1 নেফালি গোষ্ঠীর আসিয়েল-বংশধর তোবিতের জীবনচরিত-পুস্তক : তোবিত তোবিয়েলের সন্তান, তোবিয়েল অনানিয়েলের সন্তান, আনানিয়েল আদুয়েলের সন্তান, আদুয়েল গাবায়েলের সন্তান।
2 আসিরিয়া-রাজ শালমানেসেরের আমলে তোবিতকে থিসবে থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল : এই হিসবে রয়েছে উত্তর গালিলেয়া প্রদেশে নেয়ালি-কাদেশের দক্ষিণে, পশ্চিম দিকে, সেফাতের উত্তরে।
3 আমি, তোবিত, আমার জীবনের সমস্ত দিন ধরে সত্য ও ধর্মময়তার পথে চলেছি। আসিরিয়া অঞ্চলে অবস্থিত নিনিভেতে আমার সঙ্গে নির্বাসিত ভাইদের ও স্বজাতীয়দের আমি বহু অর্থদানে উপকৃত করেছি।
4 আমার পিতৃপুরুষ নেয়ালির গোষ্ঠী যখন দাউদকুলকে ছেড়ে যেরুসালেম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, তখনও আমি ইস্রায়েল দেশে আমার গ্রামে ছিলাম, তখনও আমি যুবা। অথচ ইস্রায়েলের সকল গোষ্ঠীর মধ্যে একমাত্র যেরুসালেমই ছিল যজ্ঞবলি উৎসর্গের জন্য মনোনীত নগরী; এমনকি তার মধ্যে ঈশ্বরের আবাস সেই মন্দির নির্মিত হয়েছিল, যা ভাবী যুগের সকল মানুষের জন্য পবিত্র বলে ঘোষণা করা হয়েছিল।
5 ইস্রায়েল-রাজ যেরবোয়াম দান শহরে যে বাস্তুর তৈরি করেছিলেন, আমার সকল ভাই ও আমার পিতৃপুরুষ নেঙ্গালির গোষ্ঠীর সকলেই গালিলেয়ার পর্বতে পর্বতে সেই বাছুরের উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করত।
6 নানা পর্ব উপলক্ষে কেবল আমিই প্রায় যেরুসালেমে যেতাম; এভাবে আমি সেই বিধানের প্রতি বাধ্যতা দেখাতাম, যা চিরকালের মত সমগ্র ইয়ায়েলের জন্য আদিষ্ট। আমি তখন ফল ও পশুদের প্রথমাংশ, গবাদি পশুদের দশমাংশ ও আমার মেষগুলোর ছাঁটা প্রথম লোম সঙ্গে নিয়ে যেরুসালেমে দৌড়ে
7 আরোন-সন্তান যাজকদের হাতে যজ্ঞবেদির উদ্দেশে সবই তুলে দিতাম। যেরুসালেমে সেবায় নিযুক্ত লেবীয়দের কাছেও আমি গম, আঙুররস, তেল, ডালিম, ডুমুর ও অন্যান্য ফলের প্রথমাংশ দিয়ে দিতাম। পর পর ছ'বছর ধরে আমি দ্বিতীয় দশমাংশটিকে টাকায় পরিণত করে প্রতি বছর যেরুসালেমে গিয়ে সেইখানে তা রাখতাম।
8 যে সকল এতিম, বিধবা ও প্রবাসী মানুষ ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে বাস করে, তৃতীয় দশমাংশটি তাদেরই জন্য ছিল। তিন বছর অন্তর আমি তা উপহার রূপে সেখানে নিয়ে যেতাম, এবং মোশীর বিধানের বিধি অনুসারে ও আমাদের পিতৃপুরুষ আনানিয়েলের মাত্রা দেবোরার নির্দেশবাণী অনুসারে তাদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়াও করতাম; কেননা আমার পিতার মৃত্যুতে আমি এতিম হয়ে পড়েছিলাম।
9 আমার বয়স হলে আমি আন্না নামে আমার কুলের একজন মহিলাকে বিবাহ করলাম; সে আমার ঘরে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দিল, যার নাম তোবিয়াস রাখলাম।
