1 সেদিন দেবোরা ও আবিনোয়ামের সন্তান বারাক এই সঙ্গীত গাইলেন :
2 ইস্রায়েলে যখন বীরযোদ্ধারা মাথার চুল খুলে দেয়,
যখন লোকে স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসে,
তখন প্রভুকে বল ধন্য !
3 শোন, রাজা সকল ; কান দাও, রাজপুরুষ সকল ;
আমি, আমিই প্রভুর উদ্দেশে গান গাইব,
ইস্রায়েলের পরমেশ্বর প্রভুর উদ্দেশে স্তবগান করব!
4 প্রভু, তুমি যখন সেইর থেকে বেরিয়ে আসছিলে,
এদোম-সমভূমি থেকে যখন এগিয়ে আসছিলে,
তখন ভূমি কেঁপে উঠল, আকাশও আলোড়িত হল,
মেঘমালা জলবর্ষণে গলে গেল।
5 সেই সিনাইয়ের প্রভুর সামনে,
ইস্রায়েলের পরমেশ্বর সেই প্রভুর সামনে পাহাড়পর্বত বিগলিত হল।
6 আনাতের সন্তান শাম্পারের সেই দিনগুলিতে,
যায়েলের সেই দিনগুলিতে রাস্তা জনশূন্য ছিল,
পথযাত্রীরা বাঁকা পথ দিয়েই চলছিল।
7 জননায়কেরা কেউই আর ছিলেন না,
ইস্রায়েলে কেউই আর ছিলেন না,
যতদিন না আমি দেবোরা উঠলাম,
ইস্রায়েলের মধ্যে মাতারূপে উঠলাম।
8 সবাই বিজাতীয় দেবতাদের নিয়েই প্রীত ছিল,
আর তখন নগরদ্বারে যুদ্ধ উপস্থিত হল ;
কিন্তু ইস্রায়েলের সেই চল্লিশ হাজার লোকের মধ্যে
একটা ঢাল কি একটা বর্ণাও দেখা যাচ্ছিল না।
9 আমার হৃদয় ইস্রায়েলের নেতাদের সঙ্গে,
সেই লোকদেরই সঙ্গে যারা স্বেচ্ছায় এগিয়ে এল :
প্রভুকে বল ধন্য!
10 তোমরা যারা সাদা গাধীর পিঠে চড়ে থাক,
যারা গাধীর গদিতে আসীন থাক,
তোমরাও যারা পায়ে হেঁটে চল, তোমরাই বর্ণনা কর :
11 জল তোলার স্থানে রাখালদের জয়ধ্বনিতে যোগ দাও,
সেইখানে কীর্তিত হচ্ছে প্রভুর সমস্ত জয়লাভ,
ইস্রায়েলে তাঁর শাসনের জয়লাভ ;
(তখন প্রভুর লোকেরা নগরদ্বারে নেমে গেছিল।)
12 জেগে ওঠ, দেবোরা, জেগে ওঠ
জেগে ওঠ, জেগে ওঠ, গেয়ে ওঠ গান!
ওঠ, বারাক ; হে আবিনোয়ামের সন্তান,
তোমার বন্দিদের বন্দি করে নাও!
13 তখন ইস্রায়েলের নগরদ্বারে নেমে এল ;
বীরযোদ্ধার মত প্রভুর লোকেরা তাঁর জন্য যুদ্ধ করতে নেমে এল।
14 এফ্রাইমের জননায়কেরা আমালেকে আছেন,
তোমার পিছু পিছু হয়ে বেঞ্জামিন তোমার লোকদের মধ্যে রয়েছে ;
মাখিরের মূলবংশ থেকে নেতারা নেমে এলেন,
রণদণ্ড যাঁদের হাতে, জাবুলোনের মূলবংশ থেকে তাঁরাও নেমে এলেন।
15 ইসাখারের প্রধানেরা দেবোরার সঙ্গে ছিলেন,
তাঁর পিছু পিছু বারাক সমতল ভূমিতে ছুটে গেলেন।
রূবেনের খরস্রোতের ধারে
গুরু মনশ্চাঞ্চল্য দেখা দিচ্ছিল :
16 তুমি কেন মেষঘেরির মধ্যে বসে ছিলে?
কি রাখালদের বাঁশি শোনার জন্য?
রূবেনের খরস্রোতের ধারে
গুরু মনশ্চাঞ্চল্য দেখা দিচ্ছিল।
17 গিলেয়াদ ঘর্দনের ওপারে বসে থাকল,
আর দান কেন বিজাতিই যেন জাহাজে রইল?
আসের মহাসাগরের তীরে বসে থাকল,
তার বন্দরের ধারে ধারে বসে থাকল।
18 জারুলোন এমন জাতি যে প্রাণ তুচ্ছ করল মৃত্যু পর্যন্ত,
নেফ্তালিও সেইরূপ, সে মাঠের উচ্চস্থানগুলিতে ছিল।
19 রাজারা এলেন, যুদ্ধ করলেন,
কেমন যুদ্ধ করলেন সেই কানানের রাজা সকল !
মেগিদ্দোর জলাশয়ের ধারে সেই তানাথে যুদ্ধ করলেন,
কিন্তু একটু রুপোও লুট করে নিতে পারলেন না।
20 আকাশ থেকে তারানক্ষত্র যুদ্ধ করল,
যে যার কক্ষ থেকেই সিসেরার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল।
21 কিশোন খাদনদী তাদের ভাসিয়ে নিয়ে গেল :
প্রাচীন নদীই সেই কিশোন খাদনদী !
প্রাণ আমার, বলবান হয়ে এগিয়ে চল!
22 তখন অশ্বগুলোর খুর মাটি পিষে মারল,
ধাওয়া করছিল, ধাওয়া করছিল দ্রুতগামী সেই ঘোড়া সকল ।
23 প্রস্তুর দূত বলেন: মেরোজকে অভিশাপ দাও,
অভিশাপ দাও, তার অধিবাসীদের অভিশাপ দাও,
তারা যে আসল না প্রভুর সাহায্যের জন্য,
প্রভুর সাহায্যের জন্য, বীরযোদ্ধাদের মাঝে।
24 নারীকূলে ধন্যা সেই যায়েল,
কেনীয় হেবেরের পত্নী যে যায়েল !
তাঁবুতে বাস করে যত নারী, তাদের সকলের মধ্যে তিনি ধন্যা!
25 সে জল চাইল, তিনি তাকে দিলেন দুধ ;
রাজোপযোগী পাত্রেই ক্ষীর এনে দিলেন।
26 গোঁজের দিকে হাত বাড়িয়ে,
কর্মকারের হাতুড়ির দিকে ডান হাত বাড়িয়ে
তিনি সিসেরাকে হাতুড়ি মারলেন, তার মাথা চূর্ণ করলেন,
তার কপাল বিধিয়ে ভেঙে দিলেন।
27 সে তাঁর দু'পায়ের মধ্যে হেঁট হয়ে পড়ল, আর নড়ল না ;
তাঁর দু'পায়ের মধ্যে হেঁট হয়ে পড়ল ;
যেখানে হেঁট হল, সেখানে সে নিঃশেষিত হয়ে পড়ল।
28 সিসেরার মাতা জাফরি দিয়ে,
জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে চেয়ে দেখে :
তার রথ আসতে তত দেরি কেন?
তার রথগুলো তত আস্তে আস্তে চলে কেন?
29 তার সবচেয়ে প্রভাবতী সহচরীরা উত্তর দেয়,
আর সে নিজেও নিজেকে বারবার বলে :
30 তারা কি লুটের মাল নিচ্ছে না?
লুটের মাল তারা কি ভাগ ভাগ করে নিচ্ছে না?
প্রত্যেক পুরুষ একটি তরুণী, দু'টোই তরুণী,
সিসেরার জন্য লুটের ভাগ চিত্রিত বস্ত্র,
খচিত চিত্রিত একটা বস্ত্র তার জন্য,
কণ্ঠদেশের জন্য চিত্রিত দুই ধারি বাঁধা বস্ত্রই আমার জন্য লুটের ভাগ!
31 প্রভু, তোমার সকল শত্রুর তেমনই বিনাশ হোক !
কিন্তু তোমাকে ভালবাসে যারা,
তারা সপ্রতাপে উদীয়মান সূর্যেরই মত হোক!'
আর চল্লিশ বছর ধরে দেশ স্বস্তি পেল।