1 আদিতে, যখন পরমেশ্বর আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকাজ শুরু করলেন,
2 যখন পৃথিবী নিরাকার ও শূন্যময় ছিল, অতল গহ্বরের উপর অন্ধকার বিরাজ করত, এবং ঐশ্বরিক এক বায়ু জলরাশির উপরে বইত,
3 তখন পরমেশ্বর বললেন, “আলো হোক; আর আলো হল।
4 পরমেশ্বর দেখলেন, আলো মঙ্গলময় ; পরমেশ্বর অন্ধকার থেকে আলো পৃথক করে দিলেন;
5 আর পরমেশ্বর আলোর নাম দিন রাখলেন, ও অন্ধকারের নাম রাখলেন রাত। সন্ধ্যা হল, প্রভাত এল—প্রথম দিন।
6 পরমেশ্বর বললেন, 'জলরাশি দু'ভাগে পৃথক করার জন্য জলরাশির মাঝখানে একটা ফাঁপা শক্ত পরদা হোক।
7 তেমন পরদা তৈরি করে পরমেশ্বর পরদার নিচের জলরাশি থেকে পরদার উপরের জলরাশি পৃথক করে দিলেন; আর সেইমতই হল।
8 পরমেশ্বর পরদার নাম আকাশ রাখলেন। সন্ধ্যা হল, প্রভাত এল—দ্বিতীয় দিন।
9 পরমেশ্বর বললেন, ‘আকাশের নিচের জলরাশি একস্থানেই মিলিত হোক, স্থল দেখা দিক। আর সেইমতই হল।
10 পরমেশ্বর স্থলের নাম ভূমি রাখলেন, জলরাশির নাম রাখলেন সমুদ্র ; আর পরমেশ্বর দেখলেন, তা মঙ্গলময়।
11 পরমেশ্বর বললেন, 'ভূমি সবুজ ঘাস উৎপন্ন করুক, এমন উদ্ভিদও উৎপন্ন করুক যা বীজ বহন করে, এবং পৃথিবী জুড়ে এমন ফল উৎপাদক গাছও উৎপন্ন করুক যাদের ফলের মধ্যে থাকবে নিজ নিজ জাত অনুযায়ী বীজ।' আর সেইমতই হল
12 ভূমি ঘাস উৎপন্ন করল, এমন উদ্ভিদও উৎপন্ন করল যা নিজ নিজ জাত অনুযায়ী বীজ বহন করে, এবং এমন ফল-উৎপাদক গাছও উৎপন্ন করল যাদের ফলের মধ্যে রয়েছে নিজ নিজ জাত অনুযায়ী বীজ। পরমেশ্বর দেখলেন, তা মঙ্গলময়।
13 সন্ধ্যা হল, প্রভাত এল—তৃতীয় দিন।
14 পরমেশ্বর বললেন, 'রাত্রি ও দিন পৃথক করার জন্য আকাশপরদায় নানা বাতি হোক; সেগুলি ঋতু, দিন ও বছর নির্দেশ করুক,
15 এবং পৃথিবীর উপরে আলো ছড়াবার জন্য বাতি হিসাবেই আকাশপরদায় থাকুক। আর সেইমতই হল :
16 পরমেশ্বর বড় সেই দু'টো বাতি তৈরি করলেন: বড়টা দিন নিয়ন্ত্রণের জন্য, আর তার চেয়ে ছোটটা রাত্রি নিয়ন্ত্রণের জন্য; তিনি তারানক্ষত্রও তৈরি করলেন।
17 পরমেশ্বর সেগুলোকে আকাশপরদায় বসালেন, যেন পৃথিবীর উপরে আলো ছড়ায়,
18 দিন ও রাত্রি নিয়ন্ত্রণ করে, এবং অন্ধকার থেকে আলো পৃথক করে। পরমেশ্বর দেখলেন, তা মঙ্গলময়।
19 সন্ধ্যা হল, প্রভাত এল—চতুর্থ দিন।
20 পরমেশ্বর বললেন, “জলরাশি অসংখ্য প্রাণীতে ভরে উঠুক, এবং পৃথিবীর উপরে আকাশপরদা জুড়ে পাখি উড়ুক।
21 পরমেশ্বর সেই বিরাট বিরাট সমুদ্র-দানব ও সেই সমস্ত অসংখ্য প্রাণী নিজ নিজ জাত অনুসারে সৃষ্টি করলেন। যেগুলো জলরাশিতে চলাফেরা করে; তিনি নিজ নিজ জাত অনুসারে সমস্ত উড়ন্ত পাখিও সৃষ্টি করলেন। পরমেশ্বর দেখলেন, তা মঙ্গলময়।
22 সেই সমস্ত কিছু পরমেশ্বর এই বলে আশীর্বাদ করলেন: “তোমরা ফলবান হও, বংশবৃদ্ধি কর, সমুদ্রের জলরাশি ভরিয়ে তোল; পাখিরা স্থলভূমিতে বংশবৃদ্ধি করুক।"
23 সন্ধ্যা হল, প্রভাত এল—পঞ্চম দিন।
24 পরমেশ্বর বললেন, ‘পৃথিবী নিজ নিজ জাত অনুযায়ী গবাদি পশু, সরিসৃপ ও বন্যজন্তু—নিজ নিজ জাত অনুযায়ী সমস্ত প্রাণী উৎপন্ন করুক। আর সেইমতই হল।
25 পরমেশ্বর নিজ নিজ জাত অনুযায়ী বন্যজন্তু, নিজ নিজ জাত অনুযায়ী গবাদি পশু, ও নিজ নিজ জাত অনুযায়ী ভূমির সমস্ত সরিসৃপও তৈরি করলেন। পরমেশ্বর দেখলেন, তা মঙ্গলময়।
26 পরমেশ্বর বললেন, ‘এসো, আমরা আমাদের আপন প্রতিমূর্তিতে, আমাদের আপন সাদৃশ্য অনুসারে মানুষ নির্মাণ করি : তারা সমুদ্রের মাছের উপরে, আকাশের পাখিদের উপরে, গবাদি পশুদের উপরে, গোটা পৃথিবীর উপরে, ও মাটির বুকে চরে যত সরিসৃপের উপরে প্রভুত্ব করুক।'
27 পরমেশ্বর তাঁর নিজের প্রতিমূর্তিতে মানুষকে সৃষ্টি করলেন;
পরমেশ্বরেরই প্রতিমূর্তিতে তাকে সৃষ্টি করলেন :
পুরুষ ও নারী করে তাদের সৃষ্টি করলেন।
28 পরমেশ্বর তাদের আশীর্বাদ করলেন ;
পরমেশ্বর তাদের বললেন,
"ফলবান হও, বংশবৃদ্ধি কর,
পৃথিবী ভরিয়ে তোল, তা বশীভূত কর ;
সমুদ্রের মাছের উপরে,
আকাশের পাখিদের উপরে,
ও ভূমির যত সরিসৃপের উপরে প্রভুত্ব কর।”
29 পরমেশ্বর বললেন, দেখ, সারা পৃথিবী জুড়ে যত উদ্ভিদ বীজ বহন করে, ও ফল-উৎপাদক যত গাছ ফলের মধ্যে বীজ বহন করে, তা সবই আমি তোমাদের দিচ্ছি; তা হবে তোমাদের খাদ্য।
30 সমস্ত বন্যজন্তু, আকাশের সমস্ত পাখি ও মাটির বুকে চলাচল করে সমস্ত জীব—এই সকল প্রাণীকে আমি খাদ্যরূপে সবুজ যত উদ্ভিদ দিচ্ছি।' আর সেইমতই হল।
31 পরমেশ্বর তাঁর তৈরি করা সমস্ত কিছুর দিকে তাকিয়ে দেখলেন; আর সত্যি, সেই সমস্ত কিছু খুবই মঙ্গলময়। সন্ধ্যা হল, প্রভাত এল— ষষ্ঠ দিন।