1 তখন ধার্মিকজন মহা সৎসাহসের সঙ্গে তাদেরই সামনে দাঁড়াবে, যারা তাকে অত্যাচার করল, যারা তার সমস্ত লাঞ্ছনা হেয়জ্ঞান করল।
2 তাকে দেখে এরা ভীষণ ভয়ে অভিভূত হবে, তার অপ্রত্যাশিত পরিত্রাণ লাভে অবাক হয়ে পড়বে।
3 তখন অনুতপ্ত হয়ে তারা নিপীড়িত আত্মায় হাহাকার ক'রে পরস্পরের মধ্যে বলবে :
4 এই যে সেই লোক, যাকে আমরা একসময় উপহাস করতাম, নির্বোধ হয়ে থাকে আমাদের বিদ্রূপের লক্ষ্যবস্তু করতাম ; আমরা তার জীবন ক্ষিপ্ততাই বলে গণ্য করতাম, তার পরিণাম সম্মান-বিহীন যেনই গণনা করতাম।
5 এখন সে কেমন করে ঈশ্বরের সন্তানদের মধ্যে পরিগণিত? কেমন করেই বা পবিত্রজনদের নিয়তির সহভাগী ?
6 তবে আমরা সত্য পথ ছেড়ে ভ্রষ্টই হয়েছি, ধর্মময়তার আলো উদ্ভাসিত হয়নি আমাদের উপর, আমাদের উপরে সূর্যও কখনও উদিত হয়নি।
7 আমরা অধর্ম ও বিনাশ পথে তৃপ্তি পেয়েছি, অগম্য মরুপ্রান্তরের মধ্য দিয়েই হেঁটে বেড়িয়েছি, কিন্তু প্রভুর পথ যে জানতে পারলাম না!
8 আমাদের তত দর্পে আমাদের কী লাভ হয়েছে? আমাদের ঐশ্বর্য ও স্পর্ধা আমাদের কী ফল দিয়েছে?
9 এসব কিছু ছায়ার মত কেটে গেছে, দ্রুতগামী সংবাদের মত অতীত হয়েছে,
10 হ্যাঁ, তা এমন তরণির মত চলে গেছে, যা উত্তাল তরঙ্গের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায়, যার গমনপথের কোন লক্ষণও পাওয়া সম্ভব নয়, ঊর্মিমালার উপরে যার তলির রেখাও অদৃশ্য হয়ে থাকে :
11 কিংবা, তা আকাশে উড়ন্ত এমন পাখির মতই চলে গেছে, যার দৌড়ের কোন চিহ্ন পাওয়া সম্ভব নয় তার পালকের স্পর্শে লঘুভার হাওয়া আঘাতগ্রস্ত হয়, তার প্রচণ্ড ভরবেগে বিভক্ত হয়, তবু এর পরে সেই পাখির গমনের কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না।
12 কিংবা, তা এমন তীরের মতই চলে গেছে, যা লক্ষ্যের দিকে ছোড়া হলে হাওয়া বিভক্ত হয়ে সঙ্গে সঙ্গেই আবার একীভূত হয়, যার ফলে তীরের গমনপথ নির্ণয় করা অসাধ্য।
13 তেমনি আমরাও জন্ম নিতে না নিতেই অতীত হয়েছি, দেখানোর মত তেমন সদগুণের চিহ্ন আমাদের ছিল না; আমরা হয়েছি আমাদের নিজেদের অধর্মের গ্রাস।
14 হ্যাঁ, ভক্তিহীনের প্রত্যাশা বাতাসে বয়ে যাওয়া তুষের মত, ঝড়ে তাড়িত লঘুভার ফেনার মত ; হাওয়ায় ধূমের মত বিক্ষিপ্ত হয়ে তা মাত্র একদিনেরই অতিথির স্মৃতির মত উবে যায়।
15 কিন্তু ধার্মিকেরা জীবিত থাকে চিরকাল, তাদের মজুরি প্রভুর কাছে রয়েছে, পরাৎপর নিজেই তাদের প্রতি যত্নশীল।
16 এজন্য তারা পাবে মহিমময় এক মুকুট, প্রভুর হাত থেকে সুন্দর এক কিরীট, কারণ তাঁর ডান হাত হবে তাদের আশ্রয়, তাঁর বাহু হবে তাদের ঢাল।
17 অস্ত্রসজ্জা রূপে তিনি তাঁর আপন উদ্যোগ ধারণ করবেন, শত্রুদের শাস্তি দিতে তিনি সৃষ্টিকে অস্ত্রসজ্জিত করবেন ;
18 বক্ষদ্বাণ রূপে ধর্মময়তা পরিধান করবেন, শিরস্ত্রাণ রূপে সুস্পষ্ট ন্যায়বিচার ;
19 ঢাল রূপে অপরাজেয় আপন পবিত্রতাই ধারণ করবেন ;
20 তাঁর নির্দয় ক্রোধ তাঁর হাতে ধারালো খড়্গস্বরূপ ; নির্বোধদের বিরুদ্ধে তাঁর সঙ্গে জগৎও সংগ্রাম করবে।
21 তখন বিদ্যুৎ-কলকের অভ্রান্ত তীর ছুড়ে মারা হবে, শক্ত ধনুকের মত সেই মেঘলোক থেকে তীরগুলো লক্ষ্যভেদ করবে;
22 ফিঙে থেকে শিলাবৃষ্টির ক্ষোভপূর্ণ শিলাকুচি নিক্ষিপ্ত হবে। তাদের বিরুদ্ধে উচ্ছ্বসিত হবে সমুদ্রের ক্রোধোন্মত্ত জলরাশি, নদনদী তাদের নির্মমভাবে নিমজ্জিত করবে।
23 প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাস তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে, ঘূর্ণিবায়ুর মত তাদের চারদিকে ছড়িয়ে দেবে। অন্যায় ও অবিচার সমগ্র পৃথিবীকে জনশূন্য করবে, অধর্ম-অপকর্ম প্রতাপশালীদের সিংহাসন উল্টিয়ে দেবে।