1 যুদিও গেয়ে উঠলেন : খঞ্জনির সুরে আমার ঈশ্বরের উদ্দেশে গেয়ে ওঠ গান করতালের তালে তালে প্রভুর উদ্দেশে গাও সামগান, তাঁর উদ্দেশে জাগিয়ে তোল স্তবগান, প্রশংসাগান, তাঁর নামকীর্তন কর, কর সেই নাম!
2 কারণ প্রভু যুদ্ধবিনাশী ঈশ্বর, তিনি তাঁর আপন জনগণের মধ্যেই নিজের শিবির স্থাপন করেন, যেন আমার অত্যাচারীদের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করেন।
3 উত্তর থেকে, পর্বতমালা থেকে আগিরিয়া নেমে এল, তার সহস্র সহস্র যোদ্ধাকে সঙ্গে করে সে নেমে এল, তার সংখ্যা রোধ করল যত খাদনদীর গতি, তার ঘোড়া ঢেকে দিল উপপর্বত সকল।
4 সে এমন হুমকি দিল যে, আমার দেশ পুড়িয়ে দেবে, খড়ের আঘাতে আমার যুবকদের ছিন্ন করবে, আমার দুধ-খাওয়া শিশুদের মাটিতে আছাড় মারবে, আমার ছোটদের লুণ্ঠিত সম্পদরূপে কেড়ে নেবে, আমার কুমারীদের ছিনিয়ে নেবে।
5 সর্বশক্তিমান প্রভু তাদের চেষ্টা ব্যর্থ করলেন —নারীরই হাত দ্বারা !
6 কেননা যুবকদের হাত দ্বারাই পড়ল তাদের বীর, তেমন নয়, শক্তি-দেবের সন্তানেরাই তাকে আঘাত করল, তেমনও নয়, দীর্ঘকায় যোদ্ধারাই তাকে ভূপাতিত করল, তেমনও নয়, মেরারির কন্যা যুদিথই বরং তাঁর মুখমণ্ডলের সৌন্দর্যে তাকে নিরস্ত্র করলেন।
7 তিনি বিধবা-সজ্জা ত্যাগ করলেন ইস্রায়েলে অত্যাচারিত সকলকে আরাম দেবার জন্য ; মুখে তিনি সুগন্ধি মাখলেন,
8 চুল কিরীটে ভূষিত করলেন, তাকে ভোলাবার জন্য ক্ষোম-পোশাক পরিধান করলেন।
9 তাঁর জুতো কেড়ে নিল তার চোখ, তাঁর সৌন্দর্য আঁকড়ে ধরল তার প্রাণ, আর তলোয়ার ছিন্ন করল তাঁর গলা!
10 পারসিক সকলে তাঁর সাহসে শিহরে উঠল, মেদীয় সকলে তাঁর বলে রোমাঞ্চিত হল।
11 আমার দীনজনেরা তুলল রণ-নিনাদ, আর ওরা ভীত হল ; আমার দুর্বলেরা জাগিয়ে তুলল চিত্কার, আর ওরা বিহ্বল হল : আমার আপনজনেরা তীব্র চিৎকার তুললেই ওরা পালাতে লাগল।
12 তারা ওদের বিধিয়ে দিল যেন ছোট মেয়েদেরই মত, ওদের বিদ্ধ করল যেন যুদ্ধে পলাতকেরই মত ; আমার প্রভুর সৈন্যশ্রেণীর চাপে ওরা মারা পড়ল।
13 আমার ঈশ্বরের উদ্দেশে গাইব নতুন স্তবগান : হে প্রভু, তুমি মহান, তুমি গৌরবময়, তুমি শক্তিতে আশ্চর্যময়, তুমি অপরাজেয়।
14 তোমার নিখিল সৃষ্টি করুক তোমার সেবা, কারণ তুমি কথা বলতেই সবকিছু হল, তুমি তোমার আত্মা পাঠাতেই সবকিছু গড়ে উঠল, তোমার কন্ঠস্বরের সামনে দাঁড়াবে, এমন কেউ নেই।
15 জলরাশির সঙ্গে পাহাড়পর্বতের ভিত্তিভূমি হবে কম্পান্বিত, তোমার সম্মুখে শৈলরাজি মোমের মত হবে বিগলিত ; কিন্তু যারা ভয় করে তোমায়, তাদের প্রতি তুমি নিত্যই প্রসন্ন থাকবে।
16 সুরভিত বলি, তা সামান্য জিনিস, আহুতিতে তোমার উদ্দেশে দক্ষ চর্বিও ন্যূনতামাত্র; কিন্তু যে কেউ প্রভুকে করে ভয়, সে নিত্যই মহান!
