃষ্ণা বোধ ক'রে তাদের ক্ষুধার সাধারণ আকাঙ্ক্ষাও হারিয়ে ফেলল : কিন্তু তোমার জনগণ ক্ষণিকের অনাটনের পর অতিরুচিকর খাদ্য স্বাদ করল।
4 এ প্রয়োজন ছিল যে, সেই বিরোধীদের উপর অপরিহার্য দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে, কিন্তু তোমার জনগণের কাছে এ-ই দেখানো যথেষ্ট ছিল যে, তাদের শত্রুরা কেমন পীড়ায় ভুগছে।
5 কেননা পশুদের ভীষণ আক্রোশ যখন তাদের আক্রমণ করল, তারা যখন সেই পেঁচাল সাপগুলির কামড়ে বিনষ্ট হচ্ছিল, তখন তোমার ক্রোধ শেষ মাত্রায় ব্যাপ্ত হয়নি।
6 সংশোধনের উদ্দেশ্যে তারা ক্ষণিকের মত আঘাতগ্রস্ত হল, তারা একটা ত্রাণ-পণও পেল, যেন তোমার বিধানের আজ্ঞা স্মরণে রাখে ;
7 কেননা সেই চিহ্নের দিকে যে কেউ চোখ ফেরাত, সে যা দেখত তা দ্বারা নয়, বিশ্বত্রাতা সেই তোমারই দ্বারা বরং ত্রাণ পেত।
8 এর দ্বারাও তুমি আমাদের শত্রুদের কাছে প্রমাণিত করলে যে, তুমিই সমস্ত অনিষ্ট থেকে আমাদের নিস্তার কর।
9 বস্তুত মিশরীয়েরা পঙ্গপাল ও মাছির কামড়ে মারা পড়ল, তাদের প্রাণের কোন প্রতিকারও পাওয়া গেল না, যেহেতু তেমন প্রাণীদের মধ্য দিয়েই তিরস্কার পাবার যোগ্য হল।
10 কিন্তু তোমার সন্তানদের উপরে বিষাক্ত সাপের কামড়ও জয়ী হতে পারল না, কারণ তাদের নিরাময় করতে তোমার দয়াই এসে দাঁড়াল।
11 তারা যেন তোমার বাণী মনে রাখে, সেজন্য দংশিত হলে তাদের সঙ্গে সঙ্গেই নিরাময় করা হত, পাছে গভীর বিস্মরণ-গর্ভে পতিত হয়ে তোমার মঙ্গলদানগুলি থেকে বঞ্চিত হয়।
12 কোন ঘাস যে তাদের সুস্থ করল এমন নয়; কোন মলম, তাও নয়, বরং তোমার বাণীই, প্রভু, তাদের সুস্থ করল —সেই যে বাণী সবই নিরাময় করে।
13 কেননা তোমারই তো জীবন ও মৃত্যুর উপর অধিকার আছে, তুমিই পাতালদ্বারে নামিয়ে দাও, আবার সেখান থেকে তুলে আন।
14 নিজের শঠতায় মানুষ হত্যা করতে পারে, কিন্তু যার আত্মা গেল, তার সেই আত্মাকে সে ফিরিয়ে আনতে পারে না, যার প্রাণ পাতালে গ্রহণ করা হল, তার সেই প্রাণকে সে মুক্তি দিতে পারে না।
15 তোমার হাত এড়ানো সম্ভব নয় :
16 সেই ভক্তিহীনেরা, যারা তোমাকে জানতে অস্বীকার করল, তারা তোমার বাহুবলেই আঘাতগ্রস্ত হল, অদ্ভুত জলবর্ষণ ও শিলাবৃষ্টি দ্বারা উত্পীড়িত হল, মুষলধারায় আপ্লাবিত হল, হল আগুনের গ্রাসের বস্তু।
17 আরও আশ্চর্যের বিষয় ! সবকিছু নিভিয়ে দেয় যে জল, সেই জলে আগুন উত্তরোত্তর জ্বলে উঠত! কেননা প্রকৃতি ধার্মিকদের মিত্র হয়।
18 এক সময় অগ্নিশিখা নিভে যেত, যেন ভক্তিহীনদের বিরুদ্ধে পাঠানো পশুদের না পুড়িয়ে ফেলে যেন তেমন দৃশ্যে তাদের বোঝাতে পারে যে, ঈশ্বরের রায়-ই তাদের পিছনে ধাওয়া করছে।
19 অন্য সময় জলের মধ্যেও সেই অগ্নিশিখা আগুনের প্রতাপের চেয়েও উদ্দীপ্ত হয়ে পড়ত, যেন অধর্মের দেশের অঙ্কুর বিনাশ করতে পারে।
20 কিন্তু তোমার জনগণের প্রতি তোমার কেমন ব্যবহার ! স্বর্গদূতদের খাদ্য দিয়েই মিটিয়েছ তাদের ক্ষুধা, স্বর্গ থেকে তাদের অর্পণ করেছ এমন রুটি বিনা কষ্টে প্রস্তুতই পাওয়া এমন রুটি, যে রুটি যত তৃপ্তি এনে দিতে পারে, মেটাতে পারে যত রুচি।
21 তোমার এই খাদ্য প্রকাশ করত তোমার সন্তানদের প্রতি তোমার মাধুর্য ; যে যে এই খাদ্য খেত, তা ছিল তাদের প্রত্যেকের রুচি অনুযায়ী, যে যা ইচ্ছা করত, তাতেই এই খাদ্য পরিণত হত।
22 তুষার ও বরফ আগুনের সামনেও গলে যেত না, তোমার জনগণ যেন স্বীকার করতে পারে যে, আগুন শিলাবৃষ্টির মধ্যে জ্বলন্ত থেকে শত্রুদের যত ফল গ্রাস করছিল, জলবর্ষণের মধ্যেও সেইসব বিনষ্ট করছিল।
23 কিন্তু ধার্মিকেরা যেন পুষ্ট হতে পারে, আগুন তার নিজের গুণও ভুলে যাচ্ছিল !
24 তার নির্মাণকর্তা সেই তোমারই প্রতি বাধ্য হয়ে সৃষ্টি অধার্মিকদের শাস্তি দিতে শক্ত হয়, কিন্তু তোমার আশ্রিতজনদের উপকার করতে কোমল হয়।
25 এজন্য সৃষ্টি সেসময়েও সবকিছুতে রূপান্তরিত হয়ে তোমার সর্বপুষ্টিকর বদান্যতার সেবা করছিল —অভাবীর বাসনা অনুসারে :
26 যাদের তুমি ভালবাস, প্রভু, তোমার সেই সন্তানেরা একথা যেন বুঝতে পারে যে, বিবিধ ফসলই যে মানুষকে পরিপুষ্ট করে এমন নয়, বরং তোমার বাণীই বাঁচিয়ে রাখে তাদের, যারা তোমাতে বিশ্বাস রাখে।
27 কেননা আগুন যা বিনষ্ট করতে পারেনি, সূর্যের ক্ষণিকের রশ্মির তাপে তা গলে যেত,
28 যেন একথা জ্ঞাত হয় যে, তোমাকে ধন্যবাদ জানাবার জন্য সূর্যের আগেই ওঠা দরকার, আলোর প্রথম আগমনেই তোমার কাছে প্রার্থনা করা দরকার ;
29 কিন্তু কৃতঘ্ন মানুষের প্রত্যাশা শীতকালীন কুয়াশার মত গলে যায়, এমন জলের মত বয়ে যায়, যা কোন উপকারের নয়।