1 প্রভু মোশীকে আরও বললেন,
2 “সংক্রামক চর্মরোগে আক্রান্ত লোকের শুচীকরণের দিনে তার পক্ষে বিধান এই : তাকে যাজকের কাছে আনা হবে।
3 যাজক শিবিরের বাইরে গিয়ে পরীক্ষা করবে; আর যদি সে দেখতে পায় যে, লোকটির রোগের ঘা নিরাময় হয়েছে,
4 তবে যাজক, যাকে শুচীকত করতে হয়, সেই লোকের জন্য জীবন্ত দু'টো শুচি পাখি, এরসকাঠ, লাল পশম ও হিসোপ—এই • সব কিছু আনতে আজ্ঞা করবে।
5 যাজক একটা মাটির পাত্রে স্রোত জলের উপরে একটা পাখি জবাই করতে আজ্ঞা করবে;
6 পরে সে ওই জীবিত পাখি, এরসকাঠ, লাল পশম ও হিসোপ নিয়ে ওই স্রোত-জলের উপরে জবাই করা পাখির রক্তে জীবিত পাখির সঙ্গে সেই সব ডোবাবে,
7 এবং চর্মরোগ থেকে যাকে শুচীকৃত করতে হয়, সেই লোকের উপরে সাতবার জল ছিটিয়ে তাকে শুচি বলে ঘোষণা করবে, এবং ওই জীবিত পাখিকে খোলা মাঠের দিকে ছেড়ে দেবে।
8 তখন যাকে শুচীকৃত করতে হয়, সেই লোক তার পোশাক ধুয়ে নিয়ে ও সমস্ত চুল খেউরি করে জলে স্নান করবে, আর এইভাবে সে শুচি হবে ; তারপরে সে শিবিরে ঢুকতে পারবে, কিন্তু সাত দিন তাঁবুর বাইরে থাকবে।
9 সপ্তম দিনে সে তার মাথার চুল, দাড়ি, ভ্রূ ও গোটা দেহের লোম খেউরি করবে, এবং তার পোশাক ধুয়ে নিয়ে নিজে জলে স্নান করে শুচি হবে।
10 পরে শুচীকরণে নিযুক্ত যাজক, যাকে শুচীকৃত করতে হয়, সেই লোককে ও ওই সবকিছু নিয়ে সাক্ষাৎ-তাঁবুর প্রবেশদ্বারে প্রভুর সামনে দাঁড় করাবে।
11 যাজক একটা মেষশাবক নিয়ে তা সংস্কার-বলিরূপে উৎসর্গ করবে, এবং তা ও সেই এক লোগ তেল দোলনীয় নৈবেদ্যের রীতি অনুসারে প্রভুর সামনে দোলাবে।
12 যেখানে পাপার্থে বলি ও আহুতিবলি জবাই করা হয়, সেই পবিত্র স্থানে মেষশাবকটাকে জবাই করবে, কেননা যাজকের পক্ষে সংস্কার-বলি পাপার্থে বলির মত; তা পরমপবিত্র।
13 যাজক ওই সংস্কার বলির খানিকটা রক্ত নিয়ে, যাকে শুচীকৃত করতে হয়, সেই লোকের ডান কানের প্রান্ত, ডান হাতের বৃদ্ধাঙুল ও ডান পায়ের বৃদ্ধাঙুল ভিজিয়ে দেবে।
14 যাজক সেই এক লোগ তেলের কিছুটা অংশ নিয়ে নিজ বাঁ হাতের তালুতে ঢেলে দেবে।
15 তার বাঁ হাতে যে তেল রয়েছে, যাজক সেই তেলে নিজ ডান হাতের আঙুল চুবিয়ে আঙুল দিয়ে সেই তেল থেকে কিছুটা কিছুটা সাতবার প্রভুর সামনে ছিটিয়ে দেবে।
16 তার হাতে যে তেল, তার কিছুটা নিয়ে যাজক, যাকে শুচীকৃত করতে হয়, সেই লোকের ডান কানের প্রান্ত, ডান হাতের বৃদ্ধাঙুল ও ডান পায়ের বৃদ্ধাঙুল ভিজিয়ে দেবে— সংস্কার-বলির রক্ত যেখানে দেওয়া হয়েছিল, তার উপরেও।
17 তার হাতে বাকি যে তেল, তা নিয়ে যাজক, যাকে শুচীকৃত করতে হয়, সেই লোকের মাথায় তা ঢেলে দেবে; সে এইভাবেই প্রভুর সামনে তার জন্য প্রায়শ্চিত্ত-রীতি পালন করবে।
