1 সেই যেরিখো ইস্রায়েল সন্তানদের সামনে রুদ্ধ ও আটকানো ছিল কেউই বাইরে যেত না, কেউই ভিতরে আসত না।
2 তখন প্রভু যোওয়াকে বললেন, দেখ, আমি যেরিখো, তার রাজাকে ও তার বলবান যোদ্ধাদের তোমার হাতে তুলে দিচ্ছি।
3 যোদ্ধা যে তোমরা, সকলেই শহরটার চারপাশ প্রদক্ষিণ করবে; তোমরা একবার করে শহরটাকে প্রদক্ষিণ করবে; আর এইভাবে ছ' দিন করবে।
4 সাতজন যাজক সন্ধি-মঞ্জুষার আগে আগে ভেড়ার শিং দিয়ে তৈরী সাতটা তুরি বইবে; পরে সপ্তম দিনে তোমরা সাতবার শহরটাকে প্রদক্ষিণ করবে ও যাজকেরা তুরি বাজাবে।
5 যখন শিঙা বাজবে, তখন তোমরা সেই তুরিধ্বনি শোনামাত্র গোটা জনগণ তীব্র রণধ্বনি তুলবে; তখন নগরপ্রাচীর খসে পড়বে এবং লোকেরা প্রত্যেকেই সরাসরি প্রবেশ করবে।
6 নূনের সন্তান যোওয়া যাজকদের কাছে ডেকে বললেন, 'তোমরা সন্ধি-মঞ্জুষাটিকে তোল, এবং সাতজন যাজক প্রভুর মঞ্জুষার আগে আগে ভেড়ার শিং দিয়ে তৈরী সাতটা তুরি বয়ে নিক।
7 জনগণকে তিনি বললেন, 'এগিয়ে গিয়ে শহরটাকে ঘিরে রাখ, এবং পুরোভাগে সেনাদল প্রভুর মঞ্জুষার আগে আগে চলুক।'
8 জনগণের কাছে যোওয়ার কথা শেষ হলে সেই সাতজন যাজক যারা প্রভুর আগে আগে ভেড়ার শিং দিয়ে তৈরী সাতটা তুরি বইত, তারা তুরি বাজাতে বাজাতে চলতে লাগল, ও প্রভুর সন্ধি-মঞ্জুষা তাদের পিছু পিছু চলল।
9 পুরোভাগের সেনাদল তুরিবাদক যাজকদের আগে আগে চলছিল, এবং পশ্চাদ্ভাগের সেনাদল মঞ্জুষার পিছু পিছু চলছিল : তুরিধ্বনির সঙ্গে সঙ্গে সকলে এগিয়ে চলছিল।
10 জনগণকে যোওয়া এই বলে আজ্ঞা করেছিলেন, “কোন রণধ্বনি তুলো না, তোমাদের গলার শব্দও শুনতে দিয়ো না, তোমাদের মুখ থেকে কোন কথা যেন না বের হয়, যেপর্যন্ত আমি না বলি: রণধ্বনি তোল; তখনই তোমাদের রণধ্বনি তুলতে হবে।'
11 এইভাবে তিনি প্রভুর মঞ্জুষাটিকে শহরের চারপাশ একবার করে প্রদক্ষিণ করালেন; পরে তারা শিবিরে ফিরে এসে সেখানে রাত কাটাল।
12 যোওয়া খুব সকালে উঠলেন, এবং যাজকেরা প্রভূর মঞ্জুষা তুলে নিল।
13 ভেড়ার শিং দিয়ে তৈরী সাতটা তুরি বইতে বইতে সেই সাতজন যাজক প্রভুর মঞ্জুষার আগে আগে চলছিল, চলতে চলতে তারা তুরি বাজাচ্ছিল; একই সময়ে পুরোভাগের সেনাদল তাদের আগে আগে চলছিল, এবং পশ্চাদ্ভাগের সেনাদল প্রভুর মঞ্জুষার পিছু পিছু চলছিল : তুরিধ্বনির সঙ্গে সঙ্গে সকলে এগিয়ে চলছিল।
14 তারা দ্বিতীয় দিনে শহর একবার করে প্রদক্ষিণ করে শিবিরে ফিরে এল। তারা ছ' দিন ধরে সেইমত করল।
15 সপ্তম দিনে তারা ভোরে অরুণোদয়ের সময়ে উঠে সাতবার সেইমত শহর প্রদক্ষিণ করল : কেবল সেই দিনেই তারা সাতবার শহর প্রদক্ষিণ করল।
