Index

যাত্রাপুস্তক - Chapter 19

1 মিশর দেশ থেকে ইস্রায়েল সন্তানদের বেরিয়ে আসার পর তৃতীয় অমাবস্যায়, ঠিক সেই দিনেই, তারা সিনাই মরুপ্রান্তরে এসে পৌঁছল।
2 তারা রেফিদিম থেকে শিবির তুলে সিনাই মরুপ্রান্তরে এসে পৌঁছলে সেই মরুপ্রান্তরে শিবির বসাল ; ইস্রায়েল পর্বতের ঠিক সামনেই শিবির বসাল।
3 তখন মোশী পরমেশ্বরের কাছে উঠে গেলেন, আর প্রভু পর্বত থেকে তাঁকে ডেকে বললেন, “তুমি যাকোবকুলকে একথা বলবে, ইস্রায়েল সন্তানদের কাছে একথা ঘোষণা করবে:
4 আমি মিশরীয়দের প্রতি যা করেছি, তা তোমরা নিজেরাই দেখেছ; এও দেখেছ, কীভাবে আমি ঈগলের ডানায়ই তোমাদের বহন করে আমার কাছে নিয়ে এসেছি।
5 এখন, তোমরা যদি আমার প্রতি সম্পূর্ণ বাধ্য হয়ে আমার সন্ধি পালন কর, তবে সকল জাতির মধ্যে তোমরাই হবে আমার নিজস্ব অধিকার, কেননা সমস্ত পৃথিবী আমার!
6 আর আমার কাছে তোমরা হবে এক যাজকীয় রাজ্য, এক পবিত্র জনগণ। এই সমস্ত কথা তুমি ইস্রায়েল সন্তানদের বলবে।'
7 তখন মোশী এসে জনগণের প্রবীণবর্গকে আহ্বান করলেন, ও প্রভু তাঁকে যা কিছু আজ্ঞা করেছিলেন, সেই সকল কথা তাদের জানিয়ে দিলেন।
8 লোকেরা সবাই মিলে উত্তর দিল : 'প্রভু যা কিছু বলেছেন, আমরা তা সমস্তই করব।' মোশী-প্রভুর কাছে লোকদের কথা জানিয়ে দিলেন।
9 তখন প্রভু মোশীকে বললেন: 'দেখ, আমি নিবিড় মেঘে তোমার কাছে আসছি, তোমার সঙ্গে যখন কথা বলব, তখন লোকেরা যেন শুনতে পায়, এবং চিরকাল ধরে তোমাতে বিশ্বাস রাখতে পারে।' মোশী প্রভুর কাছে লোকদের কথা জানিয়ে দিলেন।
10 প্রভু মোশীকে বললেন, 'লোকদের কাছে যাও, আজ ও আগামীকাল তারা নিজেদের পবিত্রিত করুক, নিজ নিজ পোশাক ধুয়ে নিক
11 আর তৃতীয় দিনের জন্য সকলে প্রস্তুত হোক; কেননা তৃতীয় দিনে প্রভু সকল লোকের দৃষ্টিগোচরে সিনাই পর্বতের উপরে নেমে আসবেন।
12 তুমি লোকদের চারপাশে সীমা স্থির করে একথা বলবে, সাবধান, তোমরা পর্বতে আরোহণ করো না বা তার সীমা পর্যন্তও স্পর্শ করো না; যে কেউ পর্বত স্পর্শ করবে, তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
13 কোন হাত তাকে স্পর্শ করবে না: তাকে পাথরাঘাতে মরতে হবে বা তীরের আঘাতে বিদ্ধ হতে হবে; পশু হোক বা মানুষ হোক, সে বাঁচবে না! যখন তুরি দীর্ঘধ্বনি দেবে, তখন তারা পর্বতে উঠবে।”
14 মোশী পর্বত থেকে নেমে লোকদের কাছে এসে সকলকে নিজেদের পবিত্রিত করতে বললেন, এবং তারা নিজ নিজ পোশাক ধুয়ে নিল।
15 পরে তিনি লোকদের বললেন, 'তৃতীয় দিনের জন্য প্রস্তুত হও ; কোন স্ত্রীলোকের কাছে যেয়ো না।'
16 তৃতীয় দিনে ভোর হতেই শোনা গেল বজ্রধ্বনি, দেখা গেল বিদ্যুৎ-ঝলক, পর্বতের উপরে নিবিড় মেঘ উপস্থিত হল, বেজে উঠল দীর্ঘতম তুরিধ্বনি: শিবিরের সমস্ত লোক কাঁপতে লাগল।
17 মোশী লোক সকলকে শিবিরের মধ্য থেকে পরমেশ্বরের দিকে নিয়ে গেলেন, আর তারা পর্বতের পাদদেশে দাঁড়িয়ে রইল।
18 সিনাই পর্বত সম্পূর্ণই ধূমময় ছিল, কেননা প্রভু তার উপরে আগুনের মধ্যেই নেমে এসেছিলেন, আর তার ধূম অগ্নিকুণ্ডের ধূমের মত ঊর্ধ্বে উঠছিল আর সমস্ত পর্বত প্রচণ্ড ভাবে কাঁপছিল।
19 তুরিধ্বনির শব্দ তীব্রতম হতে হতে মোশী কথা বলছিলেন ও পরমেশ্বর এক কণ্ঠস্বরের মধ্য দিয়ে উত্তর দিচ্ছিলেন।
20 প্রভু সিনাই পর্বতের উপরে, পর্বতচূড়ায়, নেমে এলেন, এবং প্রভু মোশীকে সেই পর্বতচূড়ায় ডাকলেন ; আর মোশী আরোহণ করলেন।
21 প্রভু মোশীকে বললেন, ‘নেমে যাও, ও লোকদের সনির্বন্ধ আবেদন জানাও, দেখবার জন্য তারা যেন সীমা লঙ্ঘন করে প্রভুর দিকে না ছুটে আসে, পাছে বহুলোকের বিনাশ ঘটে।
22 যাজকেরা, যারা প্রভুর কাছে এগিয়ে আসে, তারাও নিজেদের পবিত্রিত করুক, পাছে প্রভু তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন।
23 মোশী প্রভুকে বললেন, 'জনগণ সিনাই পর্বতে উঠে আসতে পারে না, কারণ তুমি নিজেই তো কড়া আদেশ দিয়ে আমাদের বলেছিলে, পর্বতের সীমা স্থির কর, ও তা পবিত্র বলে ঘোষণা কর।
24 প্রভু তাঁকে বললেন, ‘যাও, এবার নেমে যাও; পরে আরোনকে সঙ্গে করে আবার উঠে এসো; কিন্তু যাজকেরা ও জনগণ প্রভুর কাছে উঠে আসবার জন্য যেন সীমা লঙ্ঘন না করে, পাছে তিনি তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন।'
25 মোশী লোকদের কাছে নেমে গিয়ে কথা বললেন।