10 আসিরিয়াতে নির্বাসনকাল এসে উপস্থিত হলে আমাকে দেশছাড়া করা হল, এবং শেষে আমি নিনিভেতে এসে পৌঁছলাম। আমার সকল ভাই ও আমার স্বজাতীয় লোক সকলেই বিজাতীয়দের খাবার খেত;
11 কিন্তু আমার পক্ষ থেকে, বিজাতীয়দের তেমন খাবার না খেতে আমি খুবই সতর্ক ছিলাম;
12 আর যেহেতু আমি সমস্ত প্রাণ দিয়ে ঈশ্বরের প্রতি আমার বিশ্বস্ততা রক্ষা করলাম,
13 সেজন্য পরাৎপর আমাকে শাল্মানেসেরের অনুগ্রহের পাত্র করলেন, ফলে আমি তাঁর সমস্ত বন্দোবস্তের দায়িত্বে নিযুক্ত হলাম।
14 আমি তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত মেদিয়া প্রদেশে যাত্রা করে তাঁর হয়ে সমস্ত বন্দোবস্ত করতাম; সেসময়েই আমি মেদিয়ায় অবস্থিত রাজেশে গাব্রিয়াসের ভাই গাবায়েলের কাছে গিয়ে বস্তায় করে দশ তলন্ত রুপো গচ্ছিত রাখলাম।
15 শাল্মানেসেরের মৃত্যুতে তাঁর সন্তান সেন্নাথেরিব তাঁর পদে রাজা হলেন : তখন মেদিয়ার সমস্ত রাস্তা অগম্য হওয়ায় আমি সেখানে আর ফিরে যেতে পারলাম না।
16 শালমানেসেরের সময়ে আমি অর্থদানে আমার স্বজাতীয় লোকদের বহুবার উপকৃত করতাম;
17 ক্ষুধিতদের দিতাম খাবার, বস্ত্রহীনদের কাপড়, এবং আমার স্বজাতীয় কোন মৃত মানুষকে নিনিতের নগরপ্রাচীরের পিছনে ফেলানো অবস্থায় দেখলে তাকে সমাধি দিতাম।
18 সেন্নাখেরিবের ঈশ্বরনিন্দার জন্য স্বর্গের রাজা তাঁকে শাস্তি দিলে তিনি যুদেয়া থেকে পালাতে বাধ্য হয়ে যখন ফিরে এলেন, তখন ফিরে এসে যাদের হত্যা করলেন, আমি তাদেরও সমাধি দিলাম—তাঁর ক্রোধে তিনি বহু বহু মানুষকেই হত্যা করেছিলেন। তাই আমি সমাধি দেবার জন্য তাদের মৃতদেহ চুরি করতাম, আর সেন্নাথেরিব বৃথাই তাদের খোঁজ করতেন।
19 কিন্তু নিনিতে-নিবাসী একজন লোক গিয়ে রাজাকে জানালেন, আমিই গোপনে সেই মৃতদেহগুলোর সমাধি দিয়েছিলাম। যখন আমি জানতে পারলাম, রাজা ব্যাপারটা জানতে পেরে প্রাণদণ্ড দেবার জন্য আমার খোঁজ করছেন, তখন ভয়ে অভিভূত হয়ে পালিয়ে গেলাম।
20 আমার সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হল, সবই রাজার ধনভাণ্ডারে চলে গেল। আমার কিছুই আর থাকল না; কেবল আমার স্ত্রী আন্না ও আমার ছেলে তোবিয়াস থাকল।
21 তবু চল্লিশ দিন কাটতে না কাটতেই রাজার সন্তানদের দু'জনে রাজাকে হত্যা করল ; তারপর তারা আরারাট দেশে আশ্রয় নিল। তাঁর সন্তান এসারহাদ্দোন তাঁর পদে রাজা হলেন। আমার ভাই আনায়েলের ছেলে আহিকারকে রাজ্যের কোষাধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত করা হল, তাকে সমস্ত বন্দোবস্তের দায়িত্বও দেওয়া হল।
22 তখন আহিকার আমার হয়ে প্রার্থনা করল, তাই আমি নিনিভেতে ফিরে আসতে পারলাম। আসিরিয়া-রা