1 অধিকার করার জন্য তুমি যে দেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছ, তোমার পরমেশ্বর প্রভু যখন সেই দেশে তোমাকে নিয়ে যাবেন, ও তোমার সামনে থেকে বহু জাতিকে—হিত্তীয়, গির্গাশীয়, আমোরীয়, কানানীয়, পেরিজীয়, হিব্বীয়, ও যেবুসীয়, তোমার চেয়ে বিরাট ও শক্তিশালী এই সাত জাতিকে দূর করবেন
2 আর তোমার পরমেশ্বর প্রভু যখন তোমার হাতে তাদের তুলে দেবেন আর তুমি তাদের পরাজিত করবে, তখন তাদের তুমি বিনাশ-মানতের বস্তুই করবে; তাদের সঙ্গে কোন সন্ধি করবে না, তাদের প্রতি দয়াও দেখাবে না।
3 তাদের সঙ্গে আত্মীয়তা করবে না, তুমি তার ছেলেকে তোমার মেয়েকে দেবে না, ও তোমার ছেলের জন্য তার মেয়ে নেবে না।
4 কেননা সে তোমার ছেলেকে আমার অনুসরণ করা থেকে সরিয়ে দেবে তারা যেন অন্য দেবতাদের সেবা করে; এতে তোমাদের উপরে প্রভুর ক্রোধ জ্বলে উঠবে আর তিনি তোমাকে এক নিমেষেই বিনাশ করবেন।
5 তোমরা বরং তাদের প্রতি এভাবেই ব্যবহার করবে: তাদের যত যজ্ঞবেদি উৎপাটন করবে, তাদের যত স্মৃতিস্তম্ভ টুকরো টুকরো করবে, তাদের যত পবিত্র দণ্ড কেটে ফেলবে ও তাদের যত দেবমূর্তি আগুনে পুড়িয়ে দেবে।
6 কেননা তুমি তোমার পরমেশ্বর প্রভুর উদ্দেশে পবিত্রীকৃতই এক জাতি : পৃথিবীর বুকে যত জাতি রয়েছে, তাদের মধ্য থেকে তোমার পরমেশ্বর প্রভু তাঁর নিজস্ব অধিকার হবার জন্য তোমাকেই বেছে নিয়েছেন।
7 সকল জাতির চেয়ে তোমরা সংখ্যায় বড়, এজন্যই যে প্রভু তোমাদের প্রতি আসক্ত হয়েছেন ও তোমাদের বেছে নিয়েছেন, তা নয়—প্রকৃতপক্ষে সকল জাতির মধ্যে তোমরা সংখ্যায় ছোট-
8 বরং প্রভু তোমাদের ভালবাসেন এবং তোমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে যে শপথ করেছেন তা তিনি রক্ষা করেন বলেই প্রভু শক্ত হাতে তোমাদের বের করে এনেছেন এবং দাসত্ব-অবস্থা থেকে, সেই মিশর-রাজ ফারাওর হাত থেকে তোমাদের পক্ষে মুক্তিকর্ম সাধন করেছেন।
9 সুতরাং জেনে রেখ : তোমার পরমেশ্বর প্রভু যিনি, তিনিই পরমেশ্বর; তিনি বিশ্বস্ত ঈশ্বর; যারা তাঁকে ভালবাসে, যারা তাঁর আজ্ঞা পালন করে, সহস্র পুরুষ ধরেই তিনি তাদের সঙ্গে আপন সন্ধি ও কৃপা রক্ষা করেন।
10 কিন্তু যারা তাঁকে ঘৃণা করে, তাদের, সেই ব্যক্তিদেরই সংহার করায় তাদের প্রতিফল দেন; যে কেউ তাঁকে ঘৃণা করে, দেরি না করেই তিনি তাকে, সেই ব্যক্তিকেই প্রতিফল দেন।
11 তাই আমি আজ তোমার জন্য যে সমস্ত আজ্ঞা, বিধি ও বিধান জারি করছি, তুমি সেই সমস্ত সযত্নে পালন করবে।
12 তোমরা এই সকল নিয়মনীতি শোন, এই সমস্ত কিছু মেনে চল ও পালন কর, তবেই তোমার পরমেশ্বর প্রভু যে সন্ধি ও কৃপার কথা তোমার পিতৃপুরুষদের কাছে শপথ করে প্রতিশ্রুত হয়েছিলেন, তোমার ক্ষেত্রে তা রক্ষা করবেন;
