1 তখন প্রভু মোশীকে বললেন, 'আরোনকে বল, তোমার লাঠি দিয়ে যত নদী, খাল, বিলের উপরে হাত বাড়িয়ে মিশর দেশের উপরে বেঙ আনাও।
2 আর আরোন মিশরের সমস্ত জলাশয়ের উপরে তাঁর হাত বাড়ালে বেঙ উঠে এসে মিশর দেশ আচ্ছন্ন করল।
3 কিন্তু মন্ত্রজালিকেরাও তাদের জাদুবলে একই কাজ সাধন করে মিশর দেশের উপরে বেঙ আনাল।
4 ফারাও তখন মোশী ও আরোনকে ডাকিয়ে বললেন, 'প্রভুর কাছে মিনতি কর, যেন তিনি আমা থেকে ও আমার প্রজাদের মধ্য থেকে এই সমস্ত বেঙ দূর করে দেন; তাহলে আমি জনগণকে যেতে দেব, তারা যেন প্রভুর উদ্দেশে যজ্ঞ উৎসর্গ করতে পারে।'
5 মোশী ফারাওকে বললেন, 'আপনার সুবিধা অনুসারে আপনিই বলুন, কবে আপনার, আপনার পরিষদদের ও প্রজাদের জন্য আমাকে মিনতি করতে হবে যেন আপনি ও আপনার সমস্ত ঘর বেঙ থেকে মুক্তি পান ও বেঙ যেন কেবল নদীতেই থাকে।
6 তিনি উত্তর দিলেন, 'আগামী দিনের জন্য।' তখন মোশী বলে চললেন, 'আপনার কথামত হোক, যেন আপনি জানতে পারেন যে, আমাদের পরমেশ্বর প্রভুর মত কেউই নেই।
7 হ্যাঁ, বেঙগুলো আপনার কাছ থেকে ও আপনার ঘর থেকে, আপনার পরিষদ ও প্রজাদের মধ্য থেকে দূরে চলে যাবে, কেবল নদীতেই থাকবে।'
8 মোশী ও আরোন ফারাওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাইরে গেলেন, এবং প্রভু ফারাওর উপরে যে সমস্ত বেঙ এনেছিলেন, সেগুলোর বিষয়ে মোশী প্রভুর কাছে অনুরোধ রাখলেন;
9 প্রভু মোশীর অনুরোধ অনুসারে কাজ করলেন, আর সকল বেঙ ঘর, প্রাঙ্গণ ও মাঠের বাইরে মরল।
10 লোকে সেগুলোকে কুড়িয়ে বহু ঢিপি করলে দেশে দুর্গন্ধ হল।
11 কিন্তু ফারাও যখন দেখলেন, একটু স্বস্তি হল, তখন নিজের হৃদয় ভারী করলেন, তাঁদের কথা মানলেন না, ঠিক যেমন প্রভু আগে থেকে বলেছিলেন।
12 তখন প্রভু মোশীকে বললেন, 'আরোনকে বল, তোমার লাঠি বাড়িয়ে মাটির ধুলায় আঘাত হান, তাতে সেই ধুলা সমগ্র মিশর দেশে মশা হবে।
13 তাঁরা তাই করলেন: আরোন তাঁর লাঠি দিয়ে হাত বাড়িয়ে মাটির ধুলায় আঘাত হানলেন, আর মশা মানুষ ও পশুর গায়ে এসে পড়ল ; মিশর দেশের সব জায়গায়ই মাটির ধুলা মশা হয়ে গেল।
14 মন্ত্রজালিকেরা তাদের জাদুবলে মশা উৎপন্ন করার জন্য চেষ্টা করল বটে, কিন্তু অকৃতকার্য হল; ফলে মশা মানুষ ও পশুর গায়ে এসে পড়ল।
15 তখন মন্ত্রজালিকেরা ফারাওকে বলল, 'এ ঈশ্বরের আঙুল!' কিন্তু তবুও ফারাওর হৃদয় কঠিন হল, তিনি তাঁদের কথা মানলেন না, ঠিক যেমন প্রভু আগে থেকে বলেছিলেন।
16 তখন প্রভু মোশীকে বললেন, “তুমি খুব সকালে উঠে, ফারাও যখন জলের কাছে যাবে, তখন তার সামনে দাঁড়াও। তাকে বল : প্রভু একথা বলছেন : আমার জনগণকে যেতে দাও, তারা যেন আমার সেবা করে!
17 যদি আমার জনগণকে যেতে না দাও, তবে দেখ, আমি তোমাতে, তোমার সকল পরিষদে, তোমার জনগণে ও তোমার ঘরগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে ডাঁশ পাঠাব : মিশরীয়দের ঘরগুলো, এমনকি তাদের বাসভূমিও ডাঁশে ভরে উঠবে।
18 কিন্তু সেদিন আমি, আমার জনগণ যেখানে বাস করছে, সেই গোশেন প্রদেশ পৃথক রাখব : সেখানে ডাঁশ হবে না, যেন তুমি জানতে পার যে, এদেশের মধ্যে আমিই প্রভু।
19 আমার জনগণ ও তোমার জনগণের মধ্যে আমি মুক্তিদায়ী এক চিহ্ন রাখব। আগামীকালই এই চিহ্ন হবে।
20 প্রভু ঠিক তাই করলেন: ফারাওর প্রাসাদে ও তাঁর পরিষদদের ঘরে ও সমস্ত মিশর দেশে ডাঁশের বড় বড় ঝাঁক এসে পড়ল : ডাঁশের ঝাঁকের কারণে অঞ্চলটা উৎসন্ন হল।
21 ফারাও তখন মোশী ও আরোনকে ডাকিয়ে বললেন, 'তোমরা যাও, দেশের মধ্যেই তোমাদের পরমেশ্বরের উদ্দেশে যজ্ঞ উৎসর্গ কর।
22 কিন্তু মোশী উত্তর দিলেন, “তেমনটি করা উপযুক্ত নয়, কেননা আমাদের পরমেশ্বর প্রভুর উদ্দেশে বলিরূপে যা উৎসর্গ করি, তা মিশরীয়দের কাছে জঘন্য। দেখুন, মিশরীয়দের কাছে যা জঘন্য, তাদের চোখের সামনেই তা উৎসর্গ করলে তারা কি পাথর ছুড়ে আমাদের বধ করবে না?
23 আমরা তিন দিনের পথ মরুপ্রান্তরে গিয়ে, আমাদের পরমেশ্বর প্রভু যেমন আজ্ঞা দেবেন, সেইমত তাঁর উদ্দেশে যজ্ঞ উৎসর্গ করব।'
24 ফারাও বললেন, “আমি তোমাদের যেতে দিচ্ছি, তোমরা মরুপ্রান্তরে গিয়ে তোমাদের পরমেশ্বর প্রভুর উদ্দেশে যজ্ঞ উৎসর্গ কর। কিন্তু বহুদূরে যেয়ো না ! এবং আমার হয়ে মিনতি কর।'
25 বললেন, “আমি তোমাদের যেতে দিচ্ছি, তোমরা মরুপ্রান্তরে গিয়ে তোমাদের পরমেশ্বর প্রভুর উদ্দেশে যজ্ঞ উৎসর্গ কর। কিন্তু বহুদূরে যেয়ো না ! এবং আমার হয়ে মিনতি কর।'
26 মোশী ফারাওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে প্রভুর কাছে মিনতি করলেন ;
27 আর প্রভু মোশীর অনুরোধ অনুসারে কাজ করলেন; তিনি ফারাও, তাঁর পরিষদ ও সমগ্র জনগণ থেকে সমস্ত ডাঁশের ঝাঁক দূর করলেন: একটাও বাকি রইল না।
28 কিন্তু এবারও ফারাও নিজের হৃদয় ভারী করলেন, জনগণকে যেতে দিলেন না।