Index

Tobit - Chapter 11

1 তাঁরা প্রায় নিনিভের উল্টো দিকে অবস্থিত কাসেরিনের কাছাকাছি এসে পৌঁছেছিলেন, এমন সময় রাফায়েল বললেন,
2 “তুমি তো জান, আমরা তোমার পিতাকে কেমন অবস্থায় ছেড়ে গেছিলাম।
3 এসো, তোমার স্ত্রীর আগে আগে আমরাই এগিয়ে যাই; অন্যেরা আসতে আসতে আমরা বাড়ি সাজিয়ে দিই।'
4 তাঁরা দু'জনে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে যেতে রাফায়েল তাকে বললেন, 'পিত্তিটা হাতে নাও।' কুকুর তখনও তাঁদের পিছু পিছু চলছিল।
5 সেসময়ে আন্না বসে ছিলেন; ছেলে যে পথে ফেরার কথা, সেদিকে তাকাচ্ছিলেন।
6 তিনি সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিত হলেন যে, সে-ই আসছে, তাই তার পিতাকে বললেন, 'দেখ, তোমার ছেলে আসছে, যে লোকটি তার সঙ্গে যাত্রা করছিল, সেও তার সঙ্গে আছে।'
7 তোবিয়াস পিতার কাছে এগিয়ে যাবার আগে রাফায়েল তাকে বললেন, 'আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি, তোমার পিতার চোখ খুলেই যাবে।
8 মাছটার পিত্তি তাঁর চোখের উপরে লেপে দাও; ঔষধটা সক্রিয় হয়ে তাঁর চোখ থেকে সেই সাদা চামড়াগুলো টেনে বের করবে। তবে তোমার পিতা দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়ে আলো দেখতে পাবেন।
9 আন্না আগে আগে দৌড়ে ছেলেকে গলা ধরে বললেন, 'আমি তোমাকে আবার দেখতে পেয়েছি, এবার মরতে পারি!' আর কান্নায় ভেঙে পড়লেন।
10 তোবিত অ উঠে দাঁড়ালেন ও পায়ে হোঁচট খেতে খেতে উঠানের দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলেন।
11 তোবিয়াস সেই মাছের পিত্তি হাতে করে তাঁর কাছে এগিয়ে এল। তাঁর চোখের উপরে ফুঁ দিয়ে তাঁকে কাছে টেনে নিয়ে বলল, 'পিতা, সাহস ধরুন!” তাই বলে সে সেই ঔষধ লেপে দিল, আর ঔষধটা কামড়ের মত কাজ করল :
12 তখন তোবিয়াস দু'হাত দিয়ে চোখের কোণ থেকে সেই সাদা চামড়া তুলে নিল।
13 তোবিত তার গলা ধরে কাঁদতে লাগলেন; তিনি বললেন, 'হে সন্তান, হে আমার চোখের আলো, আমি তোমাকে দেখতে পাচ্ছি!'
14 এবং বলে চললেন : 'ধন্য পরমেশ্বর! ধন্য তাঁর মহানাম! ধন্য তাঁর সকল পবিত্র দূত! আমাদের উপরে ধন্য তাঁর মহানাম, ধন্য তাঁর সকল দূত চিরকাল! কারণ তিনি আমাকে আঘাত করেছেন, আবার আমাকে দয়া করেছেন, আর আমি এখন আমার ছেলে তোবিয়াসকে দেখতে পাচ্ছি!'
15 তোবিয়াস আনন্দের সঙ্গে ও জোর গলায় ঈশ্বরের ধন্যবাদ-স্তুতি করতে করতে বাড়ির ভিতরে গেল; পরে সে পিতাকে সবকিছু জানিয়ে দিল : তার যাত্রা কেমন সফল হয়েছে ও সে কেমন করে রুপোর তাল ফিরিয়ে এনেছে, কি করে সে রাগুয়েলের মেয়েকে বিবাহ করেছে, কেমন করে সারা এখন পিছু পিছু আসছিল, এমনকি, এর মধ্যে নিনিভের নগরদ্বারের কাছাকাছিই ছিল।
16 তোবিত আনন্দের সঙ্গে ও ঈশ্বরের ধন্যবাদ স্তুতি করতে করতে পুত্রবধূর সঙ্গে দেখা করার জন্য নিনিভের নগরদ্বারের দিকে বেরিয়ে পড়লেন। নিনিভের অধিবাসীরা যখন দেখল, তোবিত কারও সাহায্য ছাড়াই হেঁটে বেড়াচ্ছেন ও এককালের মত তেজের সঙ্গেই পা ফেলে এগিয়ে যাচ্ছেন, তখন তারা আশ্চর্য হল ; তোবিত বিস্তারিত ভাবে তাদের বলছিলেন, কেমন করে ঈশ্বর তাঁকে দয়া দেখিয়ে তাঁর চোখ খুলে দিয়েছিলেন।
17 পরে তোবিত তাঁর ছেলে তোবিয়াসের বধূ সারার কাছে এসে তাকে আশীর্বাদ করলেন: “স্বাগতম, কন্যা! ধন্য তোমার ঈশ্বর, যিনি, হে কন্যা, তোমাকে আমাদের কাছে চালনা করেছেন। তোমার পিতা আশিসধন্য হোন, আমার ছেলে তোবিয়াস আশিসধন্য হোক, তুমিও, কন্যা, আশিসধন্যা হও! আশিসপূর্ণ আনন্দে তোমার এই নিজের বাড়িতে প্রবেশ কর; স্বাগতম! কন্যা, প্রবেশ কর!”
18 সেদিন নিনিতের সকল ইহুদীদের জন্য আনন্দের দিন হল;
19 তোবিতের আনন্দের সহভাগী হতে তাঁর ভাই আহিকার ও নাদাব এল;
20 এবং তোবিয়াসের বিবাহোৎসব আনন্দের মধ্যে সাত দিন ধরে উদ্যাপিত হল।