Index

দ্বিতীয় বিবরণ - Chapter 29

1 মোশী গোটা ইস্রায়েলকে আহ্বান করলেন, এবং তাদের বললেন, 'প্রভু মিশর দেশে ফারাওর, তাঁর সকল পরিষদের ও সমস্ত দেশের বিরুদ্ধে তোমাদের চোখের সামনে যা কিছু করেছেন, তা তোমরা দেখেছ
2 সেই মহা মহা পরীক্ষা যা তোমরা স্বচক্ষে দেখেছ, সেই সকল চিহ্ন ও সেই সকল অলৌকিক লক্ষণ!
3 কিন্তু তবুও প্রভু আজ পর্যন্ত বুঝবার হৃদয়, দেখবার চোখ ও শুনবার কান রে তোমাদের দেননি।
4 আমি চল্লিশ বছর মরুপ্রান্তরে তোমাদের চালনা করে আসছি; তোমাদের গায়ে তোমাদের পোশাক জীর্ণ হয়নি, তোমাদের পায়ে তোমাদের জুতোও জীৰ্ণ হয়নি;
5 তোমরা রুটি খাওনি, আঙুররস বা উগ্র পানীয়ও পান করনি, যেন তোমরা জানতে পারতে যে, আমিই, প্রভু, তোমাদের পরমেশ্বর।
6 তোমরা যখন এই স্থানে এসে পৌঁছেছ, তখন হেসবোনের রাজা সিহোন ও বাশানের রাজা ওগ আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বেরিয়ে পড়লে আমরা তাঁদের পরাজিত করলাম;
7 তাঁদের দেশ জয় করে নিয়ে তা অধিকাররূপে রূবেনীয়দের ও গার্দীয়দের, এবং এ মানাসীয়দের অর্ধেক গোষ্ঠীকে দিলাম।
8 তাই তোমরা এই সন্ধির বাণীগুলো পালন কর ও মেনে চল ; তবেই যা কিছু করবে তাতে সফল হবে।”
9 তোমরা আজ সকলে তোমাদের পরমেশ্বর প্রভুর সাক্ষাতে দাঁড়িয়ে আছ- তোমাদের জননেতারা, তোমাদের গোষ্ঠীগুলো, তোমাদের প্রবীণগণ, তোমাদের অধ্যক্ষেরা, ইস্রায়েলের সকল পুরুষ,
10 তোমাদের ছেলেমেয়েরা, তোমাদের বধূরা, এবং তোমার শিবিরে নিবাসী যত বিদেশী, কাঠ কাটে যারা তাদের থেকে শুরু ক’রে জল বয়ে আনে যারা তাদের পর্যন্ত—সকলেই আছ,
11 যেন তুমি অভিশাপের দিব্যি দিয়ে শপথ করা তোমার পরমেশ্বর প্রভুর সেই সন্ধিতে প্রবেশ কর, যা তোমার পরমেশ্বর প্রভু আজ তোমার সঙ্গে এজন্যই স্থাপন করছেন
12 যেন তিনি আজ তোমাকে তাঁর নিজের উদ্দেশে এক জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করেন ও নিজেই তোমার পরমেশ্বর হন——যেমনটি তিনি তোমাকে বলেছেন, আর যেমনটি তিনি তোমার পিতৃপুরুষ আব্রাহাম, ইসায়াক ও যাকোবের কাছে শপথ করেছিলেন।
13 আমি এই সন্ধি ও এই অভিশাপ শুধু তোমাদেরই কাছে জারি করছি, তা নয়
14 যারা আমাদের সঙ্গে আজ এখানে আমাদের পরমেশ্বর প্রভুর সাক্ষাতে দাঁড়িয়ে আছে, তাদেরই কাছে শুধু নয়, কিন্তু যারা আমাদের সঙ্গে আজ নেই, তাদেরও কাছে তা জারি করছি।
15 কেননা আমরা মিশর দেশে কেমন বাস করেছি, এবং যে জাতিগুলির মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছি, তাদের মধ্য দিয়ে কেমন পার হয়ে এসেছি, তা তোমরা জান ;
