Index

Wisdom - Chapter 12

1 কারণ তোমার অক্ষয়শীল আত্মা সবকিছুতে বিদ্যমান।
2 এজন্য তুমি ধাপে ধাপেই অপরাধীদের শাস্তি দাও, তাদের পাপ তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েই তাদের ভর্ৎসনা কর, যেন অপকর্ম ত্যাগ করে তারা তোমাতেই, প্রভু, আস্থা রাখে।
3 যারা তোমার পবিত্র ভূমির আগেকার বাসিন্দা,
4 তারা ঘৃণ্য কাজ সাধন করত বলে সেই জাদুক্রিয়া ও অপবিত্র কর্মের জন্য তাদের তুমি ঘৃণা করতে।
5 এই সকল নির্মম পুত্রঘাতক, মানব রক্তমাংসের ভোজসভায় এই সকল নাড়িভুঁড়ি-খেগো, গুপ্ত সম্প্রদায়ের এই সকল দীক্ষিত,
6 নিরুপায় প্রাণের ঘাতক এই সকল পিতামাতা, এদের তুমি আমাদের পিতৃগণের হাত দ্বারা বিনাশ করতে স্থির করলে,
7 যে অঞ্চল তুমি অন্য সকল অঞ্চলের চেয়ে বেশি মান্য করতে, তা যেন ঈশ্বরের সন্তানদের যোগ্য এক ঔপনিবেশিক দলকে গ্রহণ করে।
8 কিন্তু মানুষ বলে তাদের প্রতিও তুমি কোমল ব্যবহার করলে : তোমার আপন বাহিনীর অগ্রদলরূপে তুমি পাঠালে ভিমরুলের ঝাঁক, যেন এগুলি তাদের আস্তে আস্তেই বিনাশ করে।
9 যুদ্ধক্ষেত্রে ধার্মিকদের হাতে ভক্তিহীনদের তুলে দিতে কিংবা হিংস্র জন্তু বা কড়া নির্দেশ দ্বারা এক নিমেষেই তাদের বিলুপ্ত করতে তুমি অক্ষম ছিলে, এমন নয়,
10 বরং তোমার বিচারদণ্ড আস্তে আস্তেই দেওয়ায় তুমি তাদের অনুতাপ করার সুযোগ দিলে, যদিও তুমি জানতে যে, তাদের বংশ ধূর্ত, তাদের স্বভাব অসৎ, এও জানতে যে, তাদের মনের কখনও পরিবর্তন হবে না ;
11 কারণ তাদের মূলবংশ আদি থেকেই অভিশপ্ত বংশ ছিল। তুমি কারও ভয়েই যে তাদের পাপ অদণ্ডিত রাখছিলে, এমন নয়!
12 বস্তুত কেইবা তোমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারবে, ‘আপনি কী করলেন?’ আর কেইবা তোমার দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবে? তোমারই গড়া জাতিগুলোর বিনাশের জন্য কেইবা তোমাকে অভিযুক্ত করতে সাহস করবে? অধার্মিক মানুষদের পক্ষসমর্থক রূপে কেইবা তোমার বিরুদ্ধে বিচারমঞ্চে দাঁড়াতে পারবে?
13 কেননা তুমি ছাড়া এমন আর কোন দেবতা নেই যে সবকিছুর প্রতি যত্ন দেখাবে, যার কাছে তোমাকে দেখাতে হবে যে, তোমার বিচার অন্যায় বিচার নয়।
14 যাদের তুমি শান্তি দিয়েছ, তাদের পক্ষ সমর্থনে এমন রাজাও নেই, জননেতাও নেই, যে তোমার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে।
15 ন্যায্য হওয়ায় তুমি তো ন্যায়নীতিতেই সবকিছু শাসন কর, এবং শাস্তির যোগ্য নয় এমন মানুষকে দণ্ডিত করা এমন ব্যবহার তুমি তো তোমার পরাক্রমের সম্পূর্ণ অসঙ্গত ব্যবহার বলে গণ্য কর।
16 কারণ তোমার শক্তি ধর্মময়তার উৎস, তোমার সার্বজনীন কর্তৃত্ব তোমাকে সকলের প্রতি মমতাপূর্ণ করে।
17 তুমি তো তোমার প্রতাপ তখনই দেখাও, যখন তোমার সার্বিক পরাক্রমে বিশ্বাস রাখা হয় না; যারা স্পর্ধা জানে, তাদেরই বেলায় তুমি সেই স্পর্ধা নমিত কর।
18 শক্তি সংযত রেখে তুমি তো বরং কোমলতার সঙ্গেই বিচার কর, মহা মমতার সঙ্গেই আমাদের শাসন কর, কারণ তুমি এমনি ইচ্ছা করলে, আর তখনই তোমার প্রতাপ উপস্থিত!
19 তেমন ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তুমি তোমার জনগণকে একথায় উদ্বুদ্ধ করলে যে, ধার্মিকজনকে মানবপ্রেমিক হতে হবে ; তোমার সন্তানদের তুমি এই মধুর আশায়ও পূর্ণ করলে যে, পাপের পরে তুমি অনুতাপ মঞ্জুর কর।
20 কেননা, যখন তুমি তোমার সন্তানদের মৃত্যুর যোগ্য সেই শত্রুদের এত যত্ন ও মমতা দেখিয়েই শাস্তি দিলে, -কেননা তারা যেন তাদের শঠতা ত্যাগ করে সেই উদ্দেশ্যে তুমি তাদের সময় ও উপায় দিয়েছিলে—
21 তখন কত মনোযোগ দিয়েই না তুমি তোমার সেই সন্তানদের বিচার করলে, যাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে শপথ করেই তেমন উত্তম প্রতিশ্রুতির নানা সন্ধি স্থির করলে!
22 তাই তুমি আমাদের এই শিক্ষা দাও যে, আমাদের শত্রুদের তুমি যখন পরিমিত মাত্রায়ই আঘাত কর, তখন বিচার করার সময়ে আমরা যেন তোমার মঙ্গলময়তার কথা ভাবি, আর যখন আমরা নিজেরা বিচারিত হই, তখন যেন দয়ায় প্রত্যাশা রাখি।
23 পশু-পূজা বিষয়ক শেষ বাণী
24 এজন্যই যারা নির্বুদ্ধিতার সঙ্গে অধর্মময় জীবন যাপন করল, তাদের তুমি তাদের নিজেদের জঘন্য বস্তু দ্বারা উৎপীড়ন করেছ ;
25 তারা তো ভ্রান্তিপথে বেশি দূরেই সরে গেছিল, বস্তুত তারা নির্বোধ বালকদের মত প্রবঞ্চিত হয়ে নীচতম ও ঘৃণ্যতম জন্তুদের দেবতা বলে গণ্য করত।
26 সেজন্য তুমি যেন জ্ঞানশূন্য বালকদেরই মত তাদের এমন শাস্তি দিলে, যা তাদের তাচ্ছিল্যের বস্তু করল।
27 কিন্তু যে কেউ তেমন তাচ্ছিল্য-শাস্তি দিয়ে নিজেকে দেয় না সংশোধিত করতে, সে ঈশ্বরেরই যোগ্য দণ্ড ভোগ করবে।
28 বস্তুত তারা যে সমস্ত জন্তুর জন্য যন্ত্রণা ভোগ করে ক্ষোভ দেখাত, দেবতা বলে গণ্য করা যে জন্তু দ্বারা তারা দণ্ডিত ছিল, তাদের তারা তাদের প্রকৃত চেহারায় চিনতে পারল, আর সেই কারণেই তাদের উপর চরম দপ্ত নেমে পড়ল। তখন তারা বুঝল, তিনিই প্রকৃত ঈশ্বর। আর সেদিন পর্যন্ত যাকে জানতে অস্বীকার করেছিল,