13 হ্যাঁ, তিনি তোমাকে ভালবাসবেন, আশীর্বাদ করবেন, তোমার বংশের বৃদ্ধি ঘটাবেন: তিনি যে দেশভূমি তোমাকে দেবেন বলে তোমার পিতৃপুরুষদের কাছে শপথ করেছেন, সেই দেশভূমিতে তোমার গর্ভের ফল, তোমার ভূমির ফল, তোমার গম, তোমার নতুন আঙুররস, তোমার তেল, তোমার গবাদি পশুর বাচ্চা ও তোমার মেষের শাবক, এই সকলকেই আশিসমণ্ডিত করবেন।
14 সকল জাতির মধ্যে তুমি আশিসধন্য হবে, তোমার মধ্যে কোন পুরুষ বা কোন স্ত্রীলোক অনুর্বর হবে না, তোমার পশুদের মধ্যেও নয়।
15 প্রভু তোমা থেকে সমস্ত রোগ-ব্যাধি দূর করে দেবেন, এবং মিশরীয়দের যে সকল ঘৃণ্য রোগের কথা তুমি জান, তা তোমার উপরে ডেকে ও আনবেন না, কিন্তু যারা তোমাকে ঘৃণা করে, তাদের সকলের উপরেই তা ডেকে আনবেন।
16 তাই তোমার পরমেশ্বর প্রভু তোমার হাতে যে সমস্ত জাতিকে তুলে দিচ্ছেন, তুমি তাদের গ্রাস করবে; তোমার চোখ তাদের প্রতি যেন দয়া না দেখায়; তাদের দেবতাদের সেবা করো না, কেননা তোমার পক্ষে তা ফাঁদস্বরূপ।
17 কি জানি, হয় তো তুমি মনে মনে বল, এই জাতিগুলো যখন আমার চেয়ে বহুসংখ্যক, তখন আমি কেমন করে এদের দেশছাড়া করব?
18 তুমি তাদের বিষয়ে ভীত হয়ো না ; তোমার পরমেশ্বর প্রভু ফারাওর ও গোটা মিশরের প্রতি যা করেছেন, তা স্মরণ কর;
19 স্মরণ কর সেই মহা মহা পরীক্ষা যা তুমি নিজের চোখেই দেখেছ; এবং সেই সকল চিহ্ন ও অলৌকিক লক্ষণ আর সেই শক্তিশালী হাত ও বিস্তারিত বাহু যা দ্বারা তোমার পরমেশ্বর প্রভু তোমাকে বের করে এনেছেন ; তুমি যাদের ভয় করছ, সেই সমস্ত জাতির প্রতি তোমার পরমেশ্বর প্রভু তেমনি করবেন।
20 তাছাড়া, তুমি যেতে যেতে যারা নিজেদের বাঁচাতে বা লুকোতে পারবে, তারা যতদিন বিনষ্ট না হয়, ততদিন তোমার পরমেশ্বর প্রভু তাদের মধ্যে ভিমরুলের ঝাঁক প্রেরণ করবেন।
21 তুমি তাদের কারণে সন্ত্রাসিত হয়ো না, কেননা তোমার পরমেশ্বর প্রভু তোমার মাঝেই বিরাজ করছেন, তিনি মহান ও ভয়ঙ্কর ঈশ্বর!
22 তোমার পরমেশ্বর প্রভু তোমার সামনে থেকে ওই জাতিগুলোকে আস্তে আস্তে দূর করবেন; তুমি তো তাদের দ্রুতই বিনাশ করতে পারবে না, পাছে ঘু বন্যজন্তুদের সংখ্যা বাড়ে আর তাতে তুমি ক্ষতিগ্রস্তই হবে।
23 কিন্তু তোমার ও পরমেশ্বর প্রভু তাদের তোমার হাতে তুলে দেবেন, এবং যে পর্যন্ত তারা বিনষ্ট না হয়, সেপর্যন্ত তিনি তাদের অন্তরে বিরাট আতঙ্ক সঞ্চার করবেন।
24 তিনি তাদের রাজাদের তোমার হাতে তুলে দেবেন, আর তুমি আকাশমণ্ডলের নিচ থেকে তাদের নাম বিলুপ্ত করবে; তোমার সামনে কেউই দাঁড়াতে পারবে না—যতদিন না তুমি তাদের বিনাশ করবে।
25 তুমি তাদের খোদাই করা দেবমূর্তিগুলো আগুনে পুড়িয়ে দেবে, সেগুলোর গায়ে মোড়ানো সোনা-রুপোর প্রতি লোভ করবে না ও নিজের জন্য তা নেবে না, নিলে তা তোমার পক্ষে ফাঁদস্বরূপ হবে, কেননা তোমার - পরমেশ্বর প্রভুর কাছে তা জঘন্য বস্তু ;
26 তেমন জঘন্য বস্তু তুমি তোমার ঘরে আনবে না, পাছে সেগুলোর মত তুমিও বিনাশ-মানতের বস্তু হও; কিন্তু সেইসব তুমি ঘৃণ্য ও জঘন্য বস্তু বলে গণ্য করবে, যেহেতু তা বিনাশ মানতের বস্তু।