16 তোমরা তো তাদের যত ঘৃণ্য বস্তু, তাদের মাঝে কাঠ, পাথর, রুপো ও সোনার সেই সব পুতুল দেখেছ।
17 সুতরাং, এই জাতিগুলোর দেবতাদের সেবা করতে যাবার জন্য আজ তার আপন হৃদয়কে আমাদের পরমেশ্বর প্রভুর কাছ থেকে দূরে ফেরায়, এমন কোন পুরুষলোক, বা স্ত্রীলোক, বা গোত্র বা গোষ্ঠী তোমাদের মধ্যে যেন না থাকে; বিষ বা সোমরাজ-জনক কোন মূল যেন তোমাদের মধ্যে না থাকে।
18 এই অভিশাপের কথা শুনে কেউ যদি নিজেকে ভুলিয়ে মনে মনে বলে, আমার নিজের হৃদয়ের জেদ অনুসারে চললেও আমার সমৃদ্ধি হবে, হ্যাঁ, “মাটি একবার জলসিক্ত হলে আর তৃষ্ণার্ত হয় না,”
19 তবে প্রভু তাকে ক্ষমা করবেন না, এমনকি তেমন মানুষের উপরে প্রভুর ক্রোধ ও তাঁর ঈর্ষা জ্বলে উঠবে, এবং এই পুস্তকে লেখা সমস্ত অভিশাপ তার মাথায় এসে বসবে, এবং প্রভু আকাশের নিচ থেকে তার নাম মুছে দেবেন।
20 এই বিধান-পুস্তকে লেখা সন্ধির সমস্ত অভিশাপ অনুসারে প্রভু ইস্রায়েলের সকল গোষ্ঠী থেকে তাকে পৃথক করে তার সর্বনাশ ঘটাবেন।
21 প্রভু সেই দেশের উপরে যে সমস্ত আঘাত ও রোগ ডেকে আনবেন, যখন ভাবী যুগের মানুষ, তোমাদের পরে উৎপন্ন তোমাদের সেই ছেলেরা, এবং দূরদেশ থেকে আগত বিদেশী তা দেখবে,-
22 প্রভু তাঁর আপন ক্রোধে ও আক্রোশে যে - সদোম, গমোরা, আদ্‌মা ও জেবোইম শহর উৎপাটন করেছিলেন, তার মত এই দেশের সমস্ত ভূমি গন্ধক, লবণ ও দহনে ভরা হয়েছে, সেই ভূমিতে কিছুই বোনা যাবে না, সেই ভূমি কোন ফল দেবে না, সেই ভূমি কোন ঘাস হবে না—তারা এইসব কিছু দেখে যখন বলবে,
23 এমনকি সকল দেশ যখন বলবে : প্রভু এই দেশের বিরুদ্ধে কেন এমনটি করলেন? এমন মহাক্রোশ জ্বলে ওঠার কারণ কী?
24 তখন উত্তরে বলা হবে। কারণটা এই, তাদের পিতৃপুরুষদের পরমেশ্বর প্রভু মিশর দেশ থেকে তাদের বের করে আনবার সময়ে তাদের সঙ্গে যে সন্ধি স্থির করেছিলেন, তারা সেই সন্ধি ত্যাগ করেছে
25 আরও, তারা গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা করেছে, ও তাদের সামনে প্রণিপাত করেছে : এমন দেবতা যাদের তারা জানত না, এমন দেবতা যাদের তিনি তাদের জন্য ভাগারূপে নিরূপণ করেননি;
26 এজন্যই এই দেশের উপরে প্রভুর ক্রোধ এতই জ্বলে উঠল যে, এই পুস্তকে লেখা সমস্ত অভিশাপ দেশের উপরে আনা হল ;
27 প্রভু ক্রোধে, রোষে, মহাক্রোশে তাদের ভূমি থেকে তাদের উৎখাত করে অন্য দেশে ফেলে দিয়েছেন—ঠিক যেমনটি আজ দেখা যাচ্ছে।
28 রহস্যাবৃত বিষয়গুলো আমাদের পরমেশ্বর প্রভুর অধিকার, কিন্তু প্রকাশিত বিষয়গুলো আমাদের ও যুগ যুগ ধরে আমাদের ছেলেদের অধিকার, আমরা যেন এই বিধানের সমস্ত বাণী পালন করতে পারি।'