Index

এজেকিয়েল - Chapter 24

1 নবম বর্ষের দশম মাসে, মাসের দশম দিনে, প্রভুর বাণী আমার কাছে এসে উপস্থিত হয়ে বলল:
2 আদমসন্তান, তুমি এই দিনের, আজকের এই দিনের নাম লিখে রাখ, কেননা আজকের এই দিনে বাবিলন-রাজ যেরুসালেমকে আক্রমণ করতে শুরু করল।
3 তুমি এই বিদ্রোহী বংশের মানুষের কাছে একটা উপমা-কাহিনী উপস্থাপন কর ; বল : প্রভু পরমেশ্বর একথা বলছেন : হাঁড়ি চড়াও, চড়াও, ও তার মধ্যে জলও দাও।
4 টুকরো টুকরো মাংস, উত্তম উত্তম যে অংশ, উরুত ও কাঁধ তার মধ্যে একত্র কর ; সেরা হাড়গুলিতেও তা পূর্ণ কর ;
5 পালের উৎকৃষ্ট মেষ নাও, এবং হাঁড়ির নিচে কাঠ সাজাও, তা বহুক্ষণ ধরে সিদ্ধ কর, যেন হাড়গুলিও তার মধ্যে ভাল করে পাক হয়।
6 কেননা প্রভু পরমেশ্বর একথা বলছেন সেই রক্তপূর্ণা নগরীকে ধিক্, সেই হাঁড়িকে ধিক্, যার গায়ে মরচে ধরেছে, যা থেকে মরচে ওঠানো যায় না! তুমি একটা একটা করে টুকরো বের করে তা খালি কর, তার বিষয়ে গুলিবাট পড়েনি।
7 কেননা তার রক্ত তার মধ্যে রয়েছে, সে শুষ্ক শৈলের উপরে সেই রক্ত রেখেছে, মাটিতে তা ঢালেনি, ধুলা দিয়েও তা ঢাকেনি।
8 আমার ক্রোধ জাগাবার জন্য, প্রতিশোধ নেবার জন্যই সে তার রক্ত না ঢেকে বরং শুষ্ক শৈলেই রেখেছে।
9 এজন্য প্রভু পরমেশ্বর একথা বলছেন : সেই রক্তপূর্ণা নগরীকে ধিক ! আমিও বিশাল রাশি সাজাব।
10 কাঠ জমাও, আগুন জ্বালাও, মাংস সুসিদ্ধ কর, সুরস ঝোল কর, হাড়গুলি দক্ষ হোক :
11 শূন্য হাঁড়িটা কয়লার উপরে বসাও, যেন তা তপ্ত হলে তার ব্রঞ্জ আগুনে লাল হয়, তার মধ্যে তার মলিনতা গলে যায়, ও তার মরচে ক্ষয় হয়ে যায়।
12 মরচের জন্য কেমন পরিশ্রম! কিন্তু তা ওঠে না, আগুন দ্বারাও তা নিশ্চিহ্ন হয় না।
13 তোমার মলিনতা একেবারে নীচপ্রকার : আমি তোমাকে শোধন করতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু তুমি নিজেকে শোষিতা হতে দিলে না। এজন্য তুমি তোমার মলিনতা থেকে আর শোধিতা হবে না, যতদিন না আমি তোমার উপরে আমার ক্রোধ ঝেড়ে দিই।
14 আমিই, প্রভু, কথা বললাম! একথা সিদ্ধিলাভ করবে, আমি একাজ সাধন করবই, ক্ষান্ত হব না, দয়া দেখাব না, মমতাও দেখাব না। তোমার যেমন আচরণ ও তোমার যেমন কাজ, তোমাকে সেইমত বিচার করা হবে।' প্রভু পরমেশ্বরের উক্তি।
15 প্রভুর বাণী আমার কাছে এসে উপস্থিত হয়ে বলল:
16 হে আদমসন্তান, দেখ, আমি আকস্মিক এক মারাত্মক আঘাতেই তোমার চোখের প্রীতি তোমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে যাচ্ছি; কিন্তু তোমাকে শোক করতে, কাঁদতে বা চোখের জল ফেলতে নেই।
17 নীরবেই দীর্ঘশ্বাস ফেল, মৃতজনের জন্য শোক করো না; মাথায় শিরোভূষণ বাঁধ, পায়ে জুতো দাও, দাড়ি ঢেকে রেখো না, শোকের রুটিও খেয়ো না।'
18 সকালবেলায় আমি লোকদের কাছে কথা বললাম, আর সন্ধ্যাবেলায় আমার স্ত্রীর মৃত্যু হল; পরদিন সকালে আমি সেই আজ্ঞামত কাজ করলাম।
19 লোকেরা আমাকে জিজ্ঞাসা করছিল, 'তুমি যেভাবে ব্যবহার করছ, এর অর্থ কি আমাদের জানাবে না?”
20 উত্তরে আমি বললাম, 'প্রভুর বাণী আমার কাছে এসে উপস্থিত হয়ে বলেছে :
21 তুমি ইস্রায়েলকুলকে একথা বল : প্রভু পরমেশ্বর একথা বলছেন: দেখ, আমার যে পবিত্রধাম তোমাদের শক্তির গর্ব, তোমাদের চোখের প্রীতি ও তোমাদের প্রাণের অভিলাষ, তা আমি অপবিত্রীকৃত হতে দেব ; তোমাদের যে পুত্রকন্যাকে সেখানে ফেলে রেখেছ, তারা খড়ের আঘাতে পড়বে।
22 আমি যেমন করেছি, তোমরাও তখন সেইমত করবে : দাড়ি ঢেকে রাখবে না ও শোকের রুটি খাবে না।
23 তোমরা মাথায় শিরোভূষণ ও পায়ে জুতো দেবে, শোক করবে না, কাঁদবেও না, কিন্তু তোমাদের অপরাধের জন্য ক্ষীণ হয়ে যাবে, ও নিজেদের মধ্যে দীর্ঘশ্বাস ফেলবে।
24 এজেকিয়েল তোমাদের পক্ষে প্রতীক-চিহ্ন হবে: যখন এই সব কিছু ঘটবে, তখন তোমরা ঠিক তারই মত ব্যবহার করবে, আর তখন জানবে যে, আমিই প্ৰভু পরমেশ্বর।
25 আর তুমি, হে আদমসন্তান, যে দিন আমি তাদের কাছ থেকে তাদের শক্তি, তাদের কান্তির পুলক, তাদের চোখের প্রীতি, তাদের প্রাণের অভিলাষ, তাদের পুত্রকন্যাদের কেড়ে নেব,
26 সেদিন এই সংবাদ দিতে রেহাই পাওয়া একজন লোক তোমার কাছে আসবে।
27 সেদিন রেহাই পাওয়া সেই লোকের সঙ্গে কথা বলার জন্য তোমার মুখ খুলে দেওয়া হবে, তখন তুমি কথা বলবে, আর বোবা থাকবে না; তাদের পক্ষে তুমি প্রতীক-চিহ্ন হবে, তাতে তারা জানবে যে, আমিই প্রভু।'