Index

Tobit - Chapter 10

1 এদিকে প্রত্যেক দিন তোবিত দিনগুলি শুনছিলেন – যাবার জন্য কত দিন, ও ফেরবার জন্য কত দিন লাগতে পারে। দিনগুলির সংখ্যা পূর্ণ হলে তিনি যখন দেখলেন, ছেলেটি তখনও ফেরেনি,
2 তখন ভাবলেন, 'হতে পারে, কেউ তাকে ওখানে দেরি করিয়েছে! এও হতে পারে যে, গাবায়েল এর মধ্যে মারা গেছে, আর কেউ তাকে রুপো দেয় না।
3 আর তিনি দুশ্চিন্তা করতে লাগলেন।
4 তাঁর স্ত্রী আন্না শুধু বলছিলেন, 'আমার ছেলে মারা গেছে! সে আর জীবিতদের মধ্যে নেই।'
5 আর তিনি ছেলেটির বিষয়ে কাঁদতে ও বিলাপ করতে লাগলেন: বলছিলেন, 'হায় সন্তান, তুমি যে আমার চোখের আলো! আমি তোমাকে কেন যেতে দিয়েছি!'
6 আর তোবিত উত্তরে তাঁকে বলতেন, ‘চুপ চুপ, বোন! চিন্তা করো না। সে ভাল আছে। অবশ্যই অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটেছে, যার জন্য তাকে সেখানে দেরি করতে হচ্ছে। দেখ, তার সঙ্গে যে যাত্রা করছে, সে বিশ্বস্ত লোক, এমনকি, আমাদের ভাইদের একজন। বোন, তার জন্য হতাশ হয়ো না ;
7 কিছু দিনের মধ্যে সে এখানে এসে উপস্থিত হবে। কিন্তু তাঁর স্ত্রী তাঁকে প্রত্যুত্তরে বলতেন, 'ছাড়, আমাকে ভোলাতে চেষ্টা করো না। আমার ছেলে মারা গেছে!' আর সঙ্গে সঙ্গে তিনি, ছেলেটি যে পথ দিয়ে রওনা হয়েছিল, সেই পথে নজর রাখতে বাইরে যেতেন। তিনি প্রত্যেক দিন সেইভাবে করতেন, নিজের চোখ ছাড়া কারও চোখ বিশ্বাস করতেন না। সূর্য একবার অন্ত গেলে তিনি ঘরের ভিতরে ফিরে এসে শুধু কাঁদতেন, এবং ঘুমোতে না পেরে সারারাত বিলাপ করতেন।
8 বিবাহোৎসবের চৌদ্দ দিন কেটে গেলে পর—রাওয়েল তো তাঁর মেয়ের জন্য তা-ই করবেন বলে শপথ করেছিলেন – তোবিয়াস তাঁকে গিয়ে বলল, 'এবার আমাকে বিদায় দিন। আমার পিতামাতা নিশ্চয়ই আমাকে দেখবার শেষ আশাও ছেড়ে দিয়েছেন! তাই, পিতা, মিনতি করি, আমাকে বিদায় দিন, যেন আমার পিতার কাছে ফিরে যেতে পারি। আমি তো আপনাকে বলেছিলাম, কেমন অবস্থায় তাঁকে ছেড়ে এসেছিলাম।
9 রাগুয়েল উত্তরে তোবিয়াসকে বললেন, 'এখানে থেকে যাও, সন্তান; আমার সঙ্গে থেকে যাও। আমি তোমার পিতা তোবিতের কাছে দূত পাঠাব, তারা তাঁকে তোমার খবর জানাবে।' কিন্তু সে বলল, 'না, আপনার কাছে ভিক্ষা রাখি, আমার পিতার কাছে আমাকে যেতে দিন।
10 তখন রাগুয়েল উঠে তোবিয়াসের হাতে বধূ সারাকে তুলে দিলেন; সেইসঙ্গে দিলেন তাঁর সম্পত্তির অর্ধেক অংশ, দাস-দাসীকে, বলদ ও মেষ, গাধা ও উট, নানা পোশাক, টাকা ও কতগুলো জিনিসপত্র।
11 এইভাবে তিনি তাদের বিদায় দিলেন যেন আনন্দের মধ্যে যেতে পারে। তোবিয়াসের কাছে তিনি এই বিশেষ শুভেচ্ছা জানালেন : “সন্তান, সুস্থ থাক, তোমার শুভযাত্রা হোক! স্বর্গের প্রভু তোমাকে ও তোমার বধূ সারাকে প্রতিপালন করুন; মরার আগে আমি যেন তোমাদের সন্তানদের দেখতে পাই!'
12 তাঁর মেয়ে সারাকে তিনি বললেন, 'তোমার শ্বশুর ও তোমার শাশুড়ীর প্রতি অ সম্মান দেখাও, কারণ যাঁরা তোমাকে জন্ম দিয়েছেন, ঠিক তাঁদের মত তাঁরাই এখন থেকে তোমার পিতামাতা। কন্যা, শান্তিতে যাও; যতদিন জীবিত থাকব, ততদিন আমি যেন তোমার সম্বন্ধে কেবল শুভসংবাদই পেতে পারি।' তাদের শুভেচ্ছা জানাবার পর তিনি তাদের বিদায় দিলেন।
13 নিজের পক্ষ থেকে এস্লা তোবিয়াসকে বললেন, 'প্রিয়তম সন্তান ও ভাই, প্রভু তোমাকে এখানে আবার ফিরিয়ে আনুন ! আর মরবার আগে আমি যেন তোমার ও আমার মেয়ে সারার সন্তানদের দেখতে পাই। প্রভুর সামনেই আমি তোমার রক্ষায় আমার মেয়েকে তুলে দিলাম; তার জীবনে তাকে কখনও দুঃখ দিয়ো না। সন্তান, শান্তিতে যাও। এখন থেকে আমি তোমার মা ও সারা তোমার বোন। আমরা যেন একসঙ্গেই মঙ্গল ভোগ করতে পারি আমাদের জীবনের সমস্ত দিন ধরে। তাদের দু'জনকে চুম্বন করে তিনি তাদের বিদায় দিলেন; তারা আনন্দের মধ্যেই ছিল।
14 তোবিয়াস সুস্থ শরীরে ও আনন্দচিত্তে রাগুয়েলের কাছ থেকে বিদায় নিল; সে স্বর্গমর্ত্যের প্রভু সেই বিশ্বরাজকে ধন্য বলছিল, কারণ তিনি তার যাত্রা শুভ করেছিলেন। সে এই বলে রাগুয়েল ও এদ্বাকে আশীর্বাদ করল : 'আমার জীবনের সমস্ত দিন ধরে যেন আপনাদের সম্মান দেখাতে পারি, এ হোক আমার আনন্দ!”