1 মন্ত্রণাসভায় যারা চারপাশে উপস্থিত ছিল, সেই লোকদের কোলাহল প্রশমিত হওয়ার পর আসিরিয়ার সৈন্যদলের প্রধান সেনাপতি হলোফের্নেস সেই বিদেশীদের সমগ্র জনসমাবেশের সামনে ও সকল মোয়াবীয়দের সামনে আকিওরকে ভর্ৎসনা করে বললেন,
2 আকিওর, তুমি কে, আর এফ্রাইমের এই টাকায় কেনা-সৈন্যেরা কারা যে আমাদের মধ্যে তুমি আজ নবীর মত ব্যবহার করছ, আর এমন চেষ্টা করছ যেন আমরা ইস্রায়েল জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে পিছটান দিই? তুমি বলছ, তাদের ঈশ্বর ঊর্ধ্ব থেকে তাদের রক্ষা করবেন। বেশ, নেবুকাদ্রেজার ছাড়া আর কোন ঈশ্বরই বা আছেন? তিনি তাঁর নিজের শক্তি পাঠিয়ে পৃথিবীর বুক থেকে তাদের নিশ্চিহ্ন করবেন, তখন তাদের ঈশ্বরও তাদের রক্ষা করতে পারবে না।
3 বরং আমরা, তার দাস এই আমরাই তাদের যেন একটামাত্র মানুষের মতই ঝাঁটিয়ে দেব, কারণ আমাদের রণ-অশ্বের বলের সামনে তারা দাঁড়াতেই পারবে না।
4 আমরা তাদের নিজেদের ঘরের মধ্যে তাদের পুড়িয়ে দেব, তাদের পাহাড়পর্বত তাদের রক্ত খেয়ে মত্ত হয়ে উঠবে, তাদের যত মাঠ তাদের মৃতদেহে ভরে যাবে, আমাদের সামনে তাদের পাদতলও দাঁড়াতে পারবে না; না, তারা সকলে বিনষ্ট হবে: এই কথা সারা পৃথিবীর প্রভু স্বয়ং নেবুকাদেজারই বলছেন। কেননা তিনি কথা বলেছেন, আর তাঁর কথা বৃথা বলে প্রমাণিত হবেই না।
5 আর তোমার বিষয়ে, আম্মোনের টাকায় কেনা-সৈন্য হে আকিওর, তুমি যে এই সমস্ত কিছু বলেছ তোমার দুর্বিপাকের দিনে, তুমি আজ থেকে আমার মুখ আর দেখবে না, যতদিন না আমি মিশর থেকে আসা এই জাতের মানুষদের উপর প্রতিশোধ নিই!
6 তখন আমার সৈন্যদের অস্ত্র ও আমার বিপুল কর্মচারীদের বর্শা তোমার কোমর ভেদ করবে। হ্যাঁ, আমি যখন ইস্রায়েলের দিকে মুখ ফেরাব, তখন তাদের মৃতদেহের মধ্যে তোমারও মৃত্যু হবে।
7 আমার দাসেরা এখন তোমাকে পর্বতের উপরে নিয়ে গিয়ে আমার যাত্রাপথের নিকটবর্তী কোন একটা শহরে ছেড়ে দেবে;
8 তাদের সর্বনাশের সহভাগী না হওয়া পর্যন্ত তুমি মরবে না।
9 কিন্তু তুমি যদি মনে মনে আশা রাখ, তারা ধরা পড়বে না, তবে তোমার চেহারা এত বিষণ্ণ না হোক। আমি কথা বলেছি : আমার কোন কথা বৃথা যাবে না!'
10 তখন হলোফের্নেস, তাঁর তাঁবুতে যে দাসেরা সেবায় নিযুক্ত ছিল, তাদের হুকুম দিলেন, যেন আকিওরকে ধরে তারা বেথুলিয়ার দিকে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ইস্রায়েল সন্তানদের হাতে ছেড়ে দেয়।
11 তাঁর দাসেরা তাঁকে ধরে শিবিরের বাইরে নিয়ে গিয়ে খোলা মাঠ পেরিয়ে পার্বত্য অঞ্চলের দিকে চলে বেথুলিয়ার নিচে যে জলের উৎসধারা, সেখানে এসে পৌঁছল।
12 শহরের লোকেরা তাদের দেখতে পাওয়ামাত্র অস্ত্র ধারণ করে শহর থেকে বের হয়ে পর্বতচূড়ার দিকে গেল, একই সময়ে সকল গুলতিওয়ালা তাদের উপরে পাথর ছুড়তে লাগল যেন তারা আরোহণ করতে না পারে।
13 তাতে তারা আবার পর্বতের পাদতলে নেমে গিয়ে কোন রকম আশ্রয় পেল, এবং আকিওরকে বেঁধে পর্বতের পাদতলে শোয়ানো অবস্থায় ফেলে রেখে তাদের প্রভুর কাছে ফিরে গেল।
14 তখন ইস্রায়েল সন্তানেরা তাদের শহর থেকে নেমে তাঁর কাছে এগিয়ে এল, তাঁর বাঁধন খুলে দিল, ও তাঁকে বেথুলিয়ায় নিয়ে গিয়ে শহরের জননেতাদের সামনে উপস্থিত করল।
15 সেসময়ে প্রধানেরা ছিলেন সিমেয়োন গোষ্ঠীর মিথার সন্তান উজ্জিয়া, পথোনিয়েলের সন্তান খাব্রিস ও মেক্কিয়েলের সন্তান খামিস।
16 তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে শহরের সমস্ত প্রবীণবর্গকে ডেকে পাঠালেন, এবং সকল যুবক ও স্ত্রীলোক দৌড়ে সমাবেশের জায়গায় এসে উপস্থিত হল। সেই সমস্ত জনসমাবেশের মাঝখানে আকিওরকে দাঁড় করাবার পর উজ্জিয়া ঘটনার বিষয় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন।
17 তিনি, হলোফের্নেসের মন্ত্রণাসভায় যা বলা হয়েছিল, সেই বিষয়ে তাঁদের সবকিছু জানালেন ; হলোফের্নেস আসিরীয় নেতাদের মাঝে যা বলেছিলেন, এবং ইয়ায়েল জাতির বিরুদ্ধে যা করবেন বলে বড়াই করেছিলেন, এই সমস্ত কথাও বর্ণনা করলেন। "
18 তখন গোটা জনগণ প্রণিপাত করে ঈশ্বরকে আরাধনা করল; তারা বলে উঠল :
19 স্বর্গেশ্বর প্রভু, তাদের দর্পের দিকে চেয়ে দেখ, আমাদের জাতির অবমাননার বিষয়ে দয়া কর! যারা তোমার উদ্দেশে পবিত্রীকৃত, আজ তাদের দিকে মুখ তুলে চাও।'
20 পরে তারা আকিওরকে সান্ত্বনা দিল ও তাঁর মহাপ্রশংসাবাদ করল;
21 সভা শেষে উজ্জিয়া তাঁকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলেন ও সমস্ত প্রবীণবর্গের জন্য ভোজসভা দিলেন : সারারাত তাঁরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সহায়তা প্রার্থনা করলেন।