17 ধিক্ সেই জাতিগুলিকে, যারা আমার জনগণের বিরুদ্ধে ওঠে! বিচারের দিনে সর্বশক্তিমান প্রভু তাদের শাস্তি দেবেন ; তাদের দেহে তিনি ঢোকাবেন আগুন ও কীট, আর তারা যন্ত্রণায় কাঁদবে চিরকাল।
18 যেরুসালেমে এসে পৌঁছলে তারা প্রভুর কাছে প্রণিপাত করল, এবং জনগণ শুচীকৃত হওয়ার পর তারা তাদের আহুতিবলি ও স্বেচ্ছাকৃত নৈবেদ্য ও অর্ঘ্য উৎসর্গ করল।
19 লোকে যুদিথকে যা কিছু দান করেছিল, হলোফের্নেসের সেই সমস্ত দ্রব্য-সামগ্রী, এবং হলোফের্নেসের শয্যা থেকে তিনি নিজে যে চাঁদোয়া ছিঁড়ে নিয়েছিলেন, তাও ঈশ্বরের উদ্দেশে পবিত্রীকৃত অর্ধরূপে নিবেদন করলেন।
20 লোকেরা তিন মাস ধরে যেরুসালেমে পবিত্রধামের কাছে আনন্দ-ফূর্তি করতে থাকল, আর যুদিথও তাদের সঙ্গে থাকলেন।
21 এই সমস্ত দিন পর প্রত্যেকে যে যার এলাকায় ফিরে গেল; যুদিথ বেথুলিয়ায় ফিরে গিয়ে তাঁর নিজের সম্পদে বাস করলেন; তাঁর জীবনকালে সারা পৃথিবী জুড়ে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ল।
22 অনেকে তাঁর প্রতি মুগ্ধ হল, কিন্তু যেদিন তাঁর স্বামী মানাসে প্রাণত্যাগ করে তাঁর জনগণের সঙ্গে মিলিত হলেন, সেদিন থেকে তাঁর জীবনের সমস্ত দিন ধরে তিনি কোন পুরুষকে কাছে আসতে দিলেন না।
23 স্বামীর বাড়িতে থাকতে তাঁর বয়স বৃদ্ধি পাবার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সুনামও উত্তরোত্তর ছড়িয়ে পড়ল ; তিনি একশ' পাঁচ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকলেন: তাঁর সেই প্রিয়া দাসীকে ; তিনি মুক্ত করে দিলেন, পরে বেথুলিয়ায় তাঁর মৃত্যু হল, তাঁকে তাঁর স্বামী মানাসের সমাধিগুহাতে সমাধি দেওয়া হল।
24 ইস্রায়েলকুল তাঁর জন্য সাত দিন শোকপালন করল। তাঁর মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর সমস্ত সম্পত্তি তাঁর স্বামী মানাসের আত্মীয়দের মধ্যে ও নিজের আত্মীয়দের মধ্যে ভাগ ভাগ করে দিয়েছিলেন।
25 যুদিগের জীবনকালে ও তাঁর মৃত্যুর পরে বহুদিন ধরেও আর কেউই ইস্রায়েল সন্তানদের ভয় দেখাল না।