Index

বিচারকচরিত - Chapter 14

1 সামসোন তিন্নায় নেমে গেলেন এবং তিন্নায় ফিলিস্তিনিদের মেয়েদের মধ্যে একটি যুবতীকে লক্ষ করলেন।
2 বাড়ি ফিরে এসে তাঁর পিতামাতাকে ব্যাপারটা খুলে বললেন; বললেন, 'তিন্নায় আমি ফিলিস্তিনিদের মেয়েদের একটি যুবতীকে লক্ষ করেছি; তোমরা তাকে আমার স্ত্রী হবার জন্য নিয়ে এসো।'
3 তাঁর পিতামাতা তাঁকে বললেন, 'তোমার ভাইদের মধ্যে ও আমাদের গোটা জাতির মধ্যে কি মেয়ে নেই যে তুমি অপরিচ্ছেদিত ফিলিস্তিনিদের মেয়ে বিয়ে করতে যাবে?' কিন্তু সামসোন পিতাকে বললেন, 'আমার জন্য তাকে আনাও, : তাকেই আমি পছন্দ করি।'
4 বস্তুত তাঁর পিতামাতা জানতেন না যে, এসব কিছু প্রভু থেকেই হচ্ছিল, কারণ তিনি ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বিবাদ করার একটা সুযোগ খুঁজছিলেন, যেহেতু সেসময় ফিলিস্তিনিরা ইয়ায়েলের উপরে কর্তৃত্ব করত।
5 সামসোন ও তাঁর পিতামাতা তিন্নায় নেমে পেলেন; তাঁরা তিল্লার আঙুরখেতে এসে পৌঁছলে, দেখ, এক যুবসিংহ সামসোনের সামনে গর্জন করতে করতে এগিয়ে : আসছে।
6 প্রভুর আত্মা তাঁর উপরে প্রবলভাবে নেমে পড়ল, আর তাঁর হাতে কিছু না থাকলেও তিনি সেই সিংহ যেন একটা ছাগের ছানার মতই ছিঁড়ে ফেললেন ; কিন্তু যে কী করলেন, তা পিতামাতাকে বললেন না।
7 পরে তিনি গিয়ে সেই মেয়ের সঙ্গে আলাপ করলেন, আর তাঁর পছন্দ হল।
8 কিছুদিন পরে তিনি তাকে বিবাহ করতে সেখানে ফিরে গেলেন, এবং সেই সিংহের লাশ দেখবার জন্য পথ ছেড়ে গেলেন; আর দেখ, সিংহের দেহে এক ঝাঁক মৌমাছি ও মধুর চাক রয়েছে।
9 তিনি কিছুটা মধু হাতে নিয়ে খেতে খেতে এগিয়ে চললেন; পিতামাতার কাছে ফিরে এসে তাঁদেরও খানিকটা দিলেন আর তাঁরা তা খেলেন কিন্তু সেই মধু যে সিংহের দেহ থেকেই নিয়েছিলেন, একথা তিনি তাঁদের বললেন না।
10 তাই তাঁর পিতা সেই যুবতীর কাছে গেলে সামসোন সেখানে একটা ভোজের আয়োজন করলেন, কেননা তেমনটি ছিল যুবকদের প্রথা।
11 তাঁকে দেখে ফিলিস্তিনিরা ত্রিশজন সাথীকে আনল, তারা যেন তাঁর পাশে থাকে।
12 সামসোন তাদের বললেন, 'আমি তোমাদের কাছে একটা ধাঁধা দিই, যদি তোমরা এই উৎসবের সাত দিনের মধ্যে তার অর্থ বুঝে আমাকে বলে দিতে পার, তবে আমি তোমাদের ত্রিশটা জামা ও ত্রিশ জোড়া কাপড় দেব।
13 কিন্তু যদি আমাকে তার অর্থ বলতে না পার, তবে তোমরাই আমাকে ত্রিশটা জামা ও ত্রিশ জোড়া কাপড় দেবে।
14 তারা বলল, ‘ধাঁধাটা বল, আমরা শুনি। তিনি তাদের বললেন :
খাদক থেকে নির্গত হল খাদ্য,
শক্তিশালী থেকে নির্গত হল মিষ্টান্ন।
তিন দিন গেল, কিন্তু তারা ধাঁধাটার অর্থ বুঝতে পারল না।
15 চতুর্থ দিনে তারা সামসোনের স্ত্রীকে বলল, 'তোমার স্বামীকে ফুসলাও, যেন তিনি সেই ধাধার অর্থ আমাদের বলেন, নইলে আমরা তোমাকে ও তোমার পিতৃকুলকে সবাইকেই আগুনে পুড়িয়ে মারব। তোমরা কি আমাদের নিঃস্ব করার জন্যই এখানে নিমন্ত্রণ করেছ?
16 তাই সামসোনের স্ত্রী স্বামীর কাছে কাঁদতে লাগল; তাঁকে বলল, 'তুমি আমাকে কেবল ঘৃণাই করছ, ভালবাস না; আমার স্বজাতীয়দের একটা ধাঁধা বললে আর তার অর্থ আমাকে বুঝিয়ে দিলে না!' তিনি তাকে বললেন, 'দেখ, আমার পিতামাতাকেও যখন তা বুঝিয়ে দিইনি, তখন কি তোমাকেই বোঝাব?
17 উৎসব-সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত তাঁর স্ত্রী তাঁর কাছে কাদতে থাকল, আর তাঁকে এত পীড়াপীড়ি করল যে, সপ্তম দিনে তিনি তাকে তার অর্থ বলে দিলেন; আর সে তার স্বজাতীয়দের কাছে ধাঁধার অর্থ বলে দিল।
18 তাই সপ্তম দিনে, তিনি মিলন-কলে ঢোকবার আগে, শহরের লোকেরা সামসোনকে বলল :
মধুর চেয়ে মিষ্টি কী?
সিংহের চেয়ে শক্তিশালী কি?'
তিনি উত্তরে তাদের বললেন,
“তোমরা যদি আমার গাভী দিয়ে চাষ না করতে,
আমার ধাঁধার অর্থ কখনও খুঁজে পেতে না।'
19 তখন প্রভুর আত্মা তাঁর উপরে প্রবলভাবে নেমে পড়ল, আর তিনি আস্কালোনে নেমে গিয়ে সেখানকার ত্রিশজন মানুষকে মেরে ফেলে তাদের পোশাক নিলেন, আর বাঁধার অর্থ যারা বলে দিয়েছিল, তাদের তিনি জোড়া জোড়া কাপড় দিলেন। এবং ক্রোধে উত্তপ্ত হয়ে পিতার বাড়িতে ফিরে গেলেন।
20 পরে সামসোনের যে সাথী তাঁর বিবাহের সঙ্গী হয়েছিল, সামসোনের স্ত্রীকে তাকেই দেওয়া হল।