1 প্রভুর দূত গিল্লাল থেকে বোখিয়ে উঠে গেলেন; তিনি বললেন : 'আমি মিশর দেশ থেকে তোমাদের বের করে এনেছি; যে দেশ দেব বলে তোমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে দিব্যি দিয়ে শপথ করেছিলাম, সেই দেশে তোমাদের চালনা করেছি। আমি এই কথাও বলেছিলাম: তোমাদের সঙ্গে আমার সন্ধি আমি কখনও ভঙ্গ করব না;
2 তোমরা কিন্তু এই দেশের অধিবাসীদের সঙ্গে কোন সন্ধি স্থির করবে না, তাদের যজ্ঞবেদিগুলো তোমরা ভেঙে ফেলবে। কিন্তু তোমরা আমার প্রতি বাধ্য হলে না। কেন এমন কাজ করেছ?
3 তাই আমিও এখন বলছি: তোমাদের সামনে থেকে আমি এই লোকদের তাড়িয়ে দেব না; তারা তোমাদের পাশে কাঁটাস্বরূপ, ও তাদের দেবতারা তোমাদের ফাঁদস্বরূপ হয়ে থাকবে।”
4 প্রভুর দূত ইস্রায়েল সন্তান সকলকে একথা বলামাত্র জনগণ জোর গলায় কাঁদতে লাগল।
5 তারা সেই জায়গার নাম বোধিম রাখল, আর সেখানে প্রভুর উদ্দেশে বলিদান করল।
6 যোশুয়া লোকদের বিদায় দেওয়ার পর ইস্রায়েল সন্তানেরা দেশ অধিকার করার জন্য প্রত্যেকে যে যার এলাকায় গেল।
7 যোশুয়ার সমস্ত জীবনকালে, এবং যোশুয়ার মৃত্যুর পরে যে প্রবীণেরা বেঁচে থাকলেন ও ইস্রায়েলের খাতিরে প্রভুর সাধিত সকল মহাকীর্তি দেখেছিলেন, তাঁদেরও সমস্ত জীবনকালে লোকেরা প্রভুর সেবা করে চলল।
8 নূনের সন্তান প্রভুর দাস যোশুয়ার যখন মৃত্যু হয়, তখন তাঁর বয়স একশ' দশ বছর ;
9 তাঁকে পাশ পর্বতের উত্তরে এফ্রাইমের পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত তিন্নাৎ-সেরাহে তাঁর নিজের উত্তরাধিকারের এলাকায় সমাধি দেওয়া হল।
10 আর সেই প্রজন্মের অন্য সকল লোক যখন তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে মিলিত হল, তখন তাদের পরে এমন নতুন প্রজন্মের উদ্ভব হল, যারা প্রভুকেও জানত না, ইস্রায়েলের খাতিরে তাঁর সাধিত সকল কাজের কথাও জানত না।
11 ইস্রায়েল সস্তানেরা প্রভুর দৃষ্টিতে যা অন্যায় তেমন কাজই করল, বায়াল দেবদেরই সেবা করল।
12 মিশর দেশ থেকে যিনি তাদের বের করে এনেছিলেন, তাদের পিতৃপুরুষদের পরমেশ্বর সেই প্রভুকে ত্যাগ করে তারা আশেপাশের জাতিগুলোর দেবতাদের মধ্য থেকে কয়েকটা দেবতার অনুগামী হল : তাদের সামনে প্রণিপাত করল, প্রভুকে ক্ষুব্ধ করে তুলল,
13 প্রভুকে ত্যাগ করে সেই বায়াল ও আস্তাতীস দেব-দেবীর সেবা করল।
14 তখন ইস্রায়েলের উপরে প্রভুর ক্রোধ জ্বলে উঠল, আর তাদের তিনি এমন লুটেরার হাতে তুলে দিলেন, যারা তাদের সবকিছু লুট করে নিল ; তিনি তাদের আশেপাশের শত্রুদের হাতে ছেড়ে দিলেন, তখন তারা তাদের শত্রুদের সামনে আর দাঁড়াতে পারল না।
15 প্রভু যেমন বলেছিলেন, ও তাদের কাছে যেমন শপথ করেছিলেন, সেই অনুসারে তারা যুদ্ধযাত্রায় যেইখানে যেত, তাদের অমঙ্গলের জন্য প্রভুর হাত সেইখানে তাদের বিরোধী ছিল; ফলে তারা চরম সঙ্কটের মধ্যে পড়ল।
16 তখন প্রভু বিচারকদের উদ্ভব ঘটালেন, আর তাঁরা যত লুটেরার হাত থেকে তাদের ত্রাণ করলেন ;
17 কিন্তু তবুও তারা তাদের বিচারকদের কথায়ও কান দিত না, এমনকি অন্য দেবতাদের অনুগামী হয়ে ব্যভিচার করত ও তাদের সামনে প্রণিপাত করত। তাদের পিতৃপুরুষেরা প্রভুর আজ্ঞাগুলির প্রতি বাধ্যতা দেখিয়ে যে পথে চলেছিলেন, তারা সেই অনুসারে ব্যবহার না করে সেই পথ দেরি না করেই ছেড়ে দিল।
18 আর প্রভু যখন তাদের জন্য বিচারকদের উদ্ভব ঘটাতেন, তখন প্রভুই বিচারকের সঙ্গে সঙ্গে থেকে বিচারকের সমস্ত জীবনকালে শত্রুদের হাত থেকে তাদের ত্রাণ করতেন, যেহেতু তাদের নির্যাতনকারী ও অত্যাচারীদের অধীনে তাদের কাতর কণ্ঠে প্রভু করুণায় বিগলিত হতেন।
19 কিন্তু সেই বিচারক মরলেই তারা পুনরায় তাদের পিতৃপুরুষদের চেয়ে আরও ভ্রষ্ট হয়ে পড়ত, অন্য দেবতাদের অনুগামী হয়ে তাদের সেবা করত, ও তাদের সামনে প্রণিপাত করত; তাদের পিতৃপুরুষদের যত কাজ ও জেদি আচরণ কোন মতেই ত্যাগ করল না।
20 তখন ইস্রায়েলের উপর প্রভুর ক্রোধ জ্বলে উঠল; তিনি বললেন, 'আমি এদের পিতৃপুরুষদের জন্য যে সন্ধি জারি করেছিলাম, এই জাতি তা লঙ্ঘন করেছে। ও আমার কণ্ঠে কান দেয়নি বিধায়
21 যোশুয়া মৃত্যুকালে যে যে জাতিকে অবশিষ্ট রেখেছিল, আমিও এদের সামনে থেকে সেই জাতিগুলোকে দেশছাড়া করব না।
22 এভাবে আমি তাদের মধ্য দিয়ে ইয়ায়েলকে পরীক্ষা করব, যেন দেখতে পারি, তাদের পিতৃপুরুষেরা যেমন প্রভুর পথে চলত, এরাও তেমনি সেই পথে চলবে কিনা।
23 এজন্য প্রভু সেই জাতিগুলোকে সঙ্গে সঙ্গে দেশছাড়া না করে তাদের থাকতে দিলেন, ও যোশুয়ার হাতে তাদের তুলে দিলেন না।