18 পরে যাজক পাপার্থে বলিদান উৎসর্গ করবে, এবং যাকে শুচীকৃত করতে হয়, তার শুচীকরণের জন্য প্রায়শ্চিত্ত-রীতি পালন করবে, এরপর আহুতিবলি জবাই করবে।
19 আহুতি ও শস্য-নৈবেদ্য বেদিতে উৎসর্গ করে যাজক তার জন্য প্রায়শ্চিত্ত-রীতি পালন করবে, আর এইভাবে সে শুচি হবে।
20 লোকটি যদি গরিব হয় ও এত যোগাবার সামর্থ্য তার না থাকে, তবে সে নিজের জন্য প্রায়শ্চিত্ত-রীতি পালন করাবার উদ্দেশ্যে সংস্কার-বলির জন্য একটা মেষশাবক, ও শস্য-নৈবেদ্য ও তেল-মেশানো সেরা ময়দার দশ ভাগের এক ভাগ ও এক লোগ তেল দোলনীয় রীতি অনুসারে নিবেদন করবে।
21 তার সামর্থ্য অনুসারে সে দু'টো ঘুঘু বা দু'টো পায়রার ছানাও আনবে : তার একটা হবে পাপার্থে বলিদানের জন্য, অন্যটা হবে আহুতির জন্য।
22 অষ্টম দিনে সে তার শুচীকরণের জন্য সাক্ষাৎ-তাঁবুর প্রবেশদ্বারে প্রভুর সামনে যাজকের কাছে সেগুলো আনবে।
23 যাজক সংস্কার বলিদানের মেষশাবক ও উল্লিখিত সেই এক লোগ তেল নিয়ে প্রভুর সামনে দোলনীয় নৈবেদ্যের রীতি অনুসারে তা দোলাবে।
24 পরে সে সংস্কার-বলিদানের মেষশাবক জবাই করবে, এবং যাজক সংস্কার বলির খানিকটা রক্ত নিয়ে, যাকে শুচীকৃত করতে হয়, সেই লোকের ডান কানের প্রান্ত, ডান হাতের বৃদ্ধাঙুল ও ডান পায়ের বৃদ্ধাঙুল ভিজিয়ে দেবে।
25 সেই তেল থেকে খানিকটা নিয়ে নিজ বাঁ হাতের তালুতে ঢেলে দেবে।
26 যাজক ডান হাতের আঙুল দিয়ে, বাঁ হাতে যে তেল আছে, তা থেকে কিছুটা কিছুটা সাতবার প্রভুর সামনে ছিটিয়ে দেবে।
27 তার হাতে যে তেল, তার কিছুটা নিয়ে যাজক, যাকে শুচীকৃত করতে হয়, সেই লোকের ডান কানের প্রান্ত, ডান হাতের বৃদ্ধাঙুল ও ডান পায়ের বৃদ্ধাঙুল ভিজিয়ে দেবে—সংস্কার-বলির রক্ত যেখানে দেওয়া হয়েছিল, তার উপরেও।
28 তার হাতে বাকি যে তেল, তা নিয়ে যাজক, যাকে শুচীকৃত করতে হয়, সেই লোকের মাথায় তা ঢেলে দেবে; সে এইভাবেই প্রভুর সামনে তার জন্য প্রায়শ্চিত্ত-রীতি পালন করবে।
29 পরে সে তার সামর্থ্য অনুসারে আনা দু'টো ঘুঘুর বা দু'টো পায়রার ছানার মধ্যে একটা উৎসর্গ করবে;
30 অর্থাৎ তার সামর্থ্য অনুসারে শস্য-নৈবেদ্যের সঙ্গে একটা পাপার্থে বলিরূপে, অন্যটা আহুতিবলিরূপে উৎসর্গ করবে, এবং যাজক, যাকে শুচীকৃত করতে হয়, তার জন্য প্রভুর সামনে প্রায়শ্চিত্ত রীতি পালন করবে।
31 সংক্রামক চর্মরোগের ঘা-আক্রান্ত যে লোকটি নিজের শুচীকরণ ব্যাপারে অসমর্থ, তার জন্য নির্দেশ এই।
32 প্রভু মোশী ও আরোনকে আরও বললেন, আমি যে দেশ অধিকাররূপে তোমাদের দিচ্ছি, সেই কানান দেশে তোমরা প্রবেশ করার পর যদি আমি তোমাদের সেই অধিকৃত দেশের কোন ঘরে সংক্রামক চর্মরোগের জীবানুর উদ্ভব ঘটাই,
33 তবে সেই ঘরের মালিক এসে যাজককে একথা জানাবে, "আমার মনে হয়, আমার ঘরে চর্মরোগের দাগের মত দাগ দেখা দিচ্ছে।”
