Index

Tobit - Chapter 14

1 এইখানে তোবিতের স্তুতিগানের সমাপ্তি।
2 তোবিত একশ' বারো বছর বয়সে প্রাণত্যাগ করলেন, তাঁকে মর্যাদার সঙ্গে নিনিভেতে সমাধি দেওয়া হল। তিনি যখন অন্ধ হন, তখন তাঁর বয়স বাষট্টি বছর; সুস্থতা ফিরে পাবার পর তিনি সুখে জীবনযাপন করলেন, অর্থদান অনুশীলন করলেন, এবং অবিরত ঈশ্বরকে ধন্য বললেন ও তাঁর মহত্ত্বের স্তুতিবাদ করে চললেন।
3 তাঁর মৃত্যুক্ষণে তিনি তাঁর ছেলে তোরিয়াসকে কাছে ডেকে তাঁকে এই নির্দেশবাণী দিলেন :
4 সন্তান, তোমার ছেলেমেয়েদের নিয়ে শীঘ্রই মেদিয়া অঞ্চলে গিয়ে আশ্রয় নাও, কেননা নাহুম নিনিভের উপরে যে ঐশবাণী উচ্চারণ করেছেন, আমি তা বিশ্বাস করি। ঈশ্বর যাঁদের প্রেরণ করেছেন, ইস্রায়েলের সেই নবীরা যেমন বলে দিয়েছেন, সমস্ত কিছুই সেইমত সিদ্ধিলাভ করবে, আসিরিয়া ও নিনিভের বিষয়ে সমস্ত কিছু সেইমত বাস্তব হবে: তাঁদের একটা বাণীও ব্যর্থ হবে না। সময়মত সমস্ত কিছু ঘটবে। আসিরিয়া ও বাবিলনের চেয়ে মেদিয়াতেই বেশি নিরাপত্তা থাকবে; কেননা আমি জানি ও বিশ্বাস করি যে, ঈশ্বর যা কিছু বলে দিয়েছেন, তা সিদ্ধিলাভ করবে, তা ঘটবেই, সেই বাণীর একটা শব্দও ব্যর্থ হবে না। ইস্রায়েল দেশে বাস করে আমাদের যে সকল ভাই, তারা সকলে বিক্ষিপ্ত হবে, তাদের সুন্দর দেশ থেকে তাদের বন্দি অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হবে, এবং গোটা ইস্রায়েল দেশ মরুপ্রান্তর হবে। সামারিয়া ও যেরুসালেমও মরুপ্রান্তর হবে, এবং ঈশ্বরের গৃহ—এক কাল পর্যন্ত — উৎসন্ন ও পোড়া অবস্থায় পড়ে থাকবে।
5 পরে ঈশ্বর তাদের প্রতি আবার দয়া করবেন ও ইস্রায়েল দেশে তাদের ফিরিয়ে আনবেন। তারা গৃহটি পুনর্নির্মাণ করবেন, যদিও তা প্রথমটার মত সুন্দর হবে না – যতদিন না দিনগুলির সংখ্যা পূর্ণ হয়। পরে তারা সকলে নির্বাসনের দেশ থেকে ফিরবে, যেরুসালেমকে তার আপন পূর্ণ মহিমায় পুনর্নির্মাণ করবে, ঈশ্বরের গৃহটিও পুনর্নির্মিত হবে, যেমনটি ইস্রায়েলের নবীরা আগে বলে দিয়েছেন।
6 পৃথিবীর উপরে যত জাতি রয়েছে, তারা সকলে ফিরবে ও সত্যের শরণে ঈশ্বরকে ভয় করবে। সকলে তাদের সেই মিথ্যা-দেবতাদের ত্যাগ করবে, যারা মিথ্যায় তাদের পথভ্রষ্ট করেছে, এবং ধর্মময়তা পালনে সর্বযুগের ঈশ্বরকে ধন্য বলবে।
7 সেই দিনগুলিতে রেহাই পাওয়া সকল ইস্রায়েল সন্তান সরল অন্তরে ঈশ্বরকে স্মরণ করবে, সমবেত হয়ে যেরুসালেমে আসবে, এবং আব্রাহামের দেশে সবসময়ের মত নির্ভয়ে বাস করবে—দেশটি তাদেরই হবে। যারা সত্যের শরণে ঈশ্বরকে ভালবাসে, তারা আনন্দিত হবে; কিন্তু যারা পাপ ও অপকর্ম করে, তারা সারা পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন হবে।