16 সপ্তম বারে যাজকেরা তুরি বাজালে যোওয়া লোকদের বললেন, ‘রণধ্বনি তোল ! কেননা প্রভু শহরটাকে তোমাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।
17 শহরটা ও সেখানকার সমস্ত বস্তু প্রভুর উদ্দেশে বিনাশ-মানতের বস্তু হবে; কেবল রাহাব বেশ্যা ও যারা তার সঙ্গে ঘরে আছে, তারাই বাঁচবে, কারণ সে আমাদের পাঠানো দূতদের লুকিয়ে রেখেছিল।
18 শুধু একটি কথা যা কিছু বিনাশ মানতের বস্তু, সেই বিষয়ে সাবধান থাক, পাছে বিনাশ-মানত পূরণ করতে করতে তোমরা বিনাশ-মানতের বস্তু থেকে কিছুটা নিলে ইস্রায়েলের শিবিরকেই বিনাশ-মানতের বস্তু করে ফেল ও তার দুর্দশা ঘটাও।
19 রুপো, সোনা, ব্রঞ্জ ও লোহার যত পাত্র প্রভুর উদ্দেশে পবিত্রীকৃত; সেই সমস্ত কিছু প্রভুর ধনভাণ্ডারে যাবে।
20 তখন লোকেরা রণধ্বনি তুলল ও তুরি বাজল। তুরিধ্বনি শুনে লোকেরা তীব্র রণধ্বনি তোলার সঙ্গে সঙ্গে নগরপ্রাচীর খসে পড়ল ; তখন লোকেরা প্রত্যেকে সরাসরি শহরে উঠে গিয়ে শহরটাকে হস্তগত করল।
21 তারা শহরের সকলকেই বিনাশ-মানতের বস্তু করল যুবা থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত নর-নারী সকলকে, এমনকি বলদ, ভেড়া ও গাধা সবই খড়ের আঘাতে প্রাণে মারল।
22 যে দু'জন লোক অঞ্চলটা পরিদর্শন করেছিল, যোওয়া তাদের বললেন, 'সেই বেশ্যার ঘরে যাও, এবং তার কাছে যে শপথ করেছ, সেই অনুসারে সেই স্ত্রীলোককে ও তার সমস্ত সম্পদ বের করে আন।
23 সেই দুই যুবা গুপ্তচর ঢুকে রাহাবকে এবং তার পিতামাতাকে ও ভাইদের এবং তার সমস্ত সম্পদ বের করে আনল ; তার গোটা গোত্রের মানুষকেও বের করে এনে ইসায়েলের শিবিরের বাইরে বিশেষ এক জায়গায় রাখল।
24 পরে লোকেরা শহর ও সেখানকার সবকিছু আগুনে পুড়িয়ে দিল ; শুধু রুপো ও সোনা, এবং ব্রঞ্জের ও লোহার পাত্রগুলো প্রভুর গৃহের ধনভাণ্ডারে রাখল।
25 কিন্তু যোশুয়া রাহাব বেশ্যাকে, তার পিতৃকুলকে ও তার সমস্ত সম্পদ বাঁচিয়ে রাখলেন ; আর সে আজ পর্যন্ত ইস্রায়েলের মধ্যে বাস করে আসছে; কারণ যেরিখো পরিদর্শন করার জন্য যোওয়া যে দুই দূত পাঠিয়েছিলেন, সে তাদের লুকিয়ে রেখেছিল।
26 সেসময় যোওয়া লোকদের এই শপথ করালেন : 'যে কেউ উঠে এই যেরিখো শহর পুনঃস্থাপন করবে, সে প্রভুর সামনে অভিশপ্ত হোক; তার নিজের জ্যেষ্ঠ পুরোর উপরেই সে শহরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবে; তার নিজের কনিষ্ঠ পুত্রের উপরেই নগরদ্বার বসাবে!'
27 তাই প্রভু যোগুয়ার সঙ্গে সঙ্গে থাকলেন, আর তাঁর খ্যাতি সারা অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল।