1 বিবাহোৎসব একবার শেষ হলে তোবিত তাঁর ছেলে তোবিয়াসকে ডেকে বললেন, ‘সন্তান, তোমার সঙ্গে যে যাত্রা করেছে, তাকে তার উপযুক্ত মজুরি দেবার জন্য তোমাকে এখন একটু চিন্তা করতে হবে; এমনকি, নিরূপিত টাকার চেয়ে তাকে বেশিই দেওয়া উচিত।'
2 তোবিয়াস তাঁকে বলল, 'পিতা, মজুরি হিসাবে তাকে কত দেব? আমার সঙ্গে সে যে সমস্ত সম্পদ নিয়ে এসেছে, তাকে তার অর্ধেক দিলেও আমার লোকসান হবে না।
3 সে আমাকে সুস্থ শরীরে ও নিরাপদে ফিরিয়ে আনল, আমার স্ত্রীকে নিরাময় করল, আমার হয়ে রুপো আনতে গেল আর পরিশেষে তোমাকে সুস্থ করল! এই সমস্ত কিছুর জন্য তাকে মজুরি হিসাবে কত দেব?'
4 তোবিত উত্তর দিলেন, 'সে যে সমস্ত সম্পদ ফিরিয়ে আনল, তার অর্ধেক পাওয়াই ন্যায্য।'
5 তাই সে তার সাথীকে ডাকল, তাঁকে বলল, সমস্ত সম্পদ তুমি এনেছ, মজুরি হিসাবে তার অর্ধেক নিয়ে শান্তিতে বিদায় নাও।'
6 তখন রাফায়েল সেই দু'জনকে পাশে ডেকে তাঁদের বললেন, ‘ঈশ্বরকে ধন্য বল, তোমাদের প্রতি তিনি যে মঙ্গল সাধন করেছেন, সকল জীবিতের সামনে তা ঘোষণা কর। ধন্য কর তাঁর নাম, কর তাঁর নামগান! সর্বজাতির সামনে ঈশ্বরের কর্মকীর্তি যোগ্যরূপে ঘোষণা কর, তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে কখনও ক্ষান্ত হয়ো না।
7 রাজার গোপন কথা লুকিয়ে রাখা ভাল বটে, কিন্তু ঈশ্বরের কর্মকীর্তি ব্যক্ত ও প্রকাশ করা, তা সমীচীন। যা মঙ্গলকর, তোমরা তাই কর, তবে কোন অমঙ্গল তোমাদের উপর এসে পড়বে না।
8 উপবাসের সঙ্গে প্রার্থনা ও ন্যায়পরতার সঙ্গে অর্থদান, এ উত্তম কর্ম। অন্যায্যতার সঙ্গে ঐশ্বর্যের চেয়ে ন্যায্যতার সঙ্গে দরিদ্রতাই শ্রেয়। সোনা সঞ্চয় করার চেয়ে অর্থদান অনুশীলন করা শ্রেয়।
9 অর্থদান মৃত্যু থেকে নিষ্কার করে ও সমস্ত পাপ থেকে মানুষকে বিশুদ্ধ করে। যারা অর্থদান অনুশীলন করে, তারা দীর্ঘায়ু হবে।
10 যারা পাপ ও অপকর্ম করে, তারা নিজ প্রাণের শত্রু।
11 আমি তোমাদের কাছে পুরো সত্য প্রকাশ করতে যাচ্ছি, কিছুই গোপন রাখব না : ইতিমধ্যে তোমাদের এই উপদেশ দিয়েছি যে, রাজার গোপন কথা লুকিয়ে রাখা ভাল বটে, কিন্তু ঈশ্বরের কর্মকীর্তি প্রকাশ করা সমীচীন;
12 তাই একথা জেনে নাও যে, যখন তুমি ও সারা প্রার্থনায় রত ছিলে, তখন আমিই তোমাদের প্রার্থনার স্মৃতিচিহ্ন প্রভুর গৌরবের সাক্ষাতে উপস্থিত করতাম; তুমি যখন মৃতদের সমাধি দিতে, তখনও আমি তাই করতাম।
13 আর যখন ইতস্তত না করে তুমি উঠে ভোজ ছেড়ে সেই মৃতলোকের সমাধি-ব্যবস্থা করতে গিয়েছিলে, তখন আমি তোমার বিশ্বাস পরীক্ষা করতে প্রেরিত হয়েছি,
14 আর একই সময় ঈশ্বর তোমাকে ও তোমার পুত্রবধূ সারাকে নিরাময় করতে আমাকে প্রেরণ করলেন।
15 আমি রাফায়েল, সেই সপ্ত দূতের একজন, যাঁরা প্রভুর গৌরবের সাক্ষাতে প্রবেশ করতে সর্বদাই প্রস্তুত।'
16 তাঁরা দু'জনে আতঙ্কে অভিভূত হলেন; ভীষণ ভয়ে তাঁরা উপুড় হয়ে পড়লেন।
17 কিন্তু দূত তাঁদের বললেন, "ভয় পেয়ো না, তোমাদের মাঝে শান্তি বিরাজ করুক। ঈশ্বরকে ধন্য বল—যুগ যুগ ধরে।
18 আমি যখন তোমাদের সঙ্গে ছিলাম, তখন আমার নিজের অনুগ্রহে নয়, ঈশ্বরের ইচ্ছায়ই তোমাদের সঙ্গে ছিলাম : তাঁকেই তোমাদের সর্বদাই ধন্য বলতে হবে, তাঁরই বন্দনা করতে হবে।
19 তোমাদের এমন মনে হচ্ছিল যে, তোমরা আমাকে খেতে দেখছিলে, কিন্তু তাতে বাস্তবতার কিছুই ছিল না।
20 এখন তোমরা পৃথিবীতে প্রভুকে ধন্য বল ও ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাও। যিনি আমাকে প্রেরণ করেছেন, আমি তাঁর কাছে, ঊর্ধ্বলোকে, ফিরে যাচ্ছি। তোমাদের প্রতি এই যে সমস্ত কিছু ঘটেছে, তা সবই লিখে রাখ।'
21 আবার উঠে দাঁড়িয়ে তাঁরা আর তাঁকে দেখতে পেলেন না।
22 স্তুতিগান করে তাঁরা ঈশ্বরের বন্দনা করলেন; তাঁর এই নানা আশ্চর্য মহাকাজের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানালেন, যেহেতু ঈশ্বরের দূত তাঁদের কাছে দেখা দিয়েছিলেন।