34 তখন যাজক আজ্ঞা দেবে, ওই দাগ দেখবার জন্য সেই ঘরে তার ঢোকবার আগে যেন ঘরটা শূন্য করা হয়, পাছে ঘরের সমস্ত বস্তু অশুচি হয়; পরে যাজক ঘর দেখবার জন্য ঢুকবে।
35 যাজক সেই দাগ পরীক্ষা করবে; আর যদি সে দেখতে পায় যে, ঘরের দেওয়ালে দাগ নিম্ন ও কিছুটা সরুজ বা লাল হয়েছে, এবং তার দৃষ্টিতে দেওয়ালের গায়ের চেয়ে তা নিম্ন মনে হয়,
36 তবে যাজক ঘর থেকে বেরিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে সাত দিন ওই ঘর রুদ্ধ করে রাখবে;
37 সপ্তম দিনে যাজক আবার এসে পরীক্ষা করবে ; আর যদি সে দেখতে পায় যে, ঘরের দেওয়ালে সেই দাগ বেড়েছে,
38 তবে সে আজ্ঞা করবে, যেন আক্রান্ত পাথরগুলো উৎপাটন করে লোকেরা শহরের বাইরে অশুচি এক জায়গায় তা ফেলে দেয়।
39 পরে যাজক ঘরের ভিতরটা চারদিকে ঘষে পরিষ্কার করবে, ও তারা সেই ঘর্ষণের ধুলা শহরের বাইরে অশুচি এক জায়গায় ফেলে দেবে।
40 তারা সেই পাথরের জায়গায় অন্য পাথর বসাবে, ও অন্য প্রলেপ দিয়ে ঘর লেপে দেবে।
41 এইভাবে পাথর উৎপাটন করলে, ঘর ঘষলে ও লেপন করলে পর যদি আবার দাগ জন্মে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে, তবে যাজক এসে পরীক্ষা করবে;
42 আর যদি সে দেখতে পায় যে, ওই ঘরে দাগ বেড়েছে, তবে সেই ঘরে সংক্রামক রোগ আছে : সেই ঘর অশুচি।
43 লোকেরা ওই ঘর ভেঙে ফেলবে, এবং ঘরের পাথর, কাঠ ও প্রলেপ সবই শহরের বাইরে অশুচি এক জায়গায় নিয়ে যাবে।
44 ওই ঘর যতদিন রুদ্ধ থাকে, ততদিন যে কেউ তার ভিতরে যায়, সে সন্ধ্যা পর্যন্ত অশুচি থাকবে;
45 আর যে কেউ সেই ঘরে শোয়, সে তার পোশাক ধুয়ে নেবে ; এবং যে কেউ সেই ঘরে খায়, সেও তার পোশাক ধুয়ে নেবে।
46 কিন্তু যাজক ঢুকে যদি দেখে যে, সেই ঘর লেপনের পর দাগ আর বাড়েনি, তবে সে সেই ঘর শুচি বলে ঘোষণা করবে, কেননা দাগ নিরাময় হয়েছে।
47 সে সেই ঘর পাপমুক্ত করার জন্য দু'টো পাখি, এরসকাঠ, লাল পশম ও হিসোপ নেবে,
48 এবং একটা মাটির পাত্রে স্রোত-জলের উপরে একটা পাখি জবাই করবে :
49 পরে সে ওই এরসকাঠ, হিসোপ, লাল পশম ও জীবিত পাখি, এই সবকিছু নিয়ে জবাই করা পাখির রক্তে ও স্রোত-জলে ডুবিয়ে সাতবার ঘরে ছিটিয়ে দেবে।
50 এইভাবে পাখির রঙ স্রোত-জল, জীবিত পাখি, এরসকাঠ, হিসোপ ও লাল পশম, এই সবকিছু দিয়ে সেই ঘর পাপমুক্ত করবে।
51 পরে ওই জীবিত পাখি শহরের বাইরে খোলা মাঠের দিকে ছেড়ে দেবে, এবং ঘরের জন্য প্রায়শ্চিত্ত-রীতি পালন করবে; তখন ঘর শুচি হবে।
52 এই নির্দেশ সবধরনের চর্মরোগ ও ছুলি,
53 কাপড় ও ঘরের রোগ,
54 ফোলা, মামড়ি ও চিক্কণ চিহ্ন সংক্রান্ত,
55 যেন জানা যেতে পারে এই সমস্ত কখন অশুচি ও কখন শুচি। এ হল চর্মরোগ সংক্রান্ত নির্দেশ।'