8 এখন, সন্তানেরা, তোমাদের কাছে একটি আজ্ঞা রেখে যাচ্ছি : সত্যের শরণে ঈশ্বরের সেবা কর; তিনি যাতে প্রীত, তোমরা তেমন কাজই কর। তোমাদের ছেলেদেরও তোমরা ন্যায্যতা পালন করা, অর্থদান অনুশীলন করা, ঈশ্বরকে স্মরণ করা, তাঁর নাম সর্বদাই ধন্য বলা – সত্যের শরণে ও যথাশক্তিতেই তা করার আদেশ শেখাবে।
9 তবে তুমি, সন্তান, একদিন নিনিভে ছেড়ে চলে যাও, এখানে আর থেকো না। আমার পাশে তোমার মাতাকে সমাধি দেওয়ার পর, সেই একই দিনে তোমাকে নিনিভের সীমানার অভ্যন্তরে থাকতে হবে না। কেননা আমি দেখতে পাচ্ছি, তার মধ্যে বড় অধর্ম ও বড় শঠতা জয়ী হবে, কিন্তু লোকে তাতে লজ্জাবোধ করে না।
10 সন্তান, বিবেচনা করে দেখ, সেই নাদাব তার পালক-পিতা আহিকারের প্রতি কেমন ব্যবহার করল। সে কি জিয়ন্তই অধোলোকে নেমে যেতে বাধ্য হয়নি ? কিন্তু ঈশ্বর অপরাধীর মুখের উপরেই সেই অপরাধ ফিরিয়ে দিলেন : বস্তুত আহিকার আলোতে ফিরে এল, কিন্তু নাদার চিরন্তন অন্ধকারের মধ্যে গেল, কেননা আহিকারের প্রাণনাশের চেষ্টা করেছিল। অর্থদান অনুশীলন করেছিল বলে আহিকার নাদাবের পাতা মৃত্যু-ফাঁস এড়াল, কিন্তু নাদাব সেই ফাঁসে পড়ে নিজের সর্বনাশ নিজেই ঘটাল।
11 তাই, সন্তানেরা, অর্থদানের ফল কী ও শঠতা কোথায় চালনা করে, তা তোমরা দেখতে পাচ্ছ, শঠতা মৃত্যুতেই চালনা করে। কিন্তু দেখ, আমার প্রাণ এবার যাচ্ছে!” তারা তাঁকে আবার শয্যায় শুইয়ে রাখল তিনি মরলেন, ও তাঁকে মর্যাদার সঙ্গে সমাধি দেওয়া হল।
12 মাতার মৃত্যু হলে তোবিয়াস তাঁকে পিতার পাশে সমাধি দিলেন, পরে স্ত্রী-পুত্রদের সঙ্গে মেদিয়ার দিকে রওনা হলেন। তিনি একবাতানায় তাঁর শ্বশুর রাওয়েলের কাছে বসবাস করলেন;
13 শ্বশুর-শাশুড়ীর প্রতি তাঁদের বার্ধক্যে সম্মানের সঙ্গে যত্নবান হলেন, তাঁদের একবাতানায়, মেদিয়াতে, সমাধি দিলেন।
14 তোবিয়াস তাঁর পিতা তোবিতের সম্পত্তি বাদে রাগুয়েলের সম্পত্তিও উত্তরাধিকাররূপে পেলেন। সকলের দ্বারা সম্মানিত হয়ে তিনি একশ' সতের বছর বয়সে প্রাণত্যাগ করলেন। ং
15 তোবিয়াস তাঁর পিতা তোবিতের সম্পত্তি বাদে রাগুয়েলের সম্পত্তিও উত্তরাধিকাররূপে পেলেন। সকলের দ্বারা সম্মানিত হয়ে তিনি একশ' সতের বছর বয়সে প্রাণত্যাগ করলেন। মৃত্যুর আগে তিনি নিনিতের সর্বনাশের কথা শুনতে পেলেন, আর মেদিয়ার রাজা কিয়াক্সারেস বন্দি অবস্থায় যাদের মেদিয়াতে নিয়ে গেলেন, তিনি নিনিভের সেই সকল মানুষকেও দেখতে পেলেন। নিনিতে ও আসিরিয়ার লোকদের প্রতি ঈশ্বর যে দশা ঘটিয়েছিলেন, তার জন্য তোবিত ঈশ্বরকে ধন্য বললেন। তাই মৃত্যুর আগে তিনি নিনিভের দশার জন্য আনন্দ করার সুযোগ পেলেন এবং প্রভু ঈশ্বরকে ধন্য বললেন চিরদিন চিরকাল। আমেন।