Index

Wisdom - Chapter 17

1 হ্যাঁ, তোমার বিচারগুলি সত্যি মহান, বোধগম্য নয় ; এজন্য অদীক্ষিত সকল প্রাণ ভ্রষ্ট হল।
2 শঠতাপূর্ণ সেই মানুষেরা মনে করছিল, তারা পবিত্র জনগণের উপর কর্তৃত্ব চালাচ্ছে কিন্তু নিজেরাই ছিল অন্ধকারে শৃঙ্খলিত, দীর্ঘ রাত্রির বেড়িতে আবদ্ধ, নিজেদের ঘরে কারারুদ্ধ, সনাতন যত্ন থেকে বঞ্চিত!
3 তারা মনে করছিল, তারা ও তাদের গোপন পাপ লুকিয়ে থাকবে, অন্ধকারময় বিস্মরণ-গর্ভে আচ্ছাদিত থাকবে, কিন্তু নিজেরাই হল বিক্ষিপ্ত, ভীষণ আশঙ্কায় আঘাতগ্রস্ত, সকলেই অপচ্ছায়া দ্বারা আলোড়িত।
4 তারা যে গুপ্ত স্থানে ছিল, তাও আতঙ্ক থেকে তাদের রক্ষা করতে পারেনি, কিন্তু তাদের চারদিকে ভয়ঙ্কর শব্দ প্রতিধ্বনিত হত, দুঃখাত ও বিষণ্ণ মুখের ছায়ামূর্তি দেখা দিত।
5 কোন আগুনের এমন তেজ ছিল না যে, তাদের আলো দেবে, জ্যোতিষ্করাজির উজ্জ্বল দীপ্তিও সেই ঘোর রাত্রিকে আলোকিত করতে সক্ষম ছিল না।
6 তাদের কাছে কেবল মহা এক হাপর দেখা দিত, যা আপনা আপনি জ্বলে উঠত, যা ভয়ঙ্কর ; একবার সেই দৃশ্য মিলিয়ে গেলে তারা সন্ত্রাসিত হয়ে, যা দেখেছিল, তা আরও ভয়ঙ্কর মনে করত।
7 তেমন দশায় শক্তিহীন ছিল তাদের জাদু-মন্ত্ৰ, নিজেদের ব'লে যা দাবি করত, তাদের সেই দম্ভপূর্ণ জ্ঞানবুদ্ধিও তাই,
8 কেননা যারা এমন কথা দিত যে, পীড়িত প্ৰাণ থেকে যত ভয় ও উদ্বেগ তাড়িয়ে দেবে, তারা এমন আশঙ্কার ফলে পীড়িত হত, যা হাস্যকর আশঙ্কা !
9 তাদের সন্ত্রাসিত করার মত ভয়ঙ্কর কিছু না থাকলেও তারা সেই কীটের দ্রুত গমনে, সেই সরিসৃপের হিস্ হিস্ ধ্বনিতে ভীত হয়ে পড়ত ; তারা ভয়ে কম্পিত হয়ে মারা পড়ত, সেই শূন্য হাওয়ার দিকেও তাকাতে অস্বীকার করত, যা এমনিও এড়ানো সম্ভব নয়।
10 ধূর্ততা নিজের ভীরুতার সাক্ষী, তাতে নিজেই নিজেকে দণ্ডিত করে, বিবেকের চাপে তা সর্বদাই ধরে নেয়, অনিষ্টতর কিছু ঘটবে।
11 বস্তুত ভয় আর কিছু নয়, কেবল সুবুদ্ধির দেওয়া সাহায্য অস্বীকার করা ;
12 নিজের অন্তরে তুমি তেমন সাহায্যের উপর যত কম নির্ভর কর, তোমার নিজের পীড়নের কারণ না জানা-ই তত বিপদাশঙ্কায় পূর্ণ।
13 কিন্তু এমন রাত্রিকালে যা সত্যি প্রভাববিহীন, —যেহেতু প্রস্তাববিহীন পাতালের অগম্য গভীরতা থেকেই নির্গত সেই রাত্রি— তারা একই নিদ্রায় মগ্ন হয়ে
14 ভয়াবহ ছায়ামূর্তি দ্বারা তাড়িত ছিল, আবার ছিল প্রাণের হতাশায় অসাড় ; কারণ আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত সন্ত্রাস ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তাদের উপর।
15 তাই যে কেউ সেখানে পড়ত, সেইখানে, অর্গলবিহীন সেই কারাবাসে সে রুদ্ধ হয়ে থাকত।
16 হোক কৃষক, হোক রাখাল, হোক এমন মজুর, যে নির্জন স্থানে কাজে ব্যস্ত, সে ধরাই পড়ত, সেই অনিবার্য নিয়তি ভোগ করত, কেননা সকলেই ছিল তমসার একই শৃঙ্খলে শৃঙ্খলিত।
17 হাওয়া-বাতাসের শিস, ঘন ঘন শাখার মধ্যে পাখিদের মধুর কলরব, বেগমান জলপ্রবাহের মর্মর, পতনশীল শৈলের তীব্র কোলাহল,
18 উন্মত্ত পশুর অদৃশ্য দৌড়, হিংস্রতম বন্যজন্তুর গর্জন, পর্বতমালার ফাটল থেকে নির্গত প্রতিধ্বনি, সবই তাদের অসাড় করত, সবই তাদের আতঙ্কিত করত।
19 কারণ সারা বিশ্ব ছিল উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত, প্রত্যেকে ছিল নির্বিঘ্ন, নিজ নিজ কাজে রত ;
20 কেবল তাদের উপরেই বিস্তৃত ছিল এক গভীর রাত, তা সেই অন্ধকারের পূর্বচিহ্ন, যা তাদের আচ্ছন্ন করার কথা। কিন্তু অন্ধকারের চেয়ে ভারী ছিল সেই বোঝা, তারা নিজেরা নিজেদের জন্য যে বোঝা ছিল।