Index

Judith - Chapter 10

1 যুদিথ এইভাবে ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কাছে মিনতি জানালেন। প্রার্থ শেষ করে
2 তিনি মাটি থেকে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁর সেই দাসীকে ডেকে বাড়ির সেই ঘরে নেমে গেলেন, যেখানে থেকে সাব্বাৎ ও পর্বোৎসব কাটাতেন।
3 যে চটের কাপড় পরে ছিলেন, এখানে এসে তা খুলে দিলেন, বিধবার পোশাক ছেড়ে দিলেন, তারপর স্নান করে সর্বাঙ্গে ঘন সুগন্ধি তেল মাখলেন, এবং মাথ চুল দু'ভাগ করে মাথায় ভূষণটি দিলেন। পরে, তাঁর স্বামী মানাসে জীবিত থাকা তিনি যে পোশাক পরতেন, পর্বীয় সেই পোশাক পরে নিলেন;
4 পায়ে জুতে দিলেন, গলায় হার দিলেন এবং চুড়ি, আঙটি, মাকড়ি ও ঘরে তাঁর যত অলঙ্কা ছিল, তা পরে নিয়ে নিজেকে এমন সুন্দরী করলেন যে, পথে দেখা পাওয়া যে কোন পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।
5 শেষে তাঁর দাসীর হাতে এক ভিস্তি আঙুররস ও এক পাত্র তেল দিলেন, এবং ঝলসানো ময়দা, শুকনো ডুমুরফল ও শুদ্ধ রুটিতে একটা থলি ভরে এইসব পাত্র আটিতে বেঁধে দাসীর মাথায় দিলেন।
6 তখন তাঁরা বেথুলিয়ার নগরদ্বারের দিকে বেরিয়ে পড়ে সেখানে উজ্জিয়াকে পেলেন ; তিনি খাব্রিস ও থার্মিস নগরীর এই দু'জন প্রবীণের সঙ্গে অপেক্ষা করছিলেন;
7 তাঁরা যখন দেখলেন, যুদিথের চেহারা ভিন্ন ও তাঁর পোশাক অন্য রকম, তখন তাঁর সৌন্দর্যে আশ্চর্যান্বিত হলেন; তাঁকে বললেন :
8 আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর তোমাকে তাঁর অনুগ্রহে ঘিরে রাখুন! ইস্রায়েল সন্তানদের গৌরবে ও যেরুসালেমের মহাগৌরবে তিনি তোমার সঙ্কর সাফল্যমন্ডিত করুন।
9 যুদিথ ঈশ্বরের উদ্দেশে প্রণিপাত করলেন; পরে তাঁদের বললেন, “আমার জন্য নগরদ্বার খুলে দেওয়া হোক; আপনারা আমার প্রতি যে শুভেচ্ছা বাণী জানিয়েছেন, তা সফল করতে বেরিয়ে যাব।' যুদিও যেমন চাচ্ছিলেন, তাঁরা সেইমত যুবকদের নগরদ্বার খুলে দিতে হুকুম দিলেন।
10 দ্বার খুলে দেওয়া হলে যুদিও বেরিয়ে গেলেন, তাঁর সঙ্গে কেবল তাঁর সেই দাসী গেল। তিনি পর্বত থেকে নেমে যেতে যেতে নগরীর লোকেরা তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকল যে পর্যন্ত মুদিথ উপত্যকা পেরিয়ে গেলেন; তারপর তারা আর তাঁকে দেখতে পেল না।
11 তাঁরা উপত্যকার পথ ধরে সোজা সামনের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন, এমন সময় আসিরিয়ার এক প্রহরী দল তাঁদের দিকে এগিয়ে এল।
12 তারা তাঁকে ধরে জিজ্ঞাসা করল, 'তুমি কোন্ পক্ষের মানুষ? কোথা থেকে আসছ? কোথায় যাচ্ছ?' তিনি উত্তর দিলেন, “আমি হিব্রুদের মেয়ে, তাদের কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছি, কারণ তোমাদেরই হাতে তাদের তুলে দেওয়া হচ্ছে।
13 তাই আমি তোমাদের সমস্ত সৈন্যদলের প্রধান সেনাপতি হলোফের্নেসের উপস্থিতিতে আসতে চাই এবং বিশ্বাসযোগ্য খবর জানিয়ে তাঁর চোখের সামনে এমন প্রবেশপথ দেখাতে চাই, যা পার হয়ে তিনি এই সমস্ত পর্বত দখল করতে পারবেন, এমনকি তাঁর একটিমাত্র মানুষও বিনষ্ট হবে না।'
14 এই সমস্ত কথা শুনতে শুনতে ও তাঁর ভঙ্গি বিচার-বিবেচনা করতে করতে তারা আশ্চর্যান্বিতই হল, যেহেতু তাদের চোখে যুদিথকে খুবই সুন্দরী দেখাচ্ছিল; তারা তাঁকে বলল,
15 ‘এত শীঘ্রই নেমে এসে ও আমাদের প্রভুর সামনে এসে উপস্থিত হয়ে তুমি আসলে নিজের প্রাণ রক্ষা করেছ। তবে এবার তাঁর তাঁবুতে এসো; তাঁর হাতে তোমাকে তুলে না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের কয়েকজন তোমার সঙ্গে থেকে পথ চলবে।
16 একবার তাঁর সামনে এসে উপস্থিত হয়ে মনে মনে ভয়ে কম্পিত হয়ো না; বরং আমাদের যা কিছু বলেছ তা সবই তাঁকে বল, তবে তিনি তোমার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবেন।'
17 তাই নিজেদের মধ্য থেকে তারা একশ'জনকে বেছে নিল, যারা তাঁর ও তাঁর দাসীর পাশে পাশে থেকে হলোফের্নেসের তাঁবুতে তাঁদের নিয়ে গেল।
18 এদিকে নানা তাঁবুতে তাঁর আগমনের কথা ছড়িয়ে পড়ায় গোটা শিবিরে বড় ছুটাছুটি হচ্ছিল। হলোফের্নেসের কাছে যেন তাঁর কথা জানানো হয়, সেই অপেক্ষায় তিনি তখনও তাঁর তাবুর বাইরে আছেন, এমন সময় তাঁর চারদিকে লোকের ভিড় জমতে লাগল।
19 তারা তাঁর সৌন্দর্যে আশ্চর্যান্বিত হল, ও তাঁর কারণে ইস্রায়েল সন্তানদের বিষয়েও আশ্চর্যান্বিত হল; একে অপরকে বলছিল: 'যে জাতির এর মত নারী আছে, সেই জাতির মানুষকে কে অবজ্ঞা করবে? তাদের একজনকেও রেহাই না দেওয়া ভাল; তাদের কয়েকজনকে যেতে দাও, আর তারা সারা বিশ্বকে ভোলাবে!
20 হলোফের্নেসের রক্ষী-প্রহরী ও তার সকল দাসেরা বেরিয়ে এসে খুদিথকে তাঁবুর ভিতরে আনল।
21 হলোফেনেস বেগুনি ক্ষোম, সোনা, মরকত ও বহুমূল্য মণিমুক্তায় খচিত এক চাদোয়ার নিচে শয্যায় শুয়ে বিশ্রাম করছিলেন।
22 তাঁর কাছে যুদিথের আসার কথা জানানো হলে তিনি প্রবেশস্থানের ঘেরায় বেরিয়ে গেলেন ; তাঁর আগে আগে রুপোর মশাল।
23 যুদিথ তাঁর সাক্ষাতে ও তাঁর পরিষদদের সাক্ষাতে এগিয়ে এলে সকলে তাঁর মুখের সৌন্দর্যে আশ্চর্যান্বিত হলেন। হলোফের্নেসকে প্রণাম করতে যুদিথ উপুড় হলেন, কিন্তু দাসেরা মাটি থেকে তাঁকে উঠিয